ঈদে সংবাদপত্রের ছুটি অন্তত চার দিন দেওয়ার আহ্বান
প্রকাশিত:
৮ মে ২০২৫ ১৭:৫৮
আপডেট:
৮ মে ২০২৫ ২২:০০

ঈদুল আজহায় সংবাদপত্রের কর্মীদের চারদিন ছুটি আর অনলাইনের কর্মীদের আর্থিকভাবে প্রণোদনা দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান।
বৃহস্পতিবার (৮ মে) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) শফিকুল কবির মিলনায়তনে ‘গণমাধ্যম সংস্কার : সমস্যা ও করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে এ আহ্বান জানান তিনি। জার্নালিস্ট কমিউনিটি অব বাংলাদেশ এই সেমিনারের আয়োজন করে।
সেমিনারে মাহমুদুর রহমান বলেন, ঈদের ছুটি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। যেহেতু আমরা এখন ডিজিটাল যুগে বাস করছি, সেজন্য অনলাইনটা চালাতেই হয়। এটার কোনো বিকল্প নেই। এটির বিকল্প হচ্ছে অনলাইনে যারা কাজ করছে, তাদের আর্থিকভাবে পুষিয়ে দিতে হবে।
‘আমার হাতেতো ক্ষমতা নেই, কিন্তু আমার যদি ক্ষমতা থাকত, আগামী ঈদে ১০ দিন ছুটি থাকবে সরকারি। আমি অন্ততপক্ষে সাংবাদিকদের জন্য চারদিন করে দিতাম। আর, অনলাইনের ক্ষেত্রে আর্থিকভাবে পুষিয়ে দেওয়া উচিত।’
চলমান সংস্কার নিয়ে আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক বলেন, আপনারা এই সরকারের কাছে দাবি করছেন কি কি সংস্কার করতে হবে। আগামী রাজনৈতিক সরকার এসে যদি বলে এই সংস্কার আমরা মানি না। আমরা আমাদের মতো করে রাষ্ট্র চালাবো। সেক্ষেত্রে আপনারা কী করবেন, সেটা নিয়ে মনে হয় একটু আগাম পরিকল্পনা করে রাখা দরকার।
সম্পাদক পরিষদ এবং নোয়াবের সমালোচনা করে মাহমুদুর রহমান বলেন, এই দুটি সংগঠন হলো এলিটদের সংগঠন। আর আমরা হলাম অচ্ছুত। আমাদেরকে ইসলামপন্থি পত্রিকা হিসেবে ধরা হয়। বাংলাদেশে ইসলামপন্থি হওয়াতো অপরাধ। অন্তত, মিডিয়াতেতো বড় অপরাধ। সারা বাংলাদেশের মিডিয়া ইসলাম বিদ্বেষীদের দখলে। বিজ্ঞাপন যারা দেয়, সেই সংগঠনগুলো প্রধানত ইসলামবিদ্বেষী।
তিনি বিজ্ঞাপনকে সরকার কর্তৃক বিরোধী মতের পত্রিকাকে দমন করার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার না করার আহ্বান জানান।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংগঠনের সদস্যসচিব মিয়া হোসেন। তিনি গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের কাছে ১৬ দফা দাবি পেশ করেন।
এগুলো হলো—
১. গণমাধ্যমকে রাষ্ট্রের ৪র্থ স্তম্ভ হিসেবে সংবিধানে অর্ন্তভুক্ত করা।
২. তথ্য জানার অধিকার ও ইন্টারনেট ব্যবহারের অধিকারকে সংবিধানের মৌলিক অধিকার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা।
৩. সাংবাদিক ও গণমাধ্যমের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
৪. সব গণমাধ্যমকে একটি বেতন কাঠামোতে অন্তর্ভুক্ত করা।
৫. সব গণমাধ্যমকে মিডিয়া তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
৬. সাংবাদিকদের এনরোলমেন্ট নিশ্চিত করে একটি প্রেস আইডি নম্বর দেওয়া।
৭. স্থায়ীভাবে এক্রিডিটেশন কার্ড নিশ্চিত করা।
৮. চলচ্চিত্রের মতো জাতীয় গণমাধ্যম ও সাংবাদিক পুরস্কার প্রদান করা।
৯. রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম পরিচালনা বোর্ড গঠন করা।
১০. গণমাধ্যম ও সাংবাদিকদের স্বাধীনতা এবং অধিকার নিশ্চিত করতে আইন প্রণয়নের মাধ্যমে স্বাধীন প্রেস কমিশন গঠন করা।
১১. স্যাটেলাইট টেলিভিশন, রেডিও ও অনলাইন গণমাধ্যম ডিক্লারেশনের জন্য সুনির্দিষ্ট আইন প্রণয়ন করা।
১২. পেশাগত মান উন্নয়নে সব সাংবাদিককে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
১৩. সরকারিভাবে সাংবাদিকদের জন্য পেনশন ও রেশনিং ব্যবস্থা চালু করা।
১৪. সব সাংবাদিকের আবাসন ও চিকিৎসা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।
১৫. বিদেশি গণমাধ্যমকে বিশেষভাবে সহযোগিতা দেওয়ার জন্য নীতিমালা করা।
১৬. সোশ্যাল মিডিয়াকে নিবন্ধনের আওতায় নিয়ে আসা।
সেমিনারটি সঞ্চালনা করেন- ডিআরইউর সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল। সেমিনারে ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ, সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি (একাংশ) শহিদুল ইসলাম, যুগ্ম সম্পাদক দিদারুল আলম দিদার, সাংবাদিক আসিফ শওকত কল্লোল বক্তব্য রাখেন।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: