ব্যারিস্টার আরমানকে টিএফআই সেলে রাখার বিষয়টি আমি জানতাম: মামুন
প্রকাশিত:
৩০ জুলাই ২০২৫ ১৪:১৩
আপডেট:
৩১ জুলাই ২০২৫ ১০:২৯

সাবেক আইজিপি ও র্যাবের প্রাক্তন মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন জানিয়েছেন, ব্যারিস্টার আরমানকে টিএফআই সেলে আটকে রাখার বিষয়ে তিনি জানতেন। চলতি বছরের ২৪ মার্চ ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে দেওয়া পাঁচ পৃষ্ঠার এক জবানবন্দিতে তিনি এ তথ্য দেন।
সেখানে মামুন জানান, ব্যারিস্টার আরমানকে গোপনে আটক রাখা হয়। বিষয়টি তাকে জানিয়েছিলেন তৎকালীন র্যাবের ডিরেক্টর (ইন্টেলিজেন্স) সরওয়ার বিন কাশেম। এর আগেই র্যাবের ডিজি পদে দায়িত্ব নেওয়ার সময় তার পূর্বসূরি বেনজির আহমেদ তাকে আরমান সম্পর্কে অবহিত করেছিলেন।
মামুন বলেন, এসব ঘটনা মূলত প্রধানমন্ত্রীর সামরিক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক সিদ্দিকির নির্দেশেই ঘটত। পুলিশের মহাপরিদর্শক হয়েও এসব বিষয়ে তাকে জানানো হতো না। কখনো কখনো এসব নির্দেশ সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকেও আসত বলে তিনি শুনেছেন।
জবানবন্দিতে তিনি উল্লেখ করেন, র্যাবের বেশিরভাগ অভিযান পরিচালিত হতো গোয়েন্দা সংস্থার তথ্য ও পরামর্শের ভিত্তিতে। এসব কাজে পুলিশ বা আইজিপির নির্দেশনা অনেক সময় উপেক্ষা করা হতো।
তিনি বলেন, র্যাবের ডিরেক্টর (ইন্টেলিজেন্স) হিসেবে যারা দায়িত্ব পালন করেছেন, তারা হলেন—সরওয়ার বিন কাশেম, খায়রুল ইসলাম এবং মশিউর রহমান। তাদের মাধ্যমে তিনি কিছু গুম ও গোপন আটকের তথ্য পেয়েছেন। তবে এসব বিষয়ে তিনি তদন্ত করেননি এবং কোনো ব্যবস্থা নেননি।
মামুন আরও বলেন, ব্যারিস্টার আরমানকে কখন, কীভাবে আটক করা হয়, সে বিষয়ে তিনি জানতেন না। তবে তাকে টিএফআই সেলে আটকে রাখার সিদ্ধান্ত সরকারের উচ্চপর্যায় থেকেই আসে। বিষয়টি জানার পর তিনি তারিক সিদ্দিকির সঙ্গে যোগাযোগ করলেও কোনো সাড়া পাননি।
এছাড়া র্যাবের একাধিক কর্মকর্তার নির্যাতন এবং গুমের সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টিও তার জবানবন্দিতে উঠে আসে। বিশেষ করে র্যাব কর্মকর্তা আলেপ উদ্দিনের নাম উল্লেখ করে তিনি বলেন, গুম ও নির্যাতনের ক্ষেত্রে তার বিশেষ ভূমিকা ছিল বলে তিনি শুনেছেন। এই কর্মকর্তা র্যাবের মধ্যে ‘বিশেষ দক্ষ’ হিসেবে পরিচিত ছিলেন, যদিও তার সেই দক্ষতা ছিল অপেশাদার কাজে।
চৌধুরী মামুন স্বীকার করেন, র্যাবের যেসব কর্মকাণ্ডে মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে, সেসব বিষয়ে তিনি অবগত ছিলেন। কিন্তু আইজিপি বা ডিজি র্যাব থাকা অবস্থায় তিনি এসবের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেননি। কারণ এসব নির্দেশনা আসত সরাসরি গোয়েন্দা সংস্থা বা সামরিক উপদেষ্টার কাছ থেকে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: