মঙ্গলবার, ১৬ই সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১লা আশ্বিন ১৪৩২


বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন

তাপমাত্রার ঊর্ধ্বগতিতে স্বাস্থ্য ও অর্থনৈতিক ঝুঁকির মুখে বাংলাদেশ


প্রকাশিত:
১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৫:২৫

আপডেট:
১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৭:৪৮

ছবি : সংগৃহীত

ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রার কারণে বাংলাদেশ শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যঝুঁকির পাশাপাশি উৎপাদনশীলতা হ্রাস এবং অর্থনৈতিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে বলে জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক।

মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিশ্বব্যাংক প্রকাশিত ‘অ্যান আনসাস্টেইনেবল লাইফ: দ্য ইমপ্যাক্ট অব হিট অন হেলথ অ্যান্ড দ্য ইকোনমি অব বাংলাদেশ’ শীর্ষক এই প্রতিবেদনে ১৯৭৬ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের তাপমাত্রা ও আর্দ্রতার প্রবণতা বিশ্লেষণ করে প্রতিবেদন প্রকাশ করে সংস্থাটি।

প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ১৯৮০ সাল থেকে বাংলাদেশের গড় তাপমাত্রা ১.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং ‘অনুভূত’ তাপমাত্রা ৪.৫ ডিগ্রি সে. বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে ডায়রিয়া, দীর্ঘস্থায়ী কাশি, শ্বাসতন্ত্রের রোগ, ক্লান্তিজনিত অসুস্থতা, এমনকি বিষণ্নতা ও উদ্বেগের মতো মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে।

অর্থনৈতিক ক্ষতির চিত্র

বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে তাপ-সম্পর্কিত অসুস্থতার কারণে প্রায় ২৫ মিলিয়ন কর্মদিবস নষ্ট হয়েছে। এর ফলে দেশের অর্থনীতিতে প্রায় ১.৭৮ বিলিয়ন ডলার বা জিডিপির প্রায় ০.৪ শতাংশ ক্ষতি হয়েছে।

বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র অপারেশনস অফিসার এবং এই প্রতিবেদনের সহ-লেখক ইফফাত মাহমুদ বলেন, “আমাদের বিশ্লেষণ তাপের সংস্পর্শ এবং দুর্বল স্বাস্থ্যের মধ্যে একটি স্পষ্ট যোগসূত্র দেখায়, যা ব্যাপক উৎপাদনশীলতা ক্ষতির কারণ।”

স্বাস্থ্যঝুঁকি এবং দুর্বলতা

প্রতিবেদনে দেখা যায়, গ্রীষ্মকালে ডায়রিয়া এবং দীর্ঘস্থায়ী কাশির ঘটনা শীতকালের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ হয়। নারীরা ক্লান্তি এবং হিট স্ট্রোকের মতো তাপ-জনিত অসুস্থতার জন্য বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। তীব্র গরমে শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা বাড়ার কারণে গ্রীষ্মকালে উৎপাদনশীলতার ক্ষতিও বেশি হয়।

বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটান বিভাগের পরিচালক জ্যাঁ পেসমে বলেন, তীব্র গরম কেবল একটি মৌসুমি অস্বস্তি নয়, এর প্রভাব সুদূরপ্রসারী। জলবায়ু অভিযোজনে তার অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে এবং বিভিন্ন খাতে সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশ তাপপ্রবাহের প্রভাব মোকাবিলা করতে পারে।

প্রতিবেদনে এই ক্রমবর্ধমান ঝুঁকির মোকাবিলায় জরুরি এবং সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়েছে।

এর মধ্যে রয়েছে:

জাতীয় প্রস্তুতি বৃদ্ধি: তাপপ্রবাহ মোকাবিলায় একটি বহু-খাতভিত্তিক কৌশল গ্রহণ করা।

স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নতি: তাপ-সম্পর্কিত অসুস্থতা ব্যবস্থাপনার জন্য স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে আরও উন্নত করা।

তথ্য সংগ্রহ: সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য সঠিক আবহাওয়া ও স্বাস্থ্য সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করা।

শহরে সবুজায়ন তৈরি: শহরে সবুজ স্থান তৈরি করে তাপের প্রভাব কমানো।

এছাড়াও, বৈশ্বিক উষ্ণায়নের প্রভাব কমাতে আন্তর্জাতিক সহায়তা এবং সরকারি-বেসরকারি অর্থায়নের গুরুত্বও প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected], [email protected]
সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top