ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র
জুলাই সনদের ভিত্তিতেই নির্বাচন হতে হবে
 প্রকাশিত: 
 ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১১:২৩
 আপডেট:
 ৪ নভেম্বর ২০২৫ ১৩:২৬
                                আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের আগেই জুলাই সনদ বাস্তবায়ন এবং সেই নির্বাচন নতুন সনদের মাধ্যমেই হতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদি। তিনি বলেন, নতুন নির্বাচন বাধ্যতামূলক এবং এটি জুলাই সনদের ভিত্তিতে হতে হবে। যদি এই প্রজন্মের মানুষের ভোট ও দাবি উপেক্ষা করা হয়, তারা সেই নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করবে। আমাদের রাজনৈতিক দলগুলো মিলে নতুন সংসদ গঠন করবে এবং নতুন সংবিধান প্রণয়ন করবে।
রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে গণশক্তি সভা আয়োজিত জুলাই সনদ ও নির্বাচন শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
শরীফ হাদি বলেন, দেশের মানুষ গত ১৬ বছরে ভোট দিতে পারেনি। নির্বাচন হতেই হবে। এই নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দিল্লি থেকে শুরু করে আওয়ামী লীগ হাজার কোটি টাকা নতুন করে এখানে বিনিয়োগ করছে। আমাদের প্রশ্ন, সেই নির্বাচনের ম্যান্ডেট কি হবে? কোনো আপত্তি ছাড়া নতুন নির্বাচন হতে হবে, শুধু জুলাই সনদের ভিত্তিতে। এই ভিত্তিতে নির্বাচন হলে নতুন সংসদ নতুন বাংলাদেশের জন্য দায়িত্বশীল হবে।
তিনি বলেন, জুলাই সনদের বৈধতা নির্বাচনের আগে নিশ্চিত করে সেই ভিত্তিতে নতুন নির্বাচন হতে হবে। সেই নির্বাচনের ম্যান্ডেট অনুযায়ী নতুন সংসদ গঠন করবে এবং দেশের জন্য নতুন সংবিধান প্রণয়ন করবে। ৭২ সালের সংবিধান বাকশালী ও ফ্যাসিবাদী ছিল। এটি প্রণয়ন করা হয়েছিল পাকিস্তান রাষ্ট্রের মধ্যে শপথ নিয়ে, বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্য বৈধ ম্যান্ডেট ছিল না। তারপরও তারা সংবিধান তৈরি করেছিল, কিন্তু গণভোটের মাধ্যমে সেটিকে বৈধতা দেওয়া হয়নি। এরপর ৭৩ সালের নির্বাচনের মধ্যেও এই সংবিধানকে বৈধতা দেওয়া হয়নি। আজ আমরা সেই দায়বদ্ধতা বয়ে যাব না।
শরীফ হাদি উল্লেখ করেন, বর্তমান সংবিধান ফ্যাসিস্ট এবং এই সংবিধানের মাধ্যমে শেখ হাসিনা সমস্ত হত্যাকাণ্ড, গুম, খুনসহ সব অপকর্ম করেছেন। বিএনপির অনেকেই ৭২ সালের সংবিধানকে ভালোবাসেন, কিন্তু সেটি গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। আমরা চাই, নতুন সংবিধান প্রণয়ন করা হোক, যা দেশের গণতান্ত্রিক ভিত্তিকে শক্তিশালী করবে।
তিনি সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানের উদাহরণ দিয়ে বলেন, পৃথিবীতে দ্বিতীয় ইতিহাস নেই, যেখানে একজন সামরিক শাসক সামরিক ফরমান জারি করে দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়েছেন। জিয়াউর রহমান দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়েছিলেন। কিন্তু শেখ হাসিনা দেশে ফিরে আসার এক মাসের মধ্যে জিয়াউর রহমান শহীদ হন। তখন আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক সুযোগ পেয়েছিল। কিন্তু হাসিনার চরিত্র এমন যে, যারা ভালোবাসা প্রদর্শন করে, তাদেরকে হত্যা করেছে। এই ইতিহাসও আমাদের জানার প্রয়োজন।
শরীফ হাদি সংক্ষেপে বলেন, আমরা চাই জনগণ ভোট দিতে পারুক। নতুন নির্বাচন হোক, নতুন সংসদ গঠন হোক এবং নতুন সংবিধান দেশের গণতান্ত্রিক ভিত্তিকে পুনরায় শক্তিশালী করুক। এই প্রজন্মের অধিকার ও দাবি উপেক্ষা করা চলবে না, তারা এই নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করবে।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন গণশক্তি সভার সভাপতি সাংবাদিক সাদেক রহমান। অধ্যাপক ড. দেওয়ান সাজ্জাদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় আরও বক্তব্য দেন কর্নেল (অব.) হাসিনুর রহমান, গণমুক্তি জোটের চেয়ারম্যান আইনজীবী ড. শাহরিয়ার ইফতেখার ফুয়াদসহ আরও অনেকে।

                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: