শুক্রবার, ১৩ই জুন ২০২৫, ৩০শে জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২


পাচার হওয়া অর্থের খোঁজে ইউনূস, সাক্ষাৎ দিচ্ছেন না ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী


প্রকাশিত:
১২ জুন ২০২৫ ১০:৩৮

আপডেট:
১৩ জুন ২০২৫ ১৬:২০

ছবি সংগৃহীত

শেখ হাসিনার আমলে পাচার হওয়া কয়েক বিলিয়ন ডলার উদ্ধারে লন্ডনে সফররত অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাতের অনুরোধে সাড়া দেননি যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার।

ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস বলেন, বিগত সরকারের সময়ে ‘চুরি হওয়া’ অর্থ খুঁজে পেতে বাংলাদেশের নতুন সরকারকে সহায়তা করা যুক্তরাজ্যের একটি নৈতিক দায়। এ বাধ্যবাধকতা উপলব্ধি করা উচিত।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যমটিকে তিনি জানান, পাচার হওয়া অর্থের বড় একটি অংশ বর্তমানে যুক্তরাজ্যে আছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

ড. ইউনূস ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে জানিয়েছেন, স্টারমার এখনো তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে রাজি হননি।

তিনি বলেন, তার সঙ্গে আমার সরাসরি কথা হয়নি। আমি বিশ্বাস করি, তিনি (স্টারমার) আমাদের প্রচেষ্টায় সহায়তা করবেন। কারণ ‘এগুলো চুরির টাকা।’

ব্রিটিশ সরকারের কর্মকর্তাদের বরাতে দেশটির প্রভাবশালী এই সংবাদ মাধ্যমটি জানিয়েছে, অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার কোনো পরিকল্পনা কিয়ার স্টারমারের নেই। যুক্তরাজ্য সরকারের কর্মকর্তারা এ বিষয়ে আর কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

ড. ইউনূস বলেন, যুক্তরাজ্য সরকার ইতোমধ্যে কিছু সহায়তা দিচ্ছে, তবে পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধারে ‘আইনি ও নৈতিকভাবে’ আরও দৃঢ় সহায়তা করা উচিত। এই সফরের উদ্দেশ্য ছিল যুক্তরাজ্যের কাছ থেকে এ বিষয়ে আরও উদ্যমী সহায়তা।

এদিকে, শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত নিয়ে যুক্তরাজ্যে কিয়ার স্টারমারের দল লেবার পার্টির ওপর রাজনৈতিক চাপ তৈরি হয়েছে। এসব অভিযোগের জেরে চলতি বছরের জানুয়ারিতে ‘সিটি মিনিস্টার’ পদ ছাড়তে বাধ্য হন লেবার পার্টির এমপি ও শেখ হাসিনার ভাগনি টিউলিপ সিদ্দিক, যিনি স্টারমারের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত।

তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদের কাছ থেকে সম্পদ গ্রহণ করেছেন তিনি। যদিও তিনি এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

বর্তমানে যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট সদস্য টিউলিপ সিদ্দিক চলতি সপ্তাহে অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাতের আগ্রহ প্রকাশ করে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন। বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কিছু বিষয় নিয়ে ‘ভুল বোঝাবুঝি’ হয়েছে দাবি করে তা দূর করতে চান তিনি।

তবে অধ্যাপক ইউনূস এই সাক্ষাতে রাজি হননি। তিনি বলেন, এটি আইনি বিষয়, একটি প্রক্রিয়ার অংশ। এতে আমার ব্যক্তিগতভাবে যুক্ত হওয়ার সুযোগ নেই।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, শেখ হাসিনার ১৬ বছরের শাসনামলে তিনি তার ক্ষমতাকে টাকার উৎসে রূপান্তর করেছিলেন, যা আত্মীয়স্বজন ও ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের লাভবান করার হাতিয়ার হয়ে ওঠে। ওই সময়ে একটি বড় লুটপাট হয়েছে।

সাক্ষাৎকারে প্রধান উপদেষ্টা জানান, শেখ হাসিনার শাসনামলে প্রায় ২৩৪ বিলিয়ন ডলার বিদেশে পাচার হয়েছে, যার একটি বড় অংশ যুক্তরাজ্যে গেছে। এগুলো চুরি করা অর্থ।

তিনি বলেন, এই অবৈধ সম্পদের গন্তব্য রয়েছে- কানাডা, সিঙ্গাপুর, ক্যারিবিয়ান অঞ্চল ও মধ্যপ্রাচ্যেও।

পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে যুক্তরাজ্যে এই সফর শুধু শুরু। অন্যান্য দেশেও সফরের পরিকল্পনা করছেন বলেও জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।

যুক্তরাজ্যে ব্যবসায়িক মহল, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার কাছ থেকে সহায়তা প্রত্যাশা করছেন বাংলাদেশের সরকার প্রধান। তিনি বলেন, আমাদের গ্রেট ব্রিটেনের জনগণের সহায়তা প্রয়োজন।

সূত্র : ফিন্যান্সিয়াল টাইমস



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected], [email protected]
সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top