শুক্রবার, ১৭ই মে ২০২৪, ৩রা জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১


আমাকে উৎখাত করলে পরবর্তীতে কে আসবে, প্রশ্ন প্রধানমন্ত্রীর


প্রকাশিত:
২ মে ২০২৪ ১৭:১৮

আপডেট:
১৭ মে ২০২৪ ০৮:২৩

 ফাইল ছবি

‘আমাকে উৎখাত করলে পরবর্তীতে কে আসবে’—এই প্রশ্ন রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘কারা আসবে, কে আসবে ক্ষমতায়। কে দেশের জন্য কাজ করবে, কাকে তারা আনতে চায়। সেটা কিন্তু স্পষ্ট নয়। আর সেটা স্পষ্ট নয় বলে তারা জনগণের সাড়া পাচ্ছে না।’

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন তিনি। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর থাইল্যান্ড সফর নিয়ে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। তবে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও উপজেলা নির্বাচন নিয়েও প্রশ্ন করেন সাংবাদিকেরা।

দেশের রাজনীতি নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বাম চলে গেছে ৯০ ডিগ্রি ঘুরে। তারা ৯০ ডিগ্রি ঘুরে গেছে। আমার একটা প্রশ্ন, বিশেষ করে যারা অতি বাম, সব সময় মনে করি তারা প্রোগ্রেসিভ দল, তারা খুবই গণমুখী দল ইত্যাদি। সেখানে আমার প্রশ্ন হচ্ছে, ঠিক আছে তারা আমাকে উৎখাত করবে। পরবর্তীতে কে আসবে তাহলে, সেটা কি ঠিক করতে পেরেছে? সেটাই তো আমার প্রশ্ন।’

গত মঙ্গলবার আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ‘অতি ডান অতি বাম এক হয়ে সরকার উৎখাত করতে চায়।’ তাঁর সেই মন্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে প্রশ্ন আসে সংবাদ সম্মেলনে। এর জবাবেই ওই বক্তব্য দেন।

এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘কারা আসবে, কে আসবে ক্ষমতায়। কে দেশের জন্য কাজ করবে, কাকে তারা আনতে চায়। সেটা কিন্তু স্পষ্ট নয়। আর সেটা স্পষ্ট নয় বলে তারা জনগণের সাড়া পাচ্ছে না। আন্দোলন করে যাচ্ছে বিদেশে বসে। আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ করে দিয়েছি। প্রতিদিন অনলাইনে আন্দোলন–সংগ্রাম করে যাচ্ছে, নির্দেশ দিয়েই যাচ্ছে। যারা আন্দোলন করছে করুক, তাদের তো বাধা দিচ্ছি না।’

আরেক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন, ‘আমার শক্তি জনগণ। জনগণ যত দিন চাইবে ক্ষমতায় থাকব। মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছি। এ জন্য যত চক্রান্ত আর বাধা আসুক আমরা বিজয় নিয়ে আসি। এখানে জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটছে।’

১৫ বছর আগে বাংলাদেশ কেমন ছিল। এই সময়ে কি কোনো পরিবর্তন হয়নি? এমন প্রশ্নও তোলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করেই নির্বাচন করেছি। ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারির নির্বাচন অতীতের সব নির্বাচনের চেয়ে অবাধ সুষ্ঠু ও ভোটের অধিকার রক্ষার নির্বাচন হয়েছে বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।

উপজেলা নির্বাচনে স্থানীয় সংসদ সদস্যদের স্বজনদের নির্বাচন অংশ না নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হলেও তা মানা হচ্ছে না, এ বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চেয়েছি নির্বাচন যাতে প্রভাবমুক্ত হয়। মানুষ যাতে স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারে, এ জন্য বলেছি। তার মানে এই নয় যে এক জায়গায় ছেলেকে, আরেক জায়গায় স্ত্রীকে—এটা তো হয় না। কর্মীদেরও সুযোগ দিতে হবে। এটাই বলতে চেয়েছি।’

ফিলিস্তিন ইস্যুতে আমেরিকায় ছাত্র বিক্ষোভ দমনের পুলিশের পদক্ষেপের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার মনে হয়, আমাদের পুলিশ আমেরিকার পুলিশের স্টাইল বা ধরন অনুসরণ করে আন্দোলন দমন করতে পারে। আমাদের পুলিশকে যদি বলে দিই যে আমেরিকার পুলিশ যেভাবে আন্দোলন থামায়, সেটা অনুসরণ করতে পারো।

সেটা করতে পারে। আমার মনে হয়, পুলিশ এখন আমেরিকার পুলিশদের অনুসরণ করতে পারে। আমার মনে হয়, সাংবাদিকেরা এ ব্যাপারে আমাদের সমর্থন দেবেন।’
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘কারণ, আমরা তো ধৈর্য ধরতে বলেছিলাম। সেই ২৮ অক্টোবরের কথা মনে আছে, ২০২৩ সালে। আমি তো বলেছিলাম পুলিশকে ধৈর্য ধরতে। ধৈর্য ধরতে গিয়ে পুলিশকে পিটিয়ে হত্যা করেছে। তাদের হাসপাতালে আক্রমণ করেছে। গাড়ি পোড়ানো হয়েছে। কাজেই আমার মনে হয়, এখন আমাদের পুলিশ আমেরিকার স্টাইলে আন্দোলন দমানোর ব্যবস্থাটা নিতে পারে।’

সংবাদ সম্মেলনে মিয়ানমারের সেনাসদস্যদের আশ্রয় নেওয়ার বিষয়েও সাংবাদিকেরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রশ্ন করেন। সাংবাদিকেরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে জানতে চান, মিয়ানমারের সঙ্গে থাইল্যান্ডের ভালো সম্পর্ক রয়েছে। এই বিষয়টি নিয়ে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে কি না। জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমার থেকে আগতদের প্রত্যাবর্তনের বিষয়টি দেখবেন বলে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন। তিনি বলেছেন, গভীরভাবে তিনি বিষয়টি দেখবেন। মিয়ানমারের বিষয়টি নিয়ে তাঁরাও উদ্বিগ্ন। মিয়ানমারের সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেবেন বলে তিনি জানিয়েছেন।

বাংলাদেশের বেশির ভাগ বেসরকারি টেলিভিশন প্রধানমন্ত্রীর এই সংবাদ সম্মেলন সরাসরি সম্প্রচার করেছে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected], [email protected]
সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top