দ্রুত নির্বাচনি রোডম্যাপ দিন, ইসিকে ডা. জাহিদ
 প্রকাশিত: 
 ২৩ আগস্ট ২০২৫ ০৬:৪৬
 আপডেট:
 ২৩ আগস্ট ২০২৫ ০৭:৪১
                                দ্রুত নির্বাচনি রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন। শুক্রবার (২২ আগস্ট) দুপুরে এক আলোচনা সভায় তিনি এই দাবি জানান।
তিনি বলেন, আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, আর বিলম্ব নয়। ড. মুহাম্মদ ইউনুসের স্যারের নেতৃত্বে যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ফেব্রুয়ারির মধ্যভাগের মধ্যে নির্বাচনের জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ কমিশনকে যে রিকোয়েস্ট করেছেন। এখন আমরা চাই, অনতিবিলম্বে নির্বাচন কমিশন নির্বাচনি রোডম্যাপ ঘোষণা করবে।
জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে ‘বিশ্ব মানবাধিকার সংস্থা-বাংলাদেশ’ এর উদ্যোগে ‘গণতন্ত্র ও মানবাধিকার নিশ্চিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের গুরুত্ব’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা আয়োজন করা হয়।
নির্বাচন নিয়ে কয়েকটি রাজনৈতিক দলের নানা ধরনের বক্তব্যের সমালোচনা করে এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, আপনারা বলেন, পিআর না হলে নির্বাচনে যাব না। আপনি যে এই কথাটি বলেন, এই কথাটির ইমপ্লিকেশন চিন্তা করেছেন। আজকে যদি নির্বাচন প্রলম্বিত হয়, নির্বাচন যদি বিলম্বিত হয়, নির্বাচন যদি যথাসময়ে না হয় তাহলে লাভ কাদের? লাভ হচ্ছে, পতিত স্বৈরাচারের রেখে যাওয়া যে সমস্ত সুবিধাভোগীরা আজ প্রশাসনে বলেন, বিচারালয়ে বলেন, ব্যবসা ক্ষেত্রে বলেন, সর্বত্র ছড়িয়ে আছে তাদের।
ডা. জাহিদ বলেন, তারা দেশে ও দেশের বাইরে বসে তাদের নেত্রী ষড়যন্ত্র করছে নির্বাচন হতে দিব না বলে অর্থাৎ এক ধরনের বিশৃঙ্খলা হলে লাভ কাদের? লাভ হচ্ছে পলায়নকৃত স্বৈরাচারের। আপনারা যারা বুঝে না বুঝে বিভিন্ন দাবি তুলে আজকে নির্বাচনকে পিছিয়ে দিতে চান; তারা কি প্রকারান্তরে স্বৈরাচারের পক্ষে কাজ করছেন কিনা সেটি কী বিবেচনা করেছেন?
বিএনপির এই নেতা বলেন, আজকে যদি স্বৈরাচারের পক্ষে কাজ করেন এবং আপনাদের কর্মসূচির কারণে যদি আজ কোনো কারণে এই দেশের নির্বাচন হবে কি হবে না; এটি নিয়ে মানুষের মধ্যে এক ধরনের আশঙ্কা জমে তাহলে লাভবান হবে পলায়নকৃত স্বৈরাচার। এর জন্য কী আপনারা ২০২৪ সালের ৩৬ জুলাই করেছিলেন? আমি এখনও বলব, ভাইয়েরা বোঝার চেষ্টা করেন; ক্রীড়নকের ভূমিকায় দয়া করে লাফ দিয়ে পড়বেন না।
জাহিদ বলেন, দয়া করে দেয়ালের লিখন পড়তে শিখুন, রাজনীতিকে রাজনীতি দিয়ে মোকাবিলা করুন। কোনো অবস্থাতেই গায়ের জোরে কোনো কিছু চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবেন না। গায়ের জোর থাকা ভালো। গায়ের জোর কোন পারপাসে আপনি ব্যবহার করবেন সেটি আপনার মনে রাখতে হবে। গায়ের জোর যদি আপনি ন্যায়ের জন্য করেন আপনাকে মানুষ সাধুবাদ জানাবে, গায়ের জোর যদি আপনি অন্যায়ের জন্য ব্যয় করেন মানুষ কিন্তু আপনাকে সাধুবাদ জানাবে না। তখন মানুষ আপনাকে বলবে আপনি উগ্রপন্থা অবলম্বন করছেন।
অধ্যাপক জাহিদ বলেন, যারা সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনের কথা বলেন…, গতকাল দেখলাম বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, পিআর পদ্ধতি হলে সত্যিকার অর্থে ধ্বংসের দিকে দেশ এগিয়ে যাবে। বাংলাদেশ কী এটা বহন করতে পারবে? তিনদিন পরপর সরকার পরিবর্তন হবে, ঝুলন্ত পার্লামেন্ট হবে। বাংলাদেশের মানুষ জানে, সে কাকে ভোট দিচ্ছে? কে তার প্রতিনিধি? কে তার জন্য কাজ করবে? এলাকার উন্নয়নের জন্য কাজ করবে?
তিনি আরও বলেন, কোন অবস্থাতেই আপনার পকেট থেকে আপনি ১০টা আর সুব্রত চৌধুরী সাহেবের পকেট থেকে ১০টা…নাম দিয়ে দেবেন আর মানুষ আপনাদেরকে ভোট দিবে; মানুষ তাদেরকে দেখলো না, জানলো না, বুঝলো না। এটার জন্য বাংলাদেশের মানুষ কী আদৌ প্রস্তুত। প্রস্তুত নয়। বাংলাদেশের মানুষ এই পিআর সিস্টেম বোঝে না। কোন অবস্থাতেই এমন কোনো আচরণ মানুষের সঙ্গে করা উচিত না যাতে মানুষ বিভ্রান্ত হয়। যা দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য, দেশের অস্তিত্বের জন্য সত্যিকার অর্থে মহাবিপদ ডেকে আনবে।
সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপক আবদুল লতিফ মাসুমের সভাপতিত্বে ও জাহাঙ্গীর আলম মিন্টুর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় গণফোরামের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ মাহবুব হোসেন, নজরুল ইসলাম, উম্মুত তিজান মাখদুমা পন্মী, আবুল কাশেম চৌধুরী, গাজী মোশাররফ হোসেন, আজহারুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
ডিএম/রিয়া

                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: