জাহাজ চলাচলে ভারত-পাকিস্তানের পাল্টাপাল্টি নিষেধাজ্ঞা
প্রকাশিত:
৪ মে ২০২৫ ১১:২১
আপডেট:
৪ মে ২০২৫ ১৬:৩১

কাশ্মীর ইস্যুতে নতুন করে উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে এবার সমুদ্রবাণিজ্যে একে অপরের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ভারত ও পাকিস্তান। দুই দেশই একে অপরের পতাকাবাহী জাহাজকে নিজেদের বন্দরে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।
শনিবার (৪ মে) ভারতের বন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, পাকিস্তানি পতাকা বহনকারী কোনো জাহাজ ভারতের কোনো বন্দরে ভিড়তে পারবে না। একইভাবে, ভারতীয় পতাকাবাহী জাহাজও পাকিস্তানের কোনো বন্দরে যেতে পারবে না।
ভারতীয় কর্তৃপক্ষের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দেশের জনগণের স্বার্থ এবং সমুদ্রবাণিজ্য নিরাপদ রাখতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এতে আরও বলা হয়, কার্গো, বন্দর অবকাঠামো এবং পরিবহন ব্যবস্থার নিরাপত্তাই এই নিষেধাজ্ঞার প্রধান কারণ।
এর কয়েক ঘণ্টা পরই পাল্টা ব্যবস্থা নেয় পাকিস্তান। দেশটির সমুদ্রবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বন্দর ও জাহাজ চলাচল বিভাগ এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, ভারতের পতাকাবাহী জাহাজকে পাকিস্তানের কোনো বন্দরে ঢুকতে দেওয়া হবে না। একইভাবে, পাকিস্তানের জাহাজও ভারতের কোনো বন্দরে যাবে না।
তবে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ব্যতিক্রমী কিছু ক্ষেত্রে, বিশেষ প্রয়োজনে এবং যাচাই-বাছাই করে ‘কেস-টু-কেস’ ভিত্তিতে ছাড়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।
এদিকে, উত্তেজনার মধ্যে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তারা স্বল্পপাল্লার আবদালি ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা চালিয়েছে। এই ক্ষেপণাস্ত্র ভূমি থেকে ভূমিতে ৪৫০ কিলোমিটার দূর পর্যন্ত লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম।
পাকিস্তান বলছে, সেনাদের আভিযানিক সক্ষমতা যাচাই এবং কারিগরি দিক পর্যবেক্ষণই ছিল এই পরীক্ষার উদ্দেশ্য।
তবে এই সামরিক কার্যক্রমের পেছনে কূটনৈতিক পটভূমি আরও ঘনীভূত। ২২ এপ্রিল ভারতের নিয়ন্ত্রণাধীন কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন নিহত হন, যাদের বেশির ভাগই ছিলেন পর্যটক। এই হামলার জন্য নয়াদিল্লি পাকিস্তানকে দায়ী করেছে। তবে ইসলামাবাদ সে অভিযোগ সরাসরি নাকচ করে দিয়েছে।
এই ঘটনার পর থেকে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা নতুন মাত্রা পায়। ভারতের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয় গত শুক্রবার এক প্রজ্ঞাপনে জানায়, পাকিস্তান থেকে সরাসরি বা পরোক্ষভাবে আসা সব ধরনের পণ্যের আমদানি ও পরিবহন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞা পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত বহাল থাকবে।
শুধু তা-ই নয়, পাকিস্তান থেকে আকাশ ও স্থলপথে কোনো ডাক, কুরিয়ার কিংবা পার্সেলও ভারত গ্রহণ করবে না বলে জানিয়েছে ভারতের যোগাযোগ মন্ত্রণালয়।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, কাশ্মীরকে কেন্দ্র করে আবারও দুই প্রতিবেশীর সম্পর্ক তলানিতে পৌঁছেছে। এবার উত্তেজনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে অর্থনৈতিক ও সামুদ্রিক নিষেধাজ্ঞা, যা ভবিষ্যতে দুই দেশের বাণিজ্য এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। সূত্র: ডন
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: