মুরাদনগর বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর পুলিশি নির্যাতনের অভিযোগ
প্রকাশিত:
৮ এপ্রিল ২০২৫ ১৭:১৮
আপডেট:
১৩ এপ্রিল ২০২৫ ০৭:২০
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর পুলিশ প্রশাসন নির্যাতন করছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় নেতারা। তাদের দাবি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের নির্দেশে পুলিশ বিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করছে, থানায় নিয়ে নির্যাতন করছে।
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন মুরাদনগর উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব মোল্লা মজিবুল হক।
মজিবুল হক অভিযোগ করে বলেন, আওয়ামী লীগের লোকজন এনসিপিতে যোগ দিয়েছে। আর উপদেষ্টা আসিফের সঙ্গে মিশে পুলিশের সহযোগিতায় বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর পূর্বের ন্যায় জুলুম নির্যাতন শুরু করেছ।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, দীর্ঘ ১৭ বছর শেখ হাসিনার দু:শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রাম করতে গিয়ে সারা দেশের ন্যায় মুরাদনগর উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরাও জীবন বাজি রেখে রাজপথের আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন। আমরা ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের শত জুলুম নির্যাতন সহ্য করেও রাজপথ ছাড়িনি। তবে রাজপথের আন্দোলন এবং সর্বশেষ বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে সারা দেশ ফ্যাসিবাদ মুক্ত হলেও আমরা মুরাদনগরবাসী আজও ফ্যাসিবাদের রোষানলে পড়ে রয়েছি।
মজিবুল হক দাবি করেন, আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুনের নির্দেশে মুরাদনগর আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা এখন এনসিপি রূপে আমাদের নেতা কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ ও বিএনপির বিরুদ্ধে ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা হলে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের কমিটি ঘোষণা করা হয়। সেই কমিটিতে মুরাদনগরের কোম্পানিগঞ্জে আন্দোলন করা শিক্ষার্থীদের বাদ দিয়ে আসিফ মাহমুদের আপন চাচাতো ভাইকে আহ্বায়ক করে ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের দিয়ে কমিটি গঠন করা হয়। ফলে তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিবাদ জানিয়ে ওই কমিটি প্রত্যাখান করে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করেন।
মোল্লা মজিবুল হক বলেন, উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদের মতো ক্ষমতার অপব্যবহার করে কুমিল্লার এসপি পরিবর্তন করে তার মদদপুষ্ট এসপি নিয়োগ দেন। নতুন এসপি এসেই মুরাদনগর ও বাঙ্গরা থানার ওসি পরিবর্তন করেন। মুরাদনগরের বর্তমান ওসি ঢাকায় ডিবিতে কর্মরত ছিলেন এবং বিএনপি নেতাকর্মীদের নির্যাতন করেছেন। যিনি সবসময় সাবেক ডিবি প্রধান হারুনের প্রশংসা করেন।
উপদেষ্টার লোকজন সংখ্যায় খুব নগণ্য হলেও এখন পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের প্রধান ভরসা উল্লেখ করে মজিবুল হক বলেন, তারা মুরাদনগরে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। তারা বিএনপি নেতাকর্মীদের ঘরে ঘুমাতে দেবে না। তিন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মুরাদনগরে যা ইচ্ছে করবে। প্রশাসন তার কথামতো কাজ করবে এবং বাস্তবেও তাই দেখা যাচ্ছে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, আমি প্রধান উপদেষ্টা ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে মুরাদনগরের সাধারণ জনগণ ও বিএনপির পক্ষ থেকে আবেদন এই যে, আমাদেরকে পুলিশের ফ্যাসিবাদী আচরণ থেকে রক্ষা করুন। কুমিল্লার এসপি মুরাদনগর ও বাঙ্গরা থানার ওসির গায়েবি মামলা থেকে মুক্ত হয়ে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করতে চাই। অন্যথায় মুরাদনগরের আপামর জনতা আরেকবার যুদ্ধে নামতে বাধ্য হবে।
সংবাদ সম্মেলনে সৌমিতা বেগম নামের এক মধ্যবয়স্ক নারী দাবি করেন, বিএনপি করার কারণে তার ছেলে জুয়েলকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। এখনও সে কারাগারে আছে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: