বৃহঃস্পতিবার, ১৬ই অক্টোবর ২০২৫, ১লা কার্তিক ১৪৩২


জেরায় আসিফ মাহমুদ

জুলাই আন্দোলনে ‘মাস্টারমাইন্ড’ কেউ ছিল না


প্রকাশিত:
১৬ অক্টোবর ২০২৫ ১৭:৩৯

আপডেট:
১৬ অক্টোবর ২০২৫ ২১:৩০

ছবি : সংগৃহীত

চব্বিশের জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে প্রধান বা মাস্টারমাইন্ড কেউ ছিল না বলে উল্লেখ করেছেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।

বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে রাজধানীর চানখারপুলে ছয়জনকে হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জেরার সময় এ কথা উল্লেখ করেন তিনি।

এদিন বিকেল ৩টার পর ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলে এ মামলায় ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ আটজনের বিরুদ্ধে অবশিষ্ট সাক্ষ্য দেন আসিফ মাহমুদ। পরে তার জেরা শুরু হয়।

প্রথমেই তাকে জেরা করেন শাহবাগ থানার সাবেক ওসি (অপারেশন) মো. আরশাদ হোসেনের আইনজীবী সাদ্দাম হোসেন অভি।

জেরার একপর্যায়ে আসিফকে তিনি বলেন, আপনাদের আন্দোলনে কোনো মাস্টারমাইন্ড ছিল কিনা।

জবাবে এই উপদেষ্টা বলেন, গত বছরের ৫ জুন কোটাপ্রথা পুনর্বহালের রায়ের পর আমরা ৫৮ জন সমন্বয়ক-সহসমন্বয়ক মিলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে আন্দোলন শুরু করি। এতে কোনো রাজনৈতিক দলের ইন্ধন ছিল না। আন্দোলনে প্রধানও কেউ ছিল না। সমন্বয়কদের সবার মর্যাদা সমান ছিল।

যোগাযোগের মাধ্যম কি ছিল আইনজীবীর এমন প্রশ্নে আসিফ মাহমুদ বলেন, যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে আমরা ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করেছি।

কোনো মামলা হয়েছে কিনা জিজ্ঞেস করেন অভি। তখন এই উপদেষ্টা বলেন, আমিসহ আমাদের অনেকের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় মামলা হয়েছে।

একদফা কর্মসূচির পেছনে বিদেশি কোনো শক্তি বা কারো হাত ছিল কিনা। আসামিপক্ষের আইনজীবীর এমন প্রশ্নে আসিফ বলেন, একদফা কর্মসূচি ঘোষণার পেছনে কোনো বিদেশি ইন্ধন ছিল না। আমরা নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এছাড়া আন্দোলনকারীরাই আন্দোলনের ধরচের জন্য ফান্ড তৈরি করেছি।

সাক্ষীর উদ্দেশে অভি বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট চানখারপুলে যেখান থেকে পুলিশ গুলি চালিয়েছিল সেখান থেকে আপনার দূরত্ব কতটুকু ছিল।

প্রতুত্তরে আসিফ মাহমুদ বলেন, আমি ২০০ মিটার দূরে ছিলাম। এত দূর থেকে তো গুলি করার দৃশ্য দেখা যায় না। আসামিপক্ষের আইনজীবীর এমন কথায় এটা সত্য নয় বলে জানান উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ।

এদিন দুপুর সোয়া ২টার পর ট্রাইব্যুনালে পৌঁছান আসিফ মাহমুদ। বেলা ২টা ৫৫ মিনিটে এজলাসকক্ষে যান তিনি। এরপর তার সাক্ষ্য শুরু হয়।

গত ৯ অক্টোবর দুপুর ২টায় এ মামলায় সাক্ষ্য দিতে ট্রাইব্যুনালে এসেছিলেন এই উপদেষ্টা। বেলা পৌনে ৩টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত তার সাক্ষ্যগ্রহণ চলে। তবে শেষ না হওয়ায় অবশিষ্ট জবানবন্দি নিতে প্রসিকিউশনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজকের দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল-১।

ওই দিন ১৯ নম্বর সাক্ষী হিসেবে নিজের সাক্ষ্যে জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের পুরো পটভূমি তুলে ধরেন আসিফ মাহমুদ। একইসঙ্গে গত বছরের ৫ আগস্ট চানখারপুলে চালানো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নৃশংসতার বিবরণ দেন। এমনকি ডিবি পরিচয়ে রাতের আঁধারে নিজেকে গুম করার কথাও জবানবন্দিতে পেশ করেন তিনি। এসব ঘটনার জন্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ সরাসরি জড়িতদের দায়ী করেছেন আসিফ মাহমুদ।

এ মামলার গ্রেপ্তার চার আসামি হলেন- শাহবাগ থানার সাবেক ওসি (অপারেশন) মো. আরশাদ হোসেন, কনস্টেবল মো. সুজন মিয়া, মো. ইমাজ হোসেন ইমন ‍ও মো. নাসিরুল ইসলাম।

পলাতক আসামিরা হলেন- সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, ডিএমপির সাবেক যুগ্ম কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী, রমনা অঞ্চলের সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার শাহ আলম মো. আখতারুল ইসলাম ও রমনা অঞ্চলের সাবেক সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ ইমরুল।

গত ১৪ জুলাই চানখারপুলের মামলাটির পলাতক চার আসামিসহ আটজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।

উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট চানখারপুল এলাকায় শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে গুলি চালায় পুলিশ। এতে বহু হতাহতের ঘটনার পাশাপাশি শাহরিয়ার খান আনাস, শেখ জুনায়েদ, মো. ইয়াকুব, মো. রাকিব হাওলাদার, মো. ইসমামুল হক ও মানিক মিয়া শাহরিক নিহত হন।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected], [email protected]
সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top