রবিবার, ৭ই জুলাই ২০২৪, ২৩শে আষাঢ় ১৪৩১


যমুনার পানি বিপৎসীমা ছুঁইছুঁই, বিলীন হচ্ছে নদীপাড়ের বসতভিটা


প্রকাশিত:
৪ জুলাই ২০২৪ ১৭:৪৭

আপডেট:
৭ জুলাই ২০২৪ ১৩:৪৬

ছবি- সংগৃহীত

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও ভারি বর্ষণে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে যমুনা নদীসহ জেলার সব নদ-নদীর পানি বাড়ছে। ফলে গত ২৪ ঘণ্টায় ঝিনাই নদীর পানি কালিহাতীর জোকারচর পয়েন্টে ৪৪ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৩৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এছাড়া যমুনা নদীর পানি বিপৎসীমা ছুঁইছুঁই। ১৮ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেলে এ নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করবে। টাঙ্গাইল জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

টাঙ্গাইল জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বুধবার সকাল ৯টা থেকে বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) সকাল ৯টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ঝিনাই নদীর পানি জোকারচর পয়েন্টে ৪৪ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৩৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদীর পানি পোড়াবাড়ী পয়েন্টে ৪৭ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার শূন্য (০) দশমিক ১৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

টাঙ্গাইল জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী নূরুল আমিন জানান—গত কয়েকদিন ধরে উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢল ও ভারি বর্ষণে টাঙ্গাইলের যমুনা নদীসহ জেলার অন্যান্য সকল নদ-নদীর পানি ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পেয়েছে। তারমধ্যে ঝিনাই নদীর পানি জোকারচর পয়েন্টে ৪৪ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৩৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ভারি বর্ষণ অব্যাহত থাকলে যমুনার পানি বিপদসামী অতিক্রম করবে।

এদিকে, যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধির কারণে ভূঞাপুর উপজেলার গোবিন্দাসী, নিকরাইল, গাবসারা ও অর্জুনা ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। তারমধ্যে উপজেলার ভালকুটিয়া, চিতুলিয়াপাড়া, কষ্টাপাড়া, কোনাবাড়ি, পাটিতাপাড়া, বাসুদেবকোল, ভদ্রশিমুল এলাকাসহ আরও বেশ কিছু এলাকার ঘরবাড়ি, বসতভিটা ও ফসলি জমি ভেঙে নদী গর্ভে বিলীন হচ্ছে। এরমধ্যে কিছু স্থানে জিওব্যাগ ফেলা হচ্ছে।

ভূঞাপুর উপজেলার গাবসারা ইউনিয়নের জয়পুর ও কালিপুর গ্রামের আব্দুস ছালাম, সবুর আলীসহ একাধিক কৃষক বলেন, অতি বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের পানিতে বেশ কিছুদিন ধরে যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এরফলে চরাঞ্চলের অপরিপক্ক তিল, কাউন, পাটসহ অন্যান্য ফসল পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে। এখন যেভাবে পানি বাড়ছে এভাবে বাড়লে কয়েক দিনের মধ্যে পানি ঘরে প্রবেশ করবে। ইতোমধ্যে চরাঞ্চলে রোপণ করা বিভিন্ন শাক-সবজি তলিয়ে গেছে।

নিকরাইল ইউনিয়নের মাটিকাটা গ্রামের বৃদ্ধ সাজেদা বেগম বলেন- গত বন্যায় যে টুকু সম্বল ছিল সেটিও চলতি বন্যায় ভাঙনের মুখে পড়েছে। ভাঙনের আতঙ্কে আমাদের নদীপাড়ের মানুষের এখন নিঘুম রাত কাটাতে হচ্ছে। ইতোমধ্যে অনেক পরিবার রাস্তার পাড়ে বসবাস করছে। বাড়ির পাশে শুকনো মৌসুমে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের কারণে আমাদের বসতভিটা আজ নদী গর্ভে চলে যাচ্ছে। দ্রুত জিওব্যাগ ফেলার দাবি জানান

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মামুনুর রশীদ বলেন, যমুনা নদীতে কয়েক সপ্তাহ আগে পানি বৃদ্ধির কারণে উপজেলার চিতুলিয়াপাড়া, মাটিকাটা ও পাটিতাপাড়াসহ আরও কিছু এলাকায় ভাঙনের খবর জানতে পারি এবং পরবর্তীতে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানানোসহ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়। ইতোমধ্যে ভাঙন কবলিত এলাকা বিভিন্ন স্থানে জিওব্যাগ ডাম্পিং করা হচ্ছে। ভাঙনরোধে এই কার্যক্রম চলমান থাকবে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected], [email protected]
সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top