বারবার শুকিয়ে যাচ্ছে মুখ, নেপথ্যে কোন কারণ
প্রকাশিত:
২ জুলাই ২০২৫ ১৬:৩৫
আপডেট:
৩ জুলাই ২০২৫ ০৭:০১

কিছু খাওয়ার পর মুখ শুকিয়ে যাওয়ার সমস্যা রয়েছে অনেকেরই। বারবার মুখ শুকিয়ে যায়। যতবারই পানি পান করুন না কেন, তাতে সমস্যার সমাধান হয় না। পানি কিংবা তরল খাবার খাওয়ার পরেই মুখ শুকিয়ে যেতে থাকে। সেই সঙ্গে গলাও শুকিয়ে যায়। তবে স্বর বদলও আসতে পারে। আবার মুখের ভেতর দুর্গন্ধও হয়। এ অবস্থায় আপনার করণীয়?
আর যাই হোক, মুখ শুকিয়ে যাওয়ার সমস্যা খুব মারাত্মক কোনো বিষয় নয়। যদিও বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে তা জটিল রোগের পূর্বলক্ষণও হতে পারে। এ সমস্যাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় বলা হয়, ‘ড্রাই মাউথ’ কিংবা ‘জেরোস্টোমিয়া’। মুখের ভেতরে যে লালাগ্রন্থি থাকে, তা যদি পর্যাপ্ত পরিমাণে লালারস তৈরি করতে না পারে, তখন জেরোস্টোমিয়া হয়। আর লালাগ্রন্থি কেন লালারস তৈরি করতে পারছে না, তার কিছু কারণ আছে।
এবার জেনে নেওয়া যাক— কী সেই কারণ।
আপনার শরীরে যদি পানির ঘাটতি হলে জেরোস্টোমিয়া হতে পারে। ভাইরাল জ্বর, ডায়েরিয়ার সমস্যাতেও শরীরে পানির ঘাটতি হয়। তখন মুখের ভেতরে ফুস্কুড়ি ও জিভ শুকিয়ে যাওয়ার সমস্যা বেশি হয়।
এ ছাড়া ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় জেরোস্টোমিয়া হতে পারে। অ্যালার্জির জন্য যেসব অ্যান্টিহিস্টামিন জাতীয় ওষুধ আছে, যেমন— সর্দি-কাশির ওষুধ, অবসাদ কমানোর অ্যান্টিডিপ্রেস্যান্ট জাতীয় ওষুধ অথবা রক্তচাপ কমানোর ডাইইউরেটিকস জাতীয় ওষুধ বেশি খেলে এ সমস্যা হতে পারে।
আর ডায়াবেটিস থাকলে ড্রাই মাউথের সমস্যা বেশি হয়। রক্তে শর্করা বাড়তে শুরু করলে লালাগ্রন্থি থেকে লালারসের ক্ষরণ কমতে থাকে। বারবার মুখ শুকিয়ে যাওয়ার সমস্যা হলে, প্রয়োজনে একবার সুগার টেস্ট করিয়ে নেওয়া ভালো।
এ ছাড়া আরও কিছু রোগ, যেমন—পার্কিনসন্স ডিজিজ, অ্যালঝাইমার্সেও ড্রাই মাউথের সমস্যার বড় কারণ হতে পারে। চিকিৎসকরা বলেন, ব্রেনস্ট্রোক হওয়ার আগে অনেকের মুখ-জিভ শুকিয়ে যেতে পারে।
আর স্লিপ অ্যাপনিয়া থাকলে ঘুমের মধ্যে নাক বন্ধ হয়ে যায়, তখন মুখ দিয়ে শ্বাস নিতে হয়। সে ক্ষেত্রেও জিভ শুকিয়ে যায়। আবার অতিরিক্ত ধূমপান বা তামাকের ব্যবহার করলে, তার থেকেও জেরোস্টোমিয়া হতে পারে।
যদি সারাক্ষণই মুখ শুকিয়ে থাকে, তবে ঠোঁটের কোনায় ক্ষত, ঠোঁট ফেটে যাওয়া কিংবা জিভে র্যাশ হওয়ার মতো লক্ষণ দেখা দেয়, তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। খাওয়ার ওষুধ দিয়ে এ রোগ সারানোর চেষ্টা করেন চিকিৎসকরা। এতেও সমস্যার সমাধান না হলে তখন কৃত্রিম লালার ব্যবহার করা হয়। লালাগ্রন্থি প্রতিস্থাপনের চিকিৎসাও হয়। আবার বিভিন্ন রকম স্প্রে, জেল দিয়ে লালার ক্ষরণ বাড়ানোর চেষ্টাও হয়। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ খাওয়া কিংবা মাউথ স্প্রে ব্যবহার করা ঠিক হবে না।
ডিএম /সীমা
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: