জুলহাসের প্লেন তৈরির স্বপ্ন পূরণ করতে চায় ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স
 প্রকাশিত: 
 ৬ মার্চ ২০২৫ ১২:২১
 আপডেট:
 ৩১ অক্টোবর ২০২৫ ০৯:৫৬
 
                                মানিকগঞ্জের তরুণ উদ্ভাবক জুলহাস মোল্লার তৈরি উড়োজাহাজ ইতোমধ্যেই দেশজুড়ে আলোড়ন তুলেছে। এবার তার গবেষণা ও উন্নয়নের কাজে সহযোগিতার হাত বাড়াতে চায় ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স। জুলহাসকে বিমান তৈরির ব্যয়সহ সব লজিস্টিক ও টেকনিক্যাল সাপোর্ট দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে বেসরকারি এ এয়ারলাইন্সটি।
বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক-জনসংযোগ কামরুল ইসলাম বলেন, জুলহাসের গবেষণাকে এগিয়ে নিতে তার উড়োজাহাজ নির্মাণে প্রয়োজনীয় সব আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা দিতে চায় ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স। এছাড়া, গবেষণা বা প্রশিক্ষণের জন্য যদি তার বিদেশে যাওয়ার প্রয়োজন হয়, তাহলে ইউএস-বাংলা তাকে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করতে চায়।
বৃহস্পতিবার ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের উত্তরা কার্যালয়ে আসেন জুলহাস। এসময় তিনি ইউএস-বাংলার প্রস্তাব শোনেন। ইউএস-বাংলার সঙ্গে কীভাবে এক হয়ে কাজ করতে পারেন সেবিষয়ে পরিবারের সঙ্গে কথা বলবেন জুলহাস। এরপর সিদ্ধান্ত জানাবেন।
এর আগে, মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও জুলহাসের গবেষণাকে উৎসাহিত করতে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার কথা জানানো হয়েছিল।
জুলহাসের এই সফলতা দেশের তরুণ উদ্ভাবকদের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এখন অপেক্ষা তার গবেষণার আরও বড় পরিসরে বিস্তৃত হওয়ার।
জুলহাস মোল্লার বাড়ি মূলত দৌলতপুর উপজেলার বাঘুটিয়া এলাকায় হলেও নদী ভাঙনের কারণে তার পরিবার বর্তমানে শিবালয় উপজেলার ষাইটঘর তেওতা এলাকায় বসবাস করছে। তিনি ছয় ভাই ও দুই বোনের মধ্যে পঞ্চম। ২০১৪ সালে তিনি জিয়নপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন, তবে আর্থিক সংকটের কারণে পড়ালেখা চালিয়ে যেতে পারেননি। বর্তমানে ঢাকায় ইলেকট্রিক মিস্ত্রির কাজ করছেন ২৮ বছর বয়সী এই তরুণ।
জুলহাসের বাবা জলিল মোল্লা জানিয়েছেন, ‘ছোটবেলা থেকেই জুলহাস বিভিন্ন প্লাস্টিকের জিনিস কেটে কিছু একটা তৈরি করতে চাইতো। যখন তাকে জিজ্ঞেস করা হত, সে বলতো, একদিন তুমি দেখবে কী বানিয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘গত চার বছর ধরে সে বিমান তৈরি করে উড্ডয়নের চেষ্টা করছিল, তবে সফল হতে পারছিল না। কিন্তু এবার তার বিমানটি সফলভাবে উড্ডয়ন করতে সক্ষম হয়েছে। গত ৩ মার্চ যমুনার চরে তার বিমানটি প্রায় ৫০ ফুট উচ্চতায় উঠেছিল এবং পরদিন সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে বিমানটি উড়ানো হয়।’
এই তরুণ উদ্ভাবকের সাফল্য তার দক্ষতা এবং অনুপ্রেরণার একটি উজ্জ্বল উদাহরণ হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে, যা ভবিষ্যতে প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনে বাংলাদেশের প্রতিভাবান তরুণদের জন্য একটি নতুন দিকের দ্বার উন্মোচন করবে।

 
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                    
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: