আইএসপিআরের বক্তব্য প্রত্যাখ্যান গণঅধিকার পরিষদের
 প্রকাশিত: 
 ৩১ আগস্ট ২০২৫ ১১:২৫
 আপডেট:
 ৪ নভেম্বর ২০২৫ ১৮:৩০
                                আইএসপিআরের দেওয়া বিবৃতি প্রত্যাখ্যান করেছে গণঅধিকার পরিষদ। সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান অভিযোগ করে বলেছেন, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূরসহ প্রায় শতাধিক নেতাকর্মীর ওপর রক্তাক্ত হামলা চালিয়েছে সেনাবাহিনী এবং পুলিশ।
রোববার (৩১ আগস্ট) দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।
আইএসপিআরের বিবৃতির প্রসঙ্গে গণঅধিকার পরিষদের নেতা বলেন, তারা বলেছে আমাদের উপর ‘মব’ হামলা হয়েছে। কিন্তু মব করেছে কারা? আমরা আমাদের কার্যালয়ের সামনে প্রেস ব্রিফিং করছিলাম, তখন সেনাবাহিনীর কয়েকজন সদস্য হামলা চালায়। এটিকে মব বলা যায় না। যদি মব হয়েই থাকে, তাহলে সেই মব সৃষ্টি করেছে সেনাবাহিনীর কয়েকজন সদস্য।
তিনি স্পষ্টভাবে জানান, সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে যে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে আমরা সেটি প্রত্যাখ্যান করছি। আমাদের কার্যালয়ে ভাঙচুর করা হয়েছে, ভেতরে ঢুকে নেতাকর্মীদের রক্তাক্ত করা হয়েছে। এটাকে যদি মব বলা হয়, তবে সেই মব করেছে সেনাবাহিনী।
রাশেদ খান বলেন, বিভিন্ন মিডিয়াতে এসেছে কিভাবে গণঅধিকার পরিষদের কার্যালয়ে সেনাবাহিনী ভাঙচুর চালিয়েছে। সে সময় আতঙ্কে নেতাকর্মীরা বাথরুমে আশ্রয় নিয়েছিল। সেনা সদস্যরা বাথরুমের দরজা ভেঙে তাদের বের করে রক্তাক্ত করে।
তিনি বলেন, আমার নিজের কাছে লজ্জা লাগছে সেনাবাহিনীর নাম মুখে নিতে হচ্ছে। সেনাবাহিনী আমাদের গর্বের প্রতিষ্ঠান। গণঅভ্যুত্থানের ভূমিকা রয়েছে এই বাহিনীর। অথচ কতিপয় ব্যক্তিকে রক্ষা করার জন্য পুরো বাহিনীকে কলুষিত করা হচ্ছে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, সেনা প্রধানকে ২৪ ঘণ্টার সময়সীমা দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু এখনও তিনি তার অবস্থান স্পষ্ট করেননি। ‘কেন তিনি তার অবস্থান স্পষ্ট করছেন না, সেটি আমাদের কাছে উদ্বেগজনক।’
নুরুল হক নুরের শারিরীক অবস্থার বিষয়ে রাশেদ খান বলেন, ‘গতকাল রাতে আমি তার সঙ্গে দেখা করেছি। পুলিশ তাকে আঘাত করেছে—এমন খবর আসলেও সেটি সঠিক নয়। মূলত সেনাবাহিনীর কয়েকজন সদস্য তাকে চিনতে পেরেই একের পর এক আঘাত করেছে। আপনারা দেখেছেন, একজন সেনা সদস্য লাঠি দিয়ে নূরের বুকে আঘাত করেছে।
তিনি বলেন, জুলাই মাসে গণঅভ্যুত্থানের সময় নুরুল হক নূর বলেছিলেন, ‘হাসিনার ৯০% পতন হয়েছে, ১০% বাকি।’ সেই ঘোষণার প্রতিশোধ হিসেবেই এই হামলা চালানো হয়েছে বলে দাবি তার।
রাশেদ খান বলেন, সেখানে কয়েকজন সেনা সদস্য বলেছে, জুলাই ভ*রে দেওয়া হবে। আমরা জানতে চাই এরা কারা? এরা ছাত্রলীগ-যুবলীগ ক্যাডারের চেয়েও ভয়ংকর। দেশপ্রেমিক বাহিনী সেনাবাহিনীতে তাদের চাকরি করার সুযোগ নেই। তাদের গ্রেফতার করে শাস্তি দিতে হবে।
তিনি আরও আশঙ্কা প্রকাশ করেন, নুরুল হক নূরের চিকিৎসা বাংলাদেশে নিরাপদ নাও হতে পারে। ‘হাসিনার আমলে নূর বাইশবার হামলার শিকার হয়েছে, শরীর ক্ষতবিক্ষত। এখন তার উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন। আমরা মনে করি তাকে সিঙ্গাপুর অথবা যুক্তরাজ্যে নিতে হবে।’
তিনি জানান, সরকারের পক্ষ থেকে নুরকে বিদেশে পাঠানোর ঘোষণা এসেছে। রাষ্ট্রপতিও নুরকে ফোন করে বলেছেন, বিদেশে নেওয়া হবে। তবে গণঅধিকার পরিষদ আশঙ্কা করছে দেশে চিকিৎসা চললে নুরের নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়বে।
রাশেদ খান বলেন, আগেও দেখা গেছে, ইনজেকশন পুশ করে জনপ্রিয় নেতাকে হত্যা করা হয়েছে। তাই মনে হচ্ছে নুরের ওপর টার্গেট ক্লিন উদ্দেশ্যে হামলা হয়েছে। সরকার বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠনের কথা বললেও তারা সেটি করবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।

                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: