মৈত্রী বিদ্যুৎ প্রকল্পের উদ্বোধন করলেন হাসিনা-মোদী
প্রকাশিত:
৭ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৪:৪৩
আপডেট:
২১ এপ্রিল ২০২৫ ০৩:১৫

বাগেরহাটের রামপালে মৈত্রী সুপার তাপ বিদ্যুৎ প্রকল্পের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) নয়াদিল্লির ‘হায়দরাবাদ হাউস’ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ভার্চুয়ালি এ প্রকল্পগুলো উদ্বোধন করেন দুই প্রধানমন্ত্রী। দীর্ঘদিনের প্রত্যাশিত ‘রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র’ টি উদ্বোধন হওয়ায় কেসিসি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেকসহ বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ উচ্ছাস প্রকাশ করেছেন।
আজ মৈত্রী বিদ্যুৎ কেন্দ্র উদ্বোধন হওয়ায় বাঁধভাঙ্গা উচ্ছাস প্রকাশ করে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক জানান, এ তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি দেশের বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে সক্ষম হবে। তাঁর ভাষায় ‘‘যে স্বপ্ন নিয়ে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নির্মাণ করা হয়েছে, সে স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে। অবহেলিত এখানে নতুন নতুন কল-কারখানা, শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠবে। তাদের এ অঞ্চলের অর্থনীতি-সহ সার্বিক ক্ষেত্রে ব্যাপক সমৃদ্ধি আসবে।’ তিনি উভয় দেশের প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।
রামপাল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র সম্পর্কে বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত মার্চ মাসে রামপাল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জ্বালাণী হিসেবে ব্যবহৃত ৩ লাখ টন কয়লা ক্রয়ে ইন্দোনেশিয়ার সাথে হয়। যার প্রথম চালান গত মাসে পৌঁছেছে। যা দিয়ে এখন ট্রায়াল চলছে।
বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড এর প্রকল্প কর্মকর্তা সুভাসিষ পান্ডে জানিয়েছেন, তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী চলতি সেপ্টেম্বরের মধ্যে সকল পরীক্ষা-নিরীক্ষা সম্পন্ন করা হবে। এরপর গ্রীডে নিয়মিত বিদ্যুৎ সাপ্লাইয়ের জন্য কেন্দ্রটি সর্বক্ষণের জন্য চালু থাকবে।’’ এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের চারপাশে সবুজ বনায়ন-সহ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে নানামুখী কার্যক্রমের বিস্তারিত বর্ণনা দেন তিনি।
বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান জানান, এটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অগ্রাধিকার ভিত্তিক প্রকল্প। তাঁর দৃঢ়চেতা নেতৃত্বের কারণে আজ এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি চালু হচ্ছে। এখন দেশে বিদ্যুতের সরবরাহ বৃদ্ধি পাবে।
রামপাল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র সূত্র মতে, এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির মূল অবকাঠামো নির্মাণের দায়িত্বে রয়েছে ভারত হেভি ইলেক্ট্রিক্যালস লিমিটেড (বিএইচইল) নামে দেশটির রাষ্ট্রীয় সংস্থা। বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নির্মাণে মোট ১৬ হাজার কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়। ২০১০ সালে বাগেরহাট জেলার রামপাল উপজেলার গৌরম্ভা ও রাজনগর ইউনিয়নের কৈগর্দ্দাশকাঠি-সাপমারী মৌজায় পশুর নদীর তীরে ১৮৩৪ একর ভূমি অধিগ্রহণের মাধ্যমে প্রকল্পটির কাজ শুরু হয়। ২০১২ সালে আনুষ্ঠানিক শুরু হয় নির্মাণ কাজ। এরপর দেশে-বিদেশে নানা বাধা-বিঘ্ন, চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি উদ্বোধন হল। এখান থেকে দুই ইউনিটে ৬৬০ মেগাওয়াট করে ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের কথা রয়েছে।
প্রসঙ্গত: ভারত সফরের দ্বিতীয় দিনে দুই দেশের মধ্যে সাতটি সমঝোতা স্মারক সই হয়। একই সঙ্গে উদ্বোধন হয় প্রকল্পগুলো। এরপর যৌথ বিবৃতি দেন দুই প্রধানমন্ত্রী।
বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠকে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। এখানে আমরা এমন কিছু সমঝোতা স্মারক করেছি, যাতে উভয় দেশের উন্নয়ন ও কল্যাণ হবে। এমন কিছু বিষয়ে আমরা মতৈক্যে পৌঁছেছি যা উভয় দেশের মানুষের জন্য কল্যাণকর। আমাদের প্রত্যাশা, শুধু বাংলাদেশ-ভারত নয়, দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ারও কল্যাণ হোক, সমৃদ্ধি হোক।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ও ভারত নিজেদের মধ্যকার অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করেছে। বাংলাদেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী দেশ ভারত। বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক ‘প্রতিবেশী কূটনীতির’ রোল মডেল।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: