মঙ্গলবার, ৩০শে এপ্রিল ২০২৪, ১৭ই বৈশাখ ১৪৩১


‘অপরিকল্পিত খনন ও দখলে নালায় পরিণত হয়েছে সোনাই নদী’


প্রকাশিত:
৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৯:২০

আপডেট:
৩০ এপ্রিল ২০২৪ ১৯:১৮

ছবি-সংগৃহীত

অপরিকল্পিত খনন, দখল ও দূষণ এবং উজানে দুটি জলবিদ্যুৎ প্রকল্প করায় হবিগঞ্জের সোনাই নদী একটি সরু নালায় পরিণত হয়েছে। এই নদী দখল-দূষণ রক্ষায় দীর্ঘ আন্দোলন করেও কোনো কাজ হয়নি। বাংলাদেশ নদী কমিশন ও স্থানীয় প্রশাসনের বিতর্কিত ভূমিকায় নদীর শেষ রক্ষা হবে কি না এ ব্যাপারে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে পরিবেশবিষয়ক সংগঠন ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা)।

শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ‘বাংলাদেশ নদনদী রক্ষায় প্রতিবন্ধকতা: প্রেক্ষিত সোনাই’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলন করে ধরা।

লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের সদস্য-সচিব শরীফ জামিল বলেন, সুনামগঞ্জের সোনাই নদীর উজান দিকে দুটি জলবিদ্যুৎ প্রকল্প করায় শুকনা মৌসুমে নদীতে পানি প্রবাহ তেমন একটা থাকে না। অপরিকল্পিত খনন, মাধবপুরে দখল ও দূষণের শিকার হয়ে সুন্দর এই নদীটি একটি সরু নালায় পরিণত হয়েছে। ২০০৩ সাল থেকে সোনাই নদী দখল করে ‘সায়হাম ফিউচার কমপ্লেক্স’ নামে একটি বহুতল ভবন নির্মাণের কাজ চলছিল। নাগরিক সমাজের প্রতিবাদ ও প্রচেষ্টায় ২০১১ সালে বাংলাদেশ আভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ একটি বিভাগীয় তদন্ত করে; কিন্তু ভবন নির্মাণের কাজ নির্বিঘ্নে চলতে থাকে। নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি বিষয়টি ২০১৫ সালে জাতীয় নদী টাস্কফোর্সের সভায় উত্থাপন করা হয়। টাস্কফোর্স কাজ সাময়িকভাবে বন্ধ রাখে।

এরপর তৎকালীন নদী কমিশনের চেয়ারম্যানকে প্রধান করে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিসহ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। সেই কমিটির সদস্যরা সরেজমিনে সেই স্থান ঘুরে সায়হাম ফিউচার কমপ্লেক্স নদীর প্রবাহকে যে বাধাগ্রস্ত করছে এবং স্থাপনাটি যে নদীর জায়গায় করা হচ্ছে এই ব্যাপারে সবাই একমত হয়। কিন্তু চূড়ান্ত প্রতিবেদনে সেটি উল্লেখ না করে ভবনটি ব্যক্তি মালিকানাধীন জায়গায় নির্মাণ করা হচ্ছে বলে প্রতিবেদন দেয় নদী কমিশন। তারপর আর কাজ থামানো যায়নি।

তিনি বলেন, এই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে টাস্কফোর্স নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয় এবং প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার পর নির্মাণ কাজ আবার শুরু হয়। জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের পরবর্তী চেয়ারম্যান দায়িত্ব গ্রহণের পর কমিশন সোনাই নদী পরিদর্শন করেন, সায়হাম ফিউচার কমপ্লেক্স নদীর জাগায় দখল করে হচ্ছে এমনটা জানিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে লিখিত চিঠিও প্রেরণ দেয়। কিন্তু জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের এই চিঠি অকার্যকর থেকে যায়।

সংবাদ সম্মেলনের সভাপতিত্ব করেন ধরার কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির সহ-আহ্বায়ক ও ব্রতীর প্রধান নির্বাহী শারমীন মুরশিদ।

জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ও ধরার উপদেষ্টা কমিটির সদস্য মুজিবুর রহমান হাওলাদার বলেন, নদীরক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যানকে যে কেউ প্রশ্ন করতে পারেন যে, আমার এখানকার নদী ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না কেন, এই নদী কোম্পানি দখল করছে কেন, নদীতে কেন বর্জ্য নিক্ষেপ করেছে? নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যানকে এসব প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। এই দায়িত্ববোধ যাদের নেই, তাদের যদি চেয়ারে বসিয়ে রাখা হয়, তাহলে নদী রক্ষা করা কঠিন হয়ে যাবে।

এছাড়া আরও বক্তব্য রাখেন ধরার উপদেষ্টা কমিটির সদস্য জিয়াউদ্দিন আহমেদ, ধরার কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির সহ-আহ্বায়ক এম এস সিদ্দিকী, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এডভোকেট গোলাম সোবহান চৌধুরী, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকুয়াকালচার বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মীর মোহাম্মদ আলী ও চুনতি রক্ষায় আমরার সমন্বয়ক সানজিদা রহমান।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected], [email protected]
সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top