বারবার বিধি সংশোধনের ঝামেলা এড়াতে প্রতীক বাড়াচ্ছে ইসি
প্রকাশিত:
১২ জুন ২০২৫ ১৬:৩০
আপডেট:
১৩ জুন ২০২৫ ১৯:১৩

নিবন্ধিত নতুন রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর প্রতীক বরাদ্দে বারবার বিধি সংশোধনের জটিলতা এড়াতে নির্বাচনি প্রতীকের সংখ্যা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বর্তমানে তফসিলভুক্ত ৬৯টি প্রতীকের মধ্যে বাদ থাকা ‘দাঁড়িপাল্লা’সহ অন্তত ৩১টি নতুন প্রতীক যুক্ত করে প্রতীক সংখ্যা ১০০-তে উন্নীত করার পরিকল্পনা করছে ইসি। এতে রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জন্য প্রতীক বরাদ্দ সহজ হবে এবং বারবার বিধি সংশোধনের প্রয়োজন পড়বে না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
ইসির নির্বাচন ব্যবস্থা অনুবিভাগের উপসচিব মোহাম্মদ মনির হোসেন বলেন, নির্বাচনের জন্য বর্তমানে যে ৬৯টি তফসিলভুক্ত প্রতীক রয়েছে তার মধ্যে দাঁড়িপাল্লা প্রতীক নাই। দাঁড়িপাল্লা প্রতীকসহ আরও ৩১টি নতুন প্রতীক যুক্ত করার পরিকল্পনা নিয়েছি। প্রতীকের সংখ্যা ১০০টি বা এর বেশি বা কম হতে পারে তবে আমরা প্রতীকের সংখ্যা বাড়াব।
তবে কোন ধরেনের প্রতীক নির্ধারণ করা হবে তা এখনও চূড়ান্ত করা হয়নি বলে জানিয়েছেন এ কর্মকর্তা।
নির্বাচনি প্রতীক বৃদ্ধি করার কারণ জানতে চাইলে এ কর্মকর্তা বলেন, তফসিলে যে প্রতীকগুলো ছিল সেখান থেকে নতুন রাজনৈতিক দলগুলোকে বরাদ্দ দিতে দিতে কমে গেছে। এজন্য আমরা একসঙ্গে প্রতীকের সংখ্যা বৃদ্ধি করে সবগুলো প্রতীককে একটি তফসিলে রাখব। যাতে বারবার আমাদের পরিবর্তন করতে না হয়। কারণ আমি যদি দুটি তফসিলে প্রতীক রাখি; একটি রাজনৈতিক দলের জন্য আরেকটি স্বতন্ত্রের জন্য। আগামীকাল যদি আরেকটি নতুন দল নিবন্ধন পায়; তাহলে কিন্তু আমাদের দুটি তফসিলই সংশোধন করতে হবে আর তফসিল সংশোধন মানে হলো বিধি সংশোধন আর এটি লম্বা প্রক্রিয়া। তারচেয়ে বরং একই জায়গায় ১০০টি প্রতীক যদি থাকে; তাহলে যেগুলো রাজনৈতিক দলের জন্য বরাদ্দ হয়েছে সেগুলো ছাড়া অবশিষ্ট প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্ররা নির্বাচন করবে। এতে বারবার আমাদের তফসিলও পরিবর্তন করা লাগবে না। বিধি বারবার সংশোধন এড়ানোর জন্য প্রতীক বৃদ্ধির এই পরিকল্পনা।
এ বিষয়ে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, নির্বাচনের জন্য আমাদের যে ৬৯টি প্রতীক রয়েছে তা বৃদ্ধি করে আমরা ১০০টি করব।
বর্তমানে ইসির নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সংখ্যা ৫০টি। যার মধ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত করায় তা দাঁড়িয়েছিলো ৪৯টিতে। তবে গত (৪ জুন) বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্তে আবার এই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫০টিতে।
ইসির তফসিলভুক্ত ৬৯টি প্রতীকের মধ্যে ৫০টি প্রতীক বরাদ্দ রয়েছে রাজনৈতিক দলের জন্য। যার মধ্যে স্থগিত হওয়া বাংলাদেশ আওয়ামী লীগেরও প্রতীক রয়েছে। অবশিষ্ট ১৯টি প্রতীক রয়েছে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের যা পর্যাপ্ত নয় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এদিকে নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে সেখান থেকে যদি কোনো রাজনৈতিক দল নিবন্ধন পায় তাহলে এ প্রতীকের সংখ্যা আরও কমে আসবে। এজন্য প্রতীক বৃদ্ধির পরিকল্পনা করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আর নতুন করে যে ৩১টি প্রতীক যুক্ত হবে তার মধ্যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর প্রতীক দাঁড়িপাল্লাও থাকবে।
২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তফসিলভুক্ত প্রতীক ছিল ৬৫টি। যার মধ্যে ৪০টি প্রতীক ছিলো নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের জন্য আর নতুন দল নিবন্ধন বিবেচনায় রেখে অতিরিক্ত ২৫টি প্রতীক রাখা হয়েছিল।
২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তফসিলভুক্ত প্রতীকের সংখ্যা ছিল ৬৪টি। ৩৯টি প্রতীক বিভিন্ন নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য বরাদ্দ ছিল এবং ২৫টি প্রতীক তথ্য অনুযায়ী স্বতন্ত্র প্রার্থী ও নতুন দলের ব্যবহারের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল।
সবশেষ ২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তফসিলভুক্ত প্রতীকের সংখ্যা ছিল ৬৯টি। ৪৪টি প্রতীক বিভিন্ন নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য বরাদ্দ ছিল এবং ২৫টি প্রতীক স্বতন্ত্র প্রার্থী ও নতুন দলের ব্যবহারের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: