মঙ্গলবার, ১৭ই সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১লা আশ্বিন ১৪৩১


অপরাধের স্বর্গরাজ্য নিউইয়র্কের রাস্তা, বেড়েছে যৌনকর্মী


প্রকাশিত:
২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৫:২৫

আপডেট:
১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০১:৩৬

ফাইল ছবি

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক মহানগরীর জ্যাকসন হাইটস এলাাকার রাস্তাগুলো এখন অপরাধের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। যেখানে সেখানে যৌনকর্মীরা খোলামেলা ভাবে তাদের ব্যবসা পরিচালনা করছে। বিভিন্ন স্থানে দেখা চোর-ছিনতাইকারীরা অবাধে চালাচ্ছে লুটপাট। গত ৫ মাসে সেখারকার পরিস্থিতি খুবই খারাপ অবস্থায় পৌঁছেছে।

কুইন্সের ৯১ স্ট্রিটের কাছে রুজভেল্ট অ্যাভিনিউতে অবৈধ উন্মুক্ত মাইগ্র্যান্ট মার্কেট এলাকা কয়েক ডজন যৌনকর্মী রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকে। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে এলাকাটিতে যৌনকর্মীদের সংখ্যা আগের চেয়ে দ্বিগুণ হয়েছে। খবর নিউইয়র্ক পোস্টের।

মার্কিন গণমাধ্যম নিউইয়র্ক পোস্টের প্রতিবেদনের বলা হয়, স্থানীয় চোরেরা এতটাই দুঃসাহসী হয়ে উঠেছে যে, তারা চুরি করে ধরা পড়লে দোকানদারদের প্রতিশোধ নেয়ার হুমকি দিচ্ছে।

স্থানীয় বাসিন্দা ও দোকানদাররা জানান, চুরি করলে চোরেরা এখন বলে, আপনি সমস্যায় পড়বেন বা আমরা ফিরে আসছি এবং আপনাকে দেখে নেবো।

রুজভেল্ট অ্যাভিনিউতে অবস্থিত ব্রাভো সুপারমার্কেটের ম্যানেজার জেসুস ডিয়াজ বলেন, এখন পরিস্থিতি আরো খারাপ হয়েছে। আগে যখন আমরা চোর ধরতাম, তারা বলত দুঃখিত আমি আর কখনও চুরি করব না। কিন্তু এখন তারা রেগে যায় এবং আমাদের ওপর হামলা চালাতে চায়। আমরা পুলিশকে ফোন করে বলি আমরা চোর ধরেছি, কিন্তু পুলিশ আসতে চায় না, তারা এ চোরদের গ্রেপ্তারও করতে চায় না।

এদিকে, ‘মার্কেট অফ সুইটহার্ট’ নামে পরিচিত এই বাজারটি এখন আরো বিকশিত হয়েছে এবং রাস্তাজুড়ে দ্বিগুণ যৌনকর্মী দেখা যাচ্ছে। এক গয়নার দোকানদার বলেন, অনেক সুন্দরী নারী আমার দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে থাকেন। আমি শুধু তাদের বলি, সরাসরি সামনে না দাঁড়িয়ে যেন দরজা বন্ধ না করে। আমি আর কী করতে পারি? আগে এখানটা খুব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ছিল, কিন্তু এখন খুব খারাপ অবস্থা।

জ্যাকসন হাইটসের রুজভেল্ট অ্যাভিনিউয়ের দোকানদাররা অভিযোগ করেন, অভিবাসীরা তাদের চুরি করা পণ্যগুলো ফুটপাতে ডিসকাউন্টে বিক্রি করছে। পাওয়ার টুল থেকে শুরু করে মাউথওয়াশ পর্যন্ত সবকিছুই চুরি করে ফুটপাতে বিক্রি হচ্ছে, আর দোকানদারেরা তাদের কিছুই বলতে পারছেন না।

এদিকে, যৌনকর্মীরা রাস্তা দখল করে ঘুরে বেড়াচ্ছে, গ্রাহকদের কাছে গিয়ে তাদের নিয়ে আশপাশের অ্যাপার্টমেন্টে তৈরি অস্থায়ী ব্রোথেলে প্রবেশ করছে। জুলাই মাসে দ্য পোস্টের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, দোকানদাররা সেখানে অসহায় অবস্থায় ছিলো। তাদেরকে এসময় ক্রুদ্ধ অবস্থায় দেখা গেছে।

অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন- পুলিশ কিছুই করে না, কিছুই না! এক মোবাইল ফোনের দোকানদার বলেন- ড্রাগস, পতিতাবৃত্তি, মদ সবকিছুর অবৈধ ব্যবসাই এখানে চলছে। একটি ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে আমাদের দিন অতিবাহিত করেতে হয়।

মি. ফার্মাসিয়া নামে একটি ফার্মেসির ফার্মাসিস্ট জেনি লিয়াল বলেন, স্থানীয়রা এখানে ফুটপাতের অবস্থা দেখে আমাদের ফার্মেসিতে আসতে চায় না। ফুটপাতে ৫০ জনেরও বেশি অবৈধ বিক্রেতা দখল করে বসে আছে। আমাদের বিক্রি মারাত্মকভাবে কমে গেছে।

তিনি বলেন- পুলিশ আসে, কিছুদিন পর আবার ফিরেও যায়। দুই সপ্তাহ আগে পুলিশ একবার এসে সবকিছু পরিষ্কার করে দিয়েছিলো কিন্তু আজকে ওরা আবার ফিরে এসেছে। গত ২ মাসে এ এলাকায় ভাসমান যৌনকর্মীর সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে। তারা এখন নিজেদের এখানকার কমিউনিটির অংশ হিসেবে ভাবতে শুরু করেছে।

স্থানীয় বাসিন্দা বিল বলেন, আমি আশা ছেড়ে দিয়েছি, এখানকার পরিস্থিতি এখন এমনই। এটার উন্নতির কোন লক্ষণ দেখছি না, আমাদের এখন এর সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে। আর কোন উপায় নেই আমাদের হাতে।

আমরা পুলিশ স্টেশনে গিয়েছিলাম, পুলিশও তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হচ্ছে। তারাও পুলিশকে পরোয়া করছে না।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected], [email protected]
সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top