ওবায়দুল কাদেরের কথায় বিনোদন পাই: ফখরুল
 প্রকাশিত: 
 ১৩ মার্চ ২০২১ ১৬:৫০
 আপডেট:
 ১৪ মার্চ ২০২১ ১০:৩৪
 
                                আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, তার কথায় আমরা সবাই বিনোদন পাই ও কৌতুক বোধ করি। আর তার কথা বলার ভঙ্গি খুব সুন্দর।
শনিবার (১৩ মার্চ) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে বিএনপির স্বাধীনতা সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন চিকিৎসা ও সেবা কমিটি আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কখা বলেন।
‘ফ্রি চিকিৎসা সেবা, বিনামুল্যে ওষুধ বিতরণ ও স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি উদ্বোধন’ উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
এতে মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রতিদিন কমেন্ট করেন, কথা বলতে থাকেন। গতকালও বলেছেন। তার কথায় আমরা সবাই বিনোদন পাই ও কৌতুক বোধ করি। উনার কথা বলার ভঙ্গি খুব সুন্দর। তার বসে থাকার ভঙ্গিটাও খুব সুন্দর। তিনি যে আসনে বসে কথা বলেন, সেটাও খুব সুন্দর। তিনি অত্যন্ত সুদর্শন মানুষ। চমৎকার কোট ও পাঞ্জাবি পড়েন। আর পত্র পত্রিকায় বের হয়েছে যে, তার ঘড়িগুলোর দাম নাকি ৩৬ লাখ, ৫২ লাখ এবং ১ কোটি, এই রকম দামের। কিন্তু কত দাম সেটা আমরা জানি না।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সস্পাদক ওবায়দুল কাদের বিএনপির আন্দোলন সম্পর্কে কটাক্ষ করেছেন উল্লেখ করে তিরি বলেন, প্রত্যেক দিন তিনি বিএনপিকে নিয়ে কথা বলেন। আর বলেন যে, বিএনপি নাই। বিএনপি নাই, তাহলে প্রত্যেকদিন কেন বিএনপিকে নিয়ে কথা বলেন? এজন্য বলেন, কারণ বিএনপি আছে, খুব ভালো করেই আছে এবং আপনাদের ওপর চড়াও হয়ে বসে আছে বলেই বিএনপিকে নিয়ে কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদেরকে উদ্দেশ্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, আপনাদের তো লজ্জা হওয়া উচিত। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সাহেবের। আপনার এলাকায় কি হচ্ছে? আজকে পত্রিকায় এসেছে, সেখানে যে দুটি খুন হয়েছে- তাদের মধ্যে একজনের (শ্রমিক) ভাই মামলা করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু পুলিশ মামলা নেয়নি। কাদের মির্জার (ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই) বিপক্ষে মামলা নেয় নাই। কারণ তিনি তো শুধু কাদের মির্জা নন। তিনি বাংলাদেশের দ্বিতীয় শক্তিশালী ওবায়দুল কাদের সাহেবের ভাই। কোথায় আপনার সুবিচার? কোথায় গণতন্ত্র ও ন্যায়ের শাসন?
বিএনপি ৭ মার্চ পালন করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, অনেকে আমাদের ভুল বোঝার চেষ্টা করেছেন। এ নিয়ে কথাও বলেছেন, ৭ মার্চ পালন করা মানে ৭ মার্চের ভাষণকে স্বীকৃতি দেওয়া! কিন্তু ৭ মার্চের ভাষণ তো একটি ইতিহাসের অংশ। অবশ্যই ঐতিহাসিক। এটাকে অস্বীকার করার তো কোন উপায় নেই। আমরা কি বলেছি ৭ মার্চে? আমরা বলেছি, ৭ মার্চের ভাষণেই স্বাধীনতা আসে নাই। আমরা বলেছি, একদিনেই কোনো একটা ভাষণের ফলেই যুদ্ধে পরিণত হয় নাই। ‘দল কানা হয়ে থাকলে চলবে না। ইতিহাসকে ইতিহাস দিয়েই মূল্যায়ন করতে হবে। সেটাই ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশে সুপরিকল্পিতভাবে আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় এসেছে তখন তারা অত্যান্ত সচেতনভাবে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাসকে বিকৃত করছে। এই মুক্তিযুদ্ধে, স্বাধীনতা সংগ্রামে যাদের অবদান- সেগুলোকে একেবাবেই খাটো করে, অথবা একেবারেই না বলে মাত্র একটি ইতিহাস তারা বলতে চেয়েছে, এই পুরো স্বাধীনতার জন্য একজন ব্যক্তি, একটি পরিবার, একটি গোষ্ঠী ও একটি রাজনৈতিক দলই কৃত্বিতের দাবিদার। এটা সত্য নয়।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার পরপরই আওয়ামী লীগের চরিত্র সম্পূর্ণ বদলে গেছে। গণতন্ত্রে মধ্যে তারা আর নিজেদেরকে ধারণ করতে পারছে না।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করার কথা ছিল স্বাধীনতা সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন চিকিৎসা ও সেবা কমিটির আহ্বায়ক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনারের। কিন্তু তিনি অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে থাকায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পারেননি।
ড্যাবের মহাসচিব ডা. আব্দুস সালামের সভাপতিত্বে ও স্বাধীনতা সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন চিকিৎসা ও সেবা কমিটির সদস্য সচিব ডা. হারুন আল রশিদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, ড্যাবের সিনিয়র সহ সভাপতি ডা. মো. আব্দুস সেলিম প্রমুখ বক্তব্য দেন।

 
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                    
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: