‘দ্য ম্যান অব হোল’ খ্যাত সর্বশেষ আদিবাসীর মৃত্যু
 প্রকাশিত: 
 ২৯ আগস্ট ২০২২ ১৮:৩৭
 আপডেট:
 ৩১ অক্টোবর ২০২৫ ২২:০২
 
                                ব্রাজিলের একটি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর ‘দ্য ম্যান অব হোল’ নামে পরিচিতি সর্বশেষ জীবিত সদস্য মারা গেছেন। শনিবার (২৭ আগস্ট) ব্রাজিল সরকারের সংস্থা ‘ফুনাই’এ তথ্য জানিয়েছে। এ জনগোষ্ঠীর কোনো মানুষের সঙ্গে পৃথিবীর কোনো মানুষের কখনো কোনো ধরনের যোগাযোগই হয়নি।
অলাভজনক সংস্থা সারভাইভাল ইন্টারন্যাশনালের মতে, রন্ডোনিয়া প্রদেশের ব্রাজিলিয়ান আমাজনের গভীরে তানারু আদিবাসী ভূমিতে গত ২৬ বছর ধরে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় ছিলেন এই ‘ম্যান অব দ্য হোল’। তার এই নামের কারণ, তিনি বন্যপ্রাণী শিকারের জন্য এক বিশেষ কায়দায় গর্ত খুঁড়ে রাখতেন।
যোগাযোগের সমস্ত প্রচেষ্টা তিনি সব সময় প্রতিহত করে গেছেন। তারপরও কর্তৃপক্ষ তাকে দূর থেকে পর্যবেক্ষণ করতেন এবং তার দরকার হতে পারে এমন জিনিস, যেমন- দিয়াশলাই, কুঠার, খাদ্যশস্যের বীজ রেখে আসা হতো।
সারভাইভাল ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছে, তার গোত্রের বাকি মানুষেরা ১৯৭০-এর দশক থেকে কয়েক দফা আক্রমণে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। প্রধানত গবাদি পশুপালক এবং ভূমি দখলকারীরা এসব হামলা চালান।
 সারভাইভাল ইন্টারন্যাশনাল আরও জানান, তার জীবনযাত্রার কিছু চিহ্ন পাওয়া গেছে। তিনি ভুট্টা এবং পেঁপেসহ কিছু শস্য রোপণ করেছিলেন এবং খড়, কাঠ ও গাছের পাতা দিয়ে ঘর তৈরি করেছিলেন।
সারভাইভাল ইন্টারন্যাশনাল আরও জানান, তার জীবনযাত্রার কিছু চিহ্ন পাওয়া গেছে। তিনি ভুট্টা এবং পেঁপেসহ কিছু শস্য রোপণ করেছিলেন এবং খড়, কাঠ ও গাছের পাতা দিয়ে ঘর তৈরি করেছিলেন।
সংস্থাটির গবেষণা এবং অ্যাডভোকেসি ডিরেক্টর ফিওনা ওয়াটসন জানান, এই ব্যক্তির নাম কেউ জানতেন না, এমনকি তার গোত্র সম্পর্কেও খুব বেশি কিছু জানা নেই কারও। এখন তার মৃত্যুর সঙ্গে তার গোত্রের ওপর চালানো গণহত্যা সম্পূর্ণ হলো।
মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) ফুনাইয়ের কর্মকর্তারা একটি কুঁড়েঘরে ওই ব্যক্তির মরদেহটি ঝুপড়ির মধ্যে পড়ে থাকতে দেখেন। হামলা বা অন্য কারও উপস্থিতির কোনো আলামত সেখানে পাওয়া যায়নি।
ফুনাই জানান, তার স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। তবে ফেডারেল পুলিশ তার মরদেহের ফরেনসিক পরীক্ষা করবে। ২০১৮ সালে ফুনাই ‘ম্যান অব দ্য হোলের’ সর্বশেষ ভিডিওটি প্রকাশ করেছিল, যেখানে তাকে অর্ধনগ্ন অবস্থায় হাতে কুঠার নিয়ে গাছ কাটতে দেখা যায়।
ব্রাজিলে ৩০৫টিরও বেশি আদিবাসী জনগোষ্ঠী আছে যাদের সম্পর্কে মূলধারার সমাজ জানে। তারা ২৭৪টি ভিন্ন ভিন্ন ভাষায় কথা বলে। অন্যদিকে বহির্বিশ্ব থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন এবং যোগাযোগহীন উপজাতির সংখ্যা ৫০ এরও বেশি। সারা পৃথিবীতে এমন শতাধিক জনগোষ্ঠী আছে। তার মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি বাস করে আমাজন এলাকায়।
খবর : সিএনএন ও বিবিসি।

 
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                    
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: