বুধবার, ২৬শে জুন ২০২৪, ১১ই আষাঢ় ১৪৩১

চায়ের রাজ্যে আনারসের ব্যাপক ফলন, কোটি টাকা বিক্রির সম্ভাবনা


প্রকাশিত:
৮ জুন ২০২৪ ১৩:৩৮

আপডেট:
৮ জুন ২০২৪ ১৪:০৮

ছবি- সংগৃহীত

চায়ের রাজ্যখ্যাত মৌলভীবাজারে চায়ের পাশাপাশি রসে টইটুম্বুর সুস্বাদু আনারসের চাহিদা রয়েছে দেশজুড়ে। জেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় সারা বছরই কমবেশি এই আনারস পৌঁছে যায়। দেশজোড়া খ্যাতির সেই আনারসের এবার ফলন ভালো হয়েছে।

মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানায়, মে থেকে জুন পর্যন্ত আনারসের ভরা মৌসুম। এ বছর জেলার প্রায় ২ হাজার ১১০ হেক্টর জমিতে আনারসের চাষ হয়েছে। যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় ২০ হাজার ৬০০ টন।

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল ছাড়াও সদর উপজেলার গিয়াসনগর ইউনিয়নের আকবরপুরের পাহাড়ি টিলায় আনারস বাগান গড়ে উঠছে চায়ের মতই। আর এ বাগান এখানে গড়ে তুলেছেন আবদুল মান্নান।

সম্প্রতি আকবরপুরে আবদুল মান্নানের বাগানে গিয়ে দেখা গেছে, টিলাজুড়ে দেশি বিদেশি নানান জাতের গাছ গাছালিতে পরিপূর্ণ তার বাগান। টিলার বুকজুড়ে সাজানো-গোছানো অপরূপ দৃশ্যের বিশাল জায়গাজুড়ে রয়েছে আনারস বাগান। কাঁটাযুক্ত গাঢ় সবুজের পাতায় পাতায় ডানা মেলেছে শত শত কাঁচা-পাকা আনারস।

আবদুল মান্নান জানান, গত মাসের ১৫ তারিখ থেকে আনারস বিক্রি শুরু হয়েছে। এখন পর্যন্ত প্রায় ৭ হাজার পিস পাইকারি ৩২ থেকে ৩৫ টাকা বিক্রি করেছেন, আরও ৩ হাজার পিস আনারস রয়েছে।

এদিকে জেলার বিভিন্ন বাগান মালিক ও ব্যবসায়ী সূত্রে জানা যায়, গরমের কারণে রসালো ফল আনারসের ব্যাপক চাহিদা থাকায় গত এপ্রিল থেকে এ পর্যন্ত শ্রীমঙ্গলের আড়তজুড়ে প্রায় কোটি টাকার আনারস কেনাবেচা হয়েছে। বাগান মালিক ও আড়তদারদের সঙ্গে আলাপকালে তারা বলেন, বাজারে প্রতিদিন কয়েক লাখ টাকার আনারস বেচাকেনা হয়। সাইজ অনুযায়ী প্রতি পিস বড় ৫০-৪০ টাকা, মাঝারি ৩০-২০ টাকা, ছোট সাইজের আনারস ১৫-১০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়ে থাকে।

শ্রীমঙ্গলের এলাকার চাষি বিল্লাল মিয়া বলেন, যখন আনারস একসঙ্গে পাকতে শুরু করে তখন সংরক্ষণের অভাবে অনেক আনারস পঁচে নষ্ট হয়ে যায়।

আরেক চাষি মো. ইউনুস খান বলেন, এ মৌসুমে আনারসের ভালো ফলন হয়েছে। বড় আনারস প্রতি পিস ৫০ টাকায় এবং ছোট আনারস ২০ টাকায় বিক্রি করেছি। ন্যায্য দামে আনারস বিক্রি করে লাভবান হয়েছি।

চাষি ইরেশ পাল জানান, এবার আনারসের ফলন ভালো হওয়াতে আমরা চাষিরা অনেক খুশি।

এদিকে চলতি মৌসুমে চাষিরা আনারসের মূল্য ভালো পেয়েছেন। বর্তমানে বাগানগুলোতে একসঙ্গে আনারস পরিপক্ব হওয়ায় অধিকাংশ বাগান মালিকরা আনারস সংগ্রহ করে আড়তদারের কাছে নিয়ে যান। ওই সময়ে প্রতিদিন আড়তে কয়েক লাখ আনারস ওঠে।

শ্রীমঙ্গলের আড়ত ব্যবসায়ী মো. আবু তাহের জানান, আমাদের আড়তে কম হলেও প্রায় কোটি টাকার আনারস কেনাবেচা হয়েছে। এতে আড়তদাররা যেমন খুশি, তেমনি চাষিরাও ভালো দাম পেয়ে লাভবান। মৌসুমে আরও কোটি টাকার বেচাকেনা হতে পারে বলে আশা করছেন বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীরা।

মৌলভীবাজারের আড়তদার মো. জসিম উদ্দিন বলেন, আনারস সংরক্ষণের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় বাগান থেকে আনারস সংগ্রহের এক দিনের মধ্যে চাষিরা বিক্রি করে দিতে হয়।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক সামসুদ্দিন আহমদ বলেন, মে থেকে জুন পর্যন্ত আনারসের ভরা মৌসুম। এ বছর জেলার প্রায় ২ হাজার ১১০ হেক্টর জমিতে আনারসের চাষ হয়েছে। আনারসের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য চাষিদের বিভিন্ন ধরনের সহযোগিতা ও প্রশিক্ষণ কৃষি অফিস থেকে দেওয়া হয়েছে বলেও তিনি জানান।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected], [email protected]
সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top