বুধবার, ২রা এপ্রিল ২০২৫, ১৮ই চৈত্র ১৪৩১


১১৬ বছর বয়সে মারা গেলেন বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক ব্যক্তি


প্রকাশিত:
৪ জানুয়ারী ২০২৫ ১৮:২৯

আপডেট:
২ এপ্রিল ২০২৫ ০৪:১১

ফাইল ছবি

প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরুর ও টাইটানিক জাহাজ ডুবে যাওয়ার আগে জন্মগ্রহণকারী বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক ব্যক্তি জাপানি নারী টোমিকো ইতুকা মারা গেছেন। জাপানের হাইগো প্রিফেকচারের আশিয়া শহরের একটি নার্সিং হোমে মারা গেছেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ১১৬ বছর।

শনিবার এক বিবৃতিতে আশিয়া শহরের মেয়র বলেছেন, গত রোববার মারা গেছেন ইতুকা। তবে তার মৃত্যুর কোনও কারণ জানাননি তিনি। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বার্ধক্যজনিত জটিলতার কারণে শান্তিপূর্ণভাবে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছেন তিনি।

মেয়র রিয়োসুকে তাকাশিমা বলেছেন, ‘‘আমি আমার গভীর সমবেদনা জানাই। ইতুকার দীর্ঘ জীবন আমাদের সাহস এবং আশা দিয়ে গেছে। আমি আবারও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে চাই।’’

১১৭ বছর বয়সে স্পেনের মারিয়া ব্রানিয়াস মোরেরার মৃত্যুর পর ইতুকাকে গত বছরের সেপ্টেম্বরে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কর্তৃপক্ষ বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক জীবিত ব্যক্তি হিসাবে ঘোষণা দেয়।

জাপানের পশ্চিমাঞ্চলীয় ওসাকা শহরে ১৯০৮ সালের ২৩ মে জন্মগ্রহণ করেন ইতুকা। বাবা-মায়ের তিন সন্তানের একজন ছিলেন তিনি। সেখানে একটি পোশাকের দোকান চালাতেন তিনি। তার বেড়ে ওঠার সময় রাশিয়াকে যুদ্ধে পরাজিত করে সাম্রাজ্যবাদী শক্তি হিসাবে জাপানের উত্থান ঘটে এবং এশিয়ার মূল ভূখণ্ডে সম্প্রসারণ শুরু হয় দেশটির।

তার জন্মের বছরে মার্কিন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট থিওডোর রুজভেল্টের প্রশাসনের সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে জাপান। এর মাধ্যমে জাপানের কোরীয় উপদ্বীপের অধিগ্রহণকে স্বীকৃতি দেওয়ার বিনিময়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সংঘর্ষ এড়ায় দেশটি।

জীবদ্দশায় নিজ দেশকে এশীয় ঔপনিবেশিক সাম্রাজ্য হিসাবে আবির্ভূত হতে দেখেন তিনি। বিশ্বযুদ্ধে ১৯৪৫ সালে জাপানের পরাজয়ের পাশাপাশি ব্যবসা-বাণিজ্য আর শিল্পখাতের জায়ান্ট হয়ে ওঠা এবং শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসাবে আবারও নিজ দেশের উত্থান দেখে গেছেন ইতুকা।

বিশ্বযুদ্ধের আগে জাপানে বেড়ে ওঠা ইতুকা দেশটির টেক্সটাইল কোম্পানির মালিক কেনজি ইতুকাকে বিয়ে করেন। তার দুই মেয়ে ও দুই ছেলে ছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তিনি ব্যবসা পরিচালনার জন্য জাপানে থেকে যান। সেই সময় জাপানি উপনিবেশ কোরিয়ায় একটি কারখানার তদারকির জন্য কোরিয়ায় পাড়ি জমান তার স্বামী।

জেরোন্টোলজি রিসার্চ গ্রুপের বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক ব্যক্তিদের তথ্য-উপাত্তের রেকর্ড রাখে। প্রতিষ্ঠানটির মতে, টোমিকো ইতুকা একা হাতে জাপানি অফিস পরিচালনা এবং এই সময়ের মধ্যে সন্তানদেরও লালনপালন করেছিলেন।

বিয়ের ৫১ বছর পর ১৯৭৯ সালে তার স্বামী মারা যান। স্বামীর মৃত্যুর পর ওসাকার বাইরের আশিয়া শহরে চলে যান ইতুকা। সত্তরের কোটায় বয়স থাকাকালীন ইতুকা প্রায়ই পর্বতে আরোহণ করতেন। সেই সময় জাপানের ৩ হাজার ৬৭ মিটার (১০ হাজার ৬২ ফুট) উচ্চতার মাউন্ট ওনটেক পর্বতে দু’বার আরোহণ করেন তিনি।

জেরোন্টোলজি রিসার্চ গ্রুপ বলেছে, হাইকিং বুটের পরিবর্তে স্নিকার্স ব্যবহার করে পর্বতে আরোহণ করে নিজের গাইডকে অবাক করে দিয়েছিলেন ইতুকা। ১০০ বছর বয়সে তিনি লাঠি ব্যবহার না করেই পাথুরে পথ পাড়ি দিয়ে জাপানের আশিয়ার তীর্থস্থানে পৌঁছেছিলেন বলে জানিয়েছে গ্রুপটি।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected], [email protected]
সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top