শুক্রবার, ২০শে সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ই আশ্বিন ১৪৩১


স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫-৭ ফুট পানি বৃদ্ধি

বিধ্বস্ত বেড়িবাঁধ দিয়ে পানি ঢুকে পটুয়াখালীতে ২৪ গ্রাম প্লাবিত


প্রকাশিত:
২৫ মে ২০২১ ২৩:৪৩

আপডেট:
২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৮:২৩

ছবি: সংগৃহীত

ঘূর্নিঝড় ইয়াসের প্রভাব পটুয়াখালীর জেলার নিম্নাঞ্চলে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে পানি অতিরিক্ত বৃদ্ধি পেয়ে উপকূলের বিধ্বস্ত বেড়িবাঁধ দিয়ে লোকালয়ে প্রবেশ করতে শুরু করেছে। ইতোমধ্যে পানিবন্দী হয়ে পরেছে জেলার কমপক্ষে ২৪ টি গ্রামের ১৮ হাজার মানুষ।

জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের সূত্র মথে আজ মঙ্গলবার (২৫ মে) দুপূরেই ঘূর্নিঝড়ের প্রভাবে জোয়ারের পানি বিপদসীমার ২৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।

সকাল থেকে থেমে দমকা হাওয়া সহ গুড়ি ওমাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাত হচ্ছে। ঘূর্নিঝড় ইয়াসের প্রভাবে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার লালুয়ায় বিধ্বস্ত বেড়িবাধ দিয়ে স্বাভাবিকের চেয়ে ৩ থেকে ৪ ফুট উচ্চ জোয়ারের পানি প্রবেশ করে ১১ টি গ্রাম পুরোপুরি প্লাবিত হয়েছে। এতে পানি বন্দী হয়ে পরেছে ওইসব গ্রামের প্রায় ৮ হাজার মানুষ। রাঙ্গাবালী উপজেলার ১৩ টি গ্রামে ১০ কিলোমিটার বিধ্বস্ত বেড়িবাঁধ দিয়ে জোয়ারের পানি ঢুকে পরে। এছাড়াও বেড়িবাঁধের বাইরের কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়। পানিবন্দী হয়ে পরে কমপক্ষে ১০ হাজার মানুষ।

এদিকে রাঙ্গাবালী উপজেলার চরমোন্তাজ ইউনিয়নের চরআন্ডা, নয়াচর, উত্তর চরমোন্তাজ, চরবেষ্টিন, মোল্লা গ্রাম, ছোটবাইশদিয়া ইউনিয়নের চরনজির, কোড়ালীয়া, কাউখালীচর, চালিতাবুনিয়া ইউনিয়নের মরাজাঙ্গী, চিনাবুনিয়া, বিবির হাওলা, গোলবুনিয়া, চরলতা প্লাবিত হয়ে শত শত মানুষ পানি বন্দী হয়ে পরেছেন। ঘূর্ণিঝর আঘাত হানার আগেই এসব এলাকা তলিয়ে যাওয়ায় চরম আতঙ্কে রয়েছেন উপকূলবাসী। ধরণা করা হচ্ছে বিগত দিনের রেকর্ড অতিক্রম করবে এবারের ঘূর্ণিঝড়।

কলাপাড়া উপজেলার লালুয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো.শওকত হোসেন বিশ্বাস জানান, কলাপাড়ার নাওয়াপাড়া থেকে-চাড়িপাড়া পর্যন্ত ৭কিলোমিটার বেড়ীবাধ না থাকায় কলাপাড়ার লালুয়ায় বিধ্বস্ত বেড়িবাধ দিয়ে স্বাভাবিকের চেয়ে ৩ থেকে ৪ ফুট উচ্চ জোয়ারের পানি প্রবেশ করে ১১ টি গ্রাম পুরোপুরি প্লাবিত হয়েছে।।পুকুর ,ঘের তলিয়ে গেছে মানুষ ঘর-বাড়ি চেড়ে রাস্তায় দাড়িয়ে আছে। সাইক্লোন সেল্টারে তেমন কেউ যায়নি।ঘূর্নিঝড় আম্পানের চেয়ে অলরেডী পানি বেশী হয়েছে।সিডরের পর থেকে এ ভেড়ীবাধটি অরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে। পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ ঐ এলাকা অধিগ্রহন করায় ,পানি উন্নয়ন বোর্ড এখন আর কাজ করতে পারছে না।

রাঙ্গাবালী উপজেলার চালিতাবুনিয়া ইউপি চেয়ারম্যান জাহিদুর রহমান জানান, চালিতাবুনিয়া একটি ভাঙন কবলিত এলাকা। এখানে বেড়িবাঁধ বলতে কিছু নেই। অনেক আগেই বেড়িবাঁধ বিধ্বস্ত হয়েছে। কিন্তু নতুন করে বেড়িবাঁধ না করায় জোয়ারের পানিতে একটি গ্রাম বাদে সবগুলো গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। মানুষ পানি বন্ধী হয়ে আছেন।

চরমোন্তাজ ইউপি চেয়ারম্যান হানিফ মিয়া জানান, চরআন্ডার বেড়িবাধটি দীর্ঘদিন অরক্ষিত পরে আছে। জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে একটু বেশি হলেই পানি প্রবেশ করে লোকালয় তলিয়ে যায়। মানুষ পানিবন্ধী হয়ে থাকে। জোয়ারের পানির অতিরিক্ত চাপে চরমোন্তাজ ইউনিয়নের চরআন্ডা ও দক্ষিণ চরমোন্তাজ বেড়িবাঁধ দিয়ে পানি প্রবেশ করে ছয়টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

রাঙ্গাবালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.মাশফাকুর রহমান জানান, অতিরিক্ত জোয়ারের চাপে বেড়িবাঁধ দিয়ে পানি লোকালয় প্রবেশছে। বড় বাইশদিয়ার জোয়ারের তোড়ে কমপক্ষে ৩ টি স্থানে কমপক্ষে ৮-১০ ফুট এলাকার বেড়ীবাধ ইতোমধ্যে ছুটে গেছে,এ ছাড়াও চালিতাবুনিয়া,ওচরাান্ডায় বেড়ীবাধ একাধিক এলাকায় ছুটে গেছে। ইতোমধ্যে কমপক্ষে ৮-১০ হাজার মানুষ পানিতে আটকা পরে আছে। এছাড়াও বেড়িবাঁধের বাহিরের গ্রামের মানুষও পানিবন্দী হয়ে আছেন। তাদেরকে উদ্ধার করে আশ্রয়কেন্দ্রে আনার ব্যাবস্থা করা হচ্ছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড পটুয়াখালীর নির্বাহী প্রকৌশলী মো: হালিম সালেহীন জানান,পটুয়াখালীর ৪১ কিলোমিটার ভেড়ীবাধ ঝুকিপূর্ন অবস্থায় রয়েছে।, এদের মধ্যে নিজামপুর, লালুয়া,চালিতা বুনিয়া,চরআন্ডা, লতারচর,চর মোন্তাজ। এই ৪১ কিলোমিটারের মধ্যে চরমোন্তাজ,চালিতাবুনিয়,চরআন্ডার প্রায় ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘদিন পর্যন্ত সম্পূর্ন খোলা অবস্থায় রয়েছে,এই এলাকাগুলি সবচেয়ে ঝুকিপূর্ন।লালুয়া পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ অধিগ্রহন করছে।গলাচিপার আলাইপুর লঞ্চঘাট এলাকায় ভেড়ীবাধ অতিক্রম করে পানিভিতরে প্রবেশ করেছে।চর মোন্তাজে পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছে জনগন।স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে বিপদসীমার ২৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়েছে। আজ দুপূরের জোয়ারে ,রাতের জোয়ারে পানি বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এরিপোর্ট লেখার সময় বিকেল ৫ টায় তিনি সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ নিজামপুর এলাকায় উপস্থিত থেকে জিওব্যাগ দিয়ে জরুরুী ভিক্তিতে মেরামতের কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলেন ।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected], [email protected]
সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top