ইলিশের সরকারি মূল্য নির্ধারণের প্রস্তাব অনুমোদন প্রধান উপদেষ্টার
প্রকাশিত:
২ জুলাই ২০২৫ ১০:৪৯
আপডেট:
২ জুলাই ২০২৫ ১৪:২০

চাঁদপুরসহ দেশের অন্যান্য জেলায় ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়লেও এর মূল্য ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকায় সাধারণের ক্রয়ক্ষমতার বাইরেই থেকে যায় বছরের অধিকাংশ সময়। তাই ইলিশের দাম নির্ধারণ এবং সিন্ডিকেটের কবল থেকে রক্ষা করে ইলিশের বাজারদর নিয়ন্ত্রণে চাঁদপুরের জেলা প্রশাসকের প্রস্তাব গুরুত্বের সঙ্গে আমলে নিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। শুধু তাই নয়, এটিকে আমলে নিয়ে প্রস্তাবটি প্রধান উপদেষ্টার কাছে উপস্থাপন করলে তিনি তা অনুমোদন করেছেন।
মঙ্গলবার (১ জুলাই) রাতে চাঁদপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে ইউএনবিকে এসব তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
জানা গেছে, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মাঠ প্রশাসন সংযোগ শাখার স্মারকে গত ২৬জুন এ-সংক্রান্ত একটি চিঠি চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক চাঁদপুর ও মন্ত্রিপরিষদ সচিবের একান্ত সচিব বরাবর পাঠান জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব মাহমুদ উল্লাহ মারুফ।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, বিভাগীয় কমিশনারদের কাছ থেকে পাওয়া জুন ২০২৫-এর পাক্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদন থেকে এটি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহম্মদ ইউনূসের সামনে উপস্থাপিত হয়।
সেখানে বলা হয়, জাতীয় সম্পদ ও মাছ চাঁদপুরের ইলিশের সুস্বাদের সুযোগ নিয়ে চাঁদপুর ও আশপাশের জেলার কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী ও আড়তদার নিজেদের ইচ্ছেমতো দাম হাঁকাচ্ছেন, যা একেবারেই ক্রেতাদের ক্রয়ক্ষমতার নাগালের বাইরে। চড়া মূল্যের কারণে জনসাধারণের ক্রয়সীমার বাইরে চলে যাচ্ছে ইলিশ।
যেহেতু ইলিশ চাঁদপুরসহ অন্যান্য জেলাতেও ধরা পড়ে, তাই কেবল চাঁদপুর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইলিশের মূল্য নির্ধারণের উদ্যোগ নেওয়া হলে এর ফলপ্রসু প্রভাব বাজারে পড়বে না। চাঁদপুরের পাশাপাশি বরিশাল, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, ভোলা, পটুয়াখালী, বরগুনা, ঝালকাঠিসহ আরও অনেক এলাকার নদী যেগুলো সাগর তীরবর্তী, সেখানে ইলিশ ধরা পড়ে।
চিঠিতে বলা হয়, নদী বা সাগরে ইলিশ উৎপাদনে জেলেদের কোনো উৎপাদন খরচ না থাকলেও ইলিশের মুল্য অসাধু, লোভী ব্যবসায়ী কিংবা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে।
যেহেতু ইলিশের উৎপাদন প্রাকৃতিকভাবে হয়, তাই ইলিশ আহরণ ও অন্যান্য আনুসঙ্গিক ব্যয়ের প্রতি লক্ষ রেখে এর মূল্য নির্ধারণ করা প্রয়োজন। জাতীয় এই মাছের মূল্য নির্ধারণে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করা যেতে পারে।
ইলিশ সংক্রান্ত এই প্রস্তাবে প্রধান উপদেষ্টা অনুমোদন দিয়েছেন বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়। এটি বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়ে এর অগ্রগতি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে অবহিত করার জন্য অনুরোধ করা হয়।
এ বিষয়ে চাঁদপুর জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ মহসীন উদ্দিন ইউএনবিকে বলেন, “চাঁদপুরসহ দেশের ১০ থেকে ১২ জেলায় ইলিশ ধরা পড়ে এবং ক্রয়-বিক্রয় হয়। আমরা মনে করি, যদি চাঁদপুরে অংশীজনদের নিয়ে ইলিশের দাম নির্ধারণ করে দেই, তখন এই ইলিশ অন্য জেলায় গিয়ে বিক্রি হবে। এ কথা মাথায় রেখেই আমি মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করেছি, ইলিশের বাজার মূল্য যাতে সিন্ডিকেটের খপ্পরে না পড়ে এবং উচ্চমূল্য না হয়। তা যেন সাধারণের ক্রয়ক্ষমতার নাগালের মধ্যে থাকে।”
ডিএম /সীমা
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: