মঙ্গলবার, ১৮ই ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৬ই ফাল্গুন ১৪৩১


কিবলার দিকে মুখ করে প্রস্রাব-পায়খানা করা কি ঠিক?


প্রকাশিত:
২০ জানুয়ারী ২০২৫ ১১:১৭

আপডেট:
১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৯:৩৯

প্রতীকী ছবি

প্রস্রাব-পায়খানা মানুষের প্রকৃতিগত বিষয়। কেউ এর থেকে মুক্ত থাকতে পারে না। স্বভাবগত এই প্রয়োজন দেখা দিলে মানুষ তাৎক্ষণিক এ থেকে মু্ক্ত হয়ে হাফ ছেড়ে বাঁচেন।

ইসলাম মানব জীবনের প্রতিটি বিষয় বিশদভাবে শিক্ষা দিয়েছে। এর ভালো-মন্দ দিক নিয়ে আলোচনা ও বিভিন্ন আদেশ নিষেধ দিয়েছে। সব কিছুর মতো একান্ত প্রাকৃতিক বিষয় প্রস্রাব-পায়খানা নিয়েও গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা রয়েছে ইসলামে। হাদিসের গ্রন্থগুলোতে ইস্তেঞ্জা নিয়ে বিশদ বর্ণনা ও আলাদা আলাদা অধ্যায় রয়েছে।

আল্লাহর রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘আমি তোমাদের জন্য পিতার মতো। আমি তোমাদের সব কিছু শিক্ষা দিয়ে থাকি। তোমরা প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে গেলে কেবলাকে সামনে বা পেছনে দিয়ে বসবে না। ডান হাত দিয়ে শৌচকার্য সম্পাদন করবে না।’ তিনি তিনটি ঢিলা ব্যবহারের নির্দেশ দিতেন এবং গোবর ও হাড্ডি দ্বারা ঢিলা করা থেকে বারণ করতেন। -(আবু দাউদ, হাদিস : ০৭)

স্বভাবগতভাবে মানুষ প্রস্রাব-পায়খানা করার জন্য গোপন ও আড়াল জায়গা বেছে নেয়। হাদিসেও এমন জায়গার কথা বলা হয়েছে, হজরত আবু মূসা (রা.)- এর সূত্রে বর্ণিত, একদিন আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সঙ্গে ছিলাম। তিনি পেশাব করার ইচ্ছা করলেন। অতঃপর তিনি একটি দেয়ালের গোড়ার নরম মাটিতে গিয়ে পেশাব করলেন। এরপর তিনি বললেন, তোমাদের কেউ পেশাব করতে চাইলে যেন নীচু নরম জায়গা অনুসন্ধান করে নেয়। -(আল-জামি’উস সাগীর ৩১৯, মিশকাত ৩৪৫)

কিবলার দিকে মুখ করে বা পিঠ দিয়ে পেশাব পায়খানা করা শরিয়তের দৃষ্টিতে বৈধ নয়। হাদিস শরিফে এসেছে, রাসূল (সা.) বলেন,

إِذَا أَتَيْتُمُ الْغَائِطَ فَلَا تَسْتَقْبِلُوا الْقِبْلَةَ بِغَائِطٍ وَلَا بَوْلٍ، وَلَا تَسْتَدْبِرُوهَا

‘তোমরা যখন মলত্যাগ করতে যাও, তখন মলত্যাগ বা পেশাবের সময় কিবলাকে সামনে বা পেছনে রেখে বসো না।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ৮)

টয়লেট ব্যবহারের দোয়া

হাদিসে প্রস্রাব-পায়খানার নির্দিষ্ট আদব ও শিষ্টাচার শিক্ষা দেওয়া হয়েছে এবং টয়লেটে প্রবেশের আগে ও পরে দোয়া পড়ার কথা বলা হয়েছে। আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘নোংরা জায়গাগুলো জ্বিন ও শয়তানদের থাকার জায়গা। অতএব তোমাদের মধ্যে কেউ যখন প্রসাব-পায়খানায় যায়, সে যেন এই দোয়া বলে-

اللَّهُمَّ إِنِّى أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْخُبْثِ وَالْخَبَائِثِ

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল খুবুসি ওয়াল খাবা-ইস।

অর্থ : হে আল্লাহ, আমি আপনার আশ্রয় প্রার্থনা করছি দুষ্ট পুরুষ-জ্বিন ও দুষ্ট নারী-জ্বিনের অনিষ্ট থেকে। (বুখারি, হাদিস : ১৪২ )

অথবা যেন এই দোয়া বলে-

ﺑﺴﻢ ﺍﻟﻠﻪ اللَّهُمَّ إِنِّى أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْخُبْثِ وَالْخَبَائِثِ

উচ্চারণ : বিসমিল্লাহি আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল খুবুসি ওয়াল খাবা-ইস।

অর্থ : আল্লাহর নামে শুরু করছি, হে আল্লাহ! আমি আপনার আশ্রয় প্রার্থনা করছি দুষ্ট পুরুষ-জ্বিন ও দুষ্ট নারী-জ্বিনের অনিষ্ট থেকে। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবাহ, হাদিস : ৫)

টয়লেট থেকে বাইরে আসার পর আরেকটি দোয়া পড়ার কথা বলা হয়েছে। দোয়াটি হলো—

الحمدُ للهِ الذي أَذْهَبَ عَنَّى الأَذَى وعَافَانِي

উচ্চারণ : আলহামদুলিল্লা হিল্লাজি আজহাবা আন্নিল আজা ওয়া আফানি

অর্থ : সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর যিনি আমার হতে কষ্টদায়ক বিষয়সমূহ দূর করেছেন এবং আমাকে নিস্তার দিয়েছেন। (আবু দাউদ, হাদিস : ৩০ : ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৩০১)



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected], [email protected]
সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top