ভুয়া মানি অর্ডারে শিক্ষা বোর্ডের খাতা বিক্রি
 প্রকাশিত: 
 ৩ আগস্ট ২০২২ ১৮:২৮
 আপডেট:
 ৪ নভেম্বর ২০২৫ ১০:১৮
                                ভুয়া ও জাল মানি অর্ডারের মাধ্যমে শিক্ষা বোর্ডের জেএসসি, এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার নিরীক্ষিত খাতা ক্রয় করে সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে পথশিশু ফাউন্ডেশনের প্রধান মো. ফজলুল হক আশরাফ ও তার স্ত্রী মোছা. আছমা আক্তার শিমুর বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদকের গাজীপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সংস্থাটির উপসহকারী পরিচালক ওয়াহিদ মঞ্জুর সোহাগ বাদী হয়ে মামলা করেন। বুধবার (৩ আগস্ট) দুদকের একটি সূত্রে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে ২০২০ সালের ৮ ডিসেম্বর থেকে ১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে পরীক্ষকদের নিকট দেশের বিভিন্ন ডাকঘরের ভুয়া ও জাল মানি অর্ডার প্রেরণ করে খাতা সংগ্রহ করে সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে। আসামিদের বিরুদ্ধ দণ্ডবিধির ৪০৬/৪২০/৪৬৭/৪৭১/১০৯ ধারায় মামলাটি করা হয়।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, পোস্টাল জালিয়াত ও প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য মো. ফজলুল হক আশরাফ পথশিশু ফাউন্ডেশন ছাড়াও ছানোয়ার ফাউন্ডেশন ও এ্যারোলাইট বায়োগ্যাস নামে কতিপয় প্রতিষ্ঠানের প্রধান। তার স্ত্রী মোছা. আছমা আক্তার শিমু তার প্রতারণা কাজের সহযোগী। তারা শিক্ষা বোর্ডের জেএসসি, এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার নিরীক্ষিত খাতা প্রতিটি ০.৬০ টাকায় কেনার আবেদন করেন। আবেদন বাতিল হলে জনকল্যাণমূলক কাজে ব্যয়ের কথা বলে আসামি ফজলুল হক হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করেন। ওই রিটের আলোকে হাইকোর্ট বিভাগের মাধ্যমে বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষার উত্তরপত্র কেনার আদেশ পায়। এরপর নিরীক্ষিত খাতাগুলো তাদের নিকট প্রেরণের জন্য সংশ্লিষ্ট পরীক্ষকদের নিকট বিভিন্ন পোস্ট অফিসের জাল সিল ও স্বাক্ষরযুক্ত মানি অর্ডার প্রেরণ করে খাতাগুলো সংগ্রহ করেন। বিষয়টি সন্দেহ হলে ডাক বিভাগ তদন্ত করলে জমা দেওয়া মানি অর্ডার জাল ও ভুয়া বলে প্রমাণিত হয়।
আরও জানা যায়, আসামিরা তাদের অজ্ঞাতনামা কয়েকজনের সহায়তায় দেশের বিভিন্ন ডাকঘর থেকে ৪১০টি জাল মানি অর্ডার প্রেরণ করে। যার প্রতিটির মূল্যমান আড়াই হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা। এ ধরনের আরও জাল মানি অর্ডার তারা ব্যবহার করেছে বলে দুদকের অনুসন্ধানে প্রমাণ পাওয়া গেছে।
এর আগে, ২০২০ সালের ২৯ জুলাই উত্তরার র্যাব-১ এর অভিযানে নকল সিল, প্যাড ও জাল মানি অর্ডারসহ ওই আসামিদের গ্রেপ্তার করেছিল। এরপরই বিষয়টি নিয়ে বোর্ড কর্তৃপক্ষের সন্দেহ হয়। ডাক বিভাগের মাধ্যমে টাকা পেলেও মূলত সরকারি টাকা আত্মসাৎ হয়েছে বলে প্রমাণিত হয়েছে। বিপুল পরিমাণ অর্থ প্রতারক চক্র হাতিয়ে নিয়েছে। যদিও মামলার এই অবস্থায় আত্মসাৎকৃত টাকার পরিমাণ বের করা সম্ভব হয়নি। তদন্তকালীন সময়ে লোপাট করা অর্থের পরিমাণ জানা যাবে বলে দুদক জানিয়েছে।

                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: