কমলাপুরে যাত্রীর ভিড় নেই, চাপ বাড়তে পারে শুক্রবার
প্রকাশিত:
১২ জুন ২০২৫ ১২:০৮
আপডেট:
১৩ জুন ২০২৫ ১৭:১৬

ঈদুল আজহার ছুটি শেষ হতে এখনও দুদিন বাকি। তবে অনেকেই আগেভাগে ঢাকায় ফিরছেন কর্মস্থলের উদ্দেশে। ঈদ ফেরত যাত্রায় এখনও স্বস্তির কথা জানাচ্ছেন যাত্রীরা। ট্রেনও চলছে সময়মতো। তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শুক্র ও শনিবারে যাত্রীদের চাপ অনেক বেড়ে যেতে পারে। রেলওয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী যাত্রীদের মুখে মাস্ক থাকা বাধ্যতামূলক হলেও বাস্তবে তা মানছেন না অধিকাংশ যাত্রী।
বৃহস্পতিবার (১২ জুন) সকাল থেকে রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ঘুরে দেখা যায়, ট্রেনগুলো নির্ধারিত সময়ে পৌঁছেছে। যাত্রীদের কাছ থেকেও কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তবে তীব্র গরমে শিশু ও নারীদের কষ্ট করতে দেখা গেছে।
সরেজমিন দেখা গেছে, সকাল থেকেই প্রায় সব ট্রেন যথাসময়ে ঢাকায় এসে পৌছেছে৷ বিগত সময়ের মতো ঈদ যাত্রায় ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় বা অন্যকোনো অভিযোগ নেই যাত্রীদের। সবাই পরিবার নিয়ে স্বস্তিতে কর্মস্থলে ফিরতে পারছেন। অন্যদিকে বেসরকারি অনেক প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা ঈদে ছুটি না পাওয়ায় অনেকেই আজ প্রিয়জনের সঙ্গে ইদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে ঢাকা ছাড়ছেন।
বেসরকারি ব্যাংকে চাকরি করেন জুনাইদ আল হাবীব। ঢাকায় ফেরার সময় তিনি বলেন, বউ-বাচ্চা নিয়ে গ্রামে গিয়েছিলাম। ভেবেছিলাম শুক্রবার ফিরব, কিন্তু তখন তো টিকিট মেলে না। তাই একটু আগেই চলে এলাম।
একই অভিজ্ঞতা জানালেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জান্নাতুল দিবা। তিনি বলেন, ফিরতি পথে কোনো ঝামেলা হয়নি। সেবাও আগের চেয়ে ভালো লেগেছে।
আরেক যাত্রী কামাল উদ্দিন বলেন, মন ভরে ঈদ করতে পারলাম না। এত অল্প ছুটি! গ্রামের বাড়িতে মা-বাবার সঙ্গে একটু কাটিয়ে আসতে না পারতেই ঢাকায় ফিরতে হচ্ছে।
ঈদের দিনগুলোতে কাজ করার কারণে আজ গ্রামের বাড়ি যাচ্ছেন অনেকে। রায়হান শুভ বলেন, ‘ছুটি পাইনি, ঈদের দিন ঢাকায় ছিলাম। মা অনেক কষ্ট পেয়েছেন। তাই আজ যাচ্ছি, মা মাংস রেখে দিয়েছেন, একসঙ্গে খাব।’
এ বিষয়ে কমলাপুর স্টেশনের ম্যানেজার মো. সাজেদুল ইসলাম বলেন, সকাল থেকে সব ট্রেন সময়মতো এসেছে। যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়েননি। শুক্রবার ও শনিবার যাত্রীর চাপ বাড়বে।
বাংলাদেশ রেলওয়ে বাড়তি যাত্রী চাপ সামলাতে ৫ জোড়া (১০টি) ঈদ স্পেশাল ট্রেন চালু করেছে। এগুলো ঈদের আগে ও পরে নির্দিষ্ট সময়সূচি অনুযায়ী চলাচল করছে। প্রতিটি ট্রেনের সূচি নিশ্চিত করা হয়েছে যাতে যাত্রীরা স্বস্তিতে চলাচল করতে পারেন।
নিয়মিত আন্তঃনগর ট্রেনগুলো আগের মতোই চলবে বলে জানানো হয়। শিডিউল অনুযায়ী, যাত্রীবাহী চাঁদপুর ঈদ স্পেশাল-১ ও ২ চট্টগ্রাম-চাঁদপুর-চট্টগ্রাম রুটে চলাচল করবে। ট্রেন দুটি ঈদের আগে ৪-৬ জুন এবং ঈদের পরে ৯-১৪ জুন পর্যন্ত চলাচল করবে। চাঁদপুর ঈদ স্পেশাল-১ চট্টগ্রাম থেকে দুপুর ৩টা ২০ মিনিটে ছেড়ে চাঁদপুর পৌঁছাবে রাত ৮টা ১৫ মিনিটে। চাঁদপুর ঈদ স্পেশাল-২ চাঁদপুর থেকে রাত সাড়ে ৩টায় ছেড়ে চট্টগ্রাম পৌঁছাবে সকাল ৮টা ১০ মিনিটে।
তিস্তা ঈদ স্পেশাল-৩ ও ৪ ঢাকা-দেওয়ানগঞ্জ-ঢাকা রুটে চলাচল করবে। ট্রেন দুটি ঈদের আগে ৪-৬ জুন এবং ঈদের পরে ৯-১৪ জুন পর্যন্ত চলাচল করবে। তিস্তা ঈদ স্পেশাল-৩ ঢাকা থেকে সকাল সাড়ে ৯টায় ছেড়ে দেওয়ানগঞ্জ পৌঁছাবে দুপুর সাড়ে ৩টায়। তিস্তা ঈদ স্পেশাল-৪ দেওয়ানগঞ্জ থেকে বিকেল সাড়ে ৪টায় ছেড়ে ঢাকা পৌঁছাবে রাত ১০টা ১৫ মিনিটে। পার্বতীপুর ঈদ স্পেশাল-৯ ও ১০ জয়দেবপুর-পার্বতীপুর-জয়দেবপুর রুটে চলাচল করছে। ট্রেন দুটি ঈদের আগে ৪-৬ জুন এবং ঈদের পরে ৯-১৪ জুন পর্যন্ত চলাচল করছে। পার্বতীপুর ঈদ স্পেশাল-৯ জয়দেবপুর থেকে সন্ধ্যা ৭টায় ছেড়ে পার্বতীপুর পৌঁছাবে রাত আড়াইটায়। পার্বতীপুর ঈদ স্পেশাল-১০ পার্বতীপুর থেকে সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে ছেড়ে জয়দেবপুর পৌঁছাবে দুপুর ২টা ২০ মিনিটে। তবে ঈদের পর পার্বতীপুর ঈদ স্পেশাল-৯ জয়দেবপুর থেকে সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে ছেড়ে পার্বতীপুর পৌঁছাবে দুপুর ২টা ৫০ মিনিটে। পার্বতীপুর ঈদ স্পেশাল-১০ পার্বতীপুর থেকে রাত ১০টা ২০ মিনিটে ছেড়ে জয়দেবপুর পৌঁছাবে ভোর ৫টা ৪৫ মিনিটে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: