বৃহঃস্পতিবার, ৩রা এপ্রিল ২০২৫, ১৯শে চৈত্র ১৪৩১


সাবেক এমপির বাসা দখল করে পাগলের আশ্রম বানালেন সমন্বয়ক


প্রকাশিত:
৮ মার্চ ২০২৫ ১৭:১০

আপডেট:
৩ এপ্রিল ২০২৫ ০৫:৪৪

ছবি সংগৃহীত

টাঙ্গাইলে ছাত্র প্রতিনিধির পরিচয় ব্যবহার করে সাবেক এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জোয়াহেরুল ইসলাম জোয়াহেরের টাঙ্গাইল শহরের ছোটকালীবাড়িস্থ ছয়তলা বিশিষ্ট ভবন জবরদখল করেছেন সমন্বয়ক মারইয়াম মুকাদ্দাস মিস্টি। শনিবার (৮ মার্চ) সকালে তিনি বাসার তালা ভেঙে ২০ জন পাগল নিয়ে ভবনে প্রবেশ করেন।

পূর্ব ঘোষণা ছাড়া আওয়ামী লীগ নেতার ভবন জবর দখল করা প্রসঙ্গে ছাত্র সমন্বয়ক মারইয়াম মুকাদ্দাস মিস্টি জানান, ফেসবুকে পূর্বঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। আওয়ামী লীগের সকল নেতাদের বাড়িতে পাগলদের জন্য ‘আশ্রম’ গড়ে তোলা হবে। তারই অংশ হিসেবে শনিবার সকালে তালা ভেঙে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জোয়াহেরুল ইসলামের ছয়তলা ভবনে প্রবেশ করা হয়েছে। ওই বাসায় আল মুকাদ্দাস ফাউন্ডেশনের ২০ জন পাগল রাখা হয়েছে বলে জানান তিনি।

তিনি জানান, এটাকে জবরদখল বলা যাবে না। কারণ কোনো ব্যক্তি বিশেষের ব্যবহারের জন্য ভবনটি নেওয়া হয়নি। সমাজের অবহেলিত পাগলদের জন্য আশ্রম করা হচ্ছে। এটাকে অন্য সমন্বয়করা তাকে সমর্থন দিয়েছেন বলে জানান তিনি।

তিনি আরও জানান, জোয়াহেরুল ইসলামের পক্ষ থেকে একজন লোক এসে জানায় ‘বাসা না ভেঙে সেখানে যেন আশ্রম করা হয়’। তার প্রস্তাব অনুযায়ী পাগলদের আশ্রমই তৈরি করা হয়েছে। তবে এ কথা কে বলেছে তার নাম-পরিচয় বলতে পারেননি সমন্বয়ক মারইয়াম মুকাদ্দাস মিস্টি। আবাসিক এলাকায় পাগলের আশ্রম তৈরি করায় স্থানীয়রা অস্বস্তি প্রকাশ করলেও তারা প্রকাশ্যে প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছে না।

এক প্রশ্নের জবাবে সমন্বয়ক মারইয়াম মুকাদ্দাস মিস্টি জানান, আবাসিক এলাকার মানুষের জীবন-যাত্রায় যদি পাগলদের কোনো প্রভাব পড়ে তাহলে যারা বেশি পাগল তাদেরকে অন্যকোনো আওয়ামী লীগের নেতার বাসায় স্থানান্তর করে কম পাগলদের এখানে রাখা হবে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের টাঙ্গাইল জেলা শাখার আহবায়ক আল আমিন জানান, মারইয়াম মুকাদ্দাস মিস্টি নামক একজন নারী ছাত্র প্রতিনিধি তথা সমন্বয়ক পরিচয়ে জনৈক আ.লীগ নেতার বাসায় পাগলের আশ্রম করেছেন বলে তিনি শুনেছেন। তারা এটাকে কোনোভাবেই সমর্থন করেন না। তাছাড়া মারইয়াম মুকাদ্দাস মিস্টি বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে ভূমিকা রেখেছিল- তাই বলে তিনি বিশেষ সুবিধা নেবেন এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এটা ফ্যাসিস্ট বিরোধী আন্দোলনের মূল স্পিরিটের সঙ্গে যায় না। বর্তমানে কেউ সমন্বয়ক পরিচয় দিতে পারবে না। কারো বাড়ি দখল করার কোনো কার্যক্রম তারা হাতে নেননি। যে কেউ এরকম কাজ করলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

টাঙ্গাইল সদর থানা পুলিশের ওসি তানভীর আহম্মেদ জানান, বিষয়টি তিনি লোকমুখে শুনেছেন। যেহেতু ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী শিক্ষার্থীরা নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করে ফেলেছেন-সেখানে ছাত্র প্রতিনিধি বা সমন্বয়ক বলতে আর কিছু থাকে বলে তার মনে হয় না। এর চেয়ে বেশি কিছু তিনি বলতে রাজি হননি।

প্রসঙ্গত, গত ৬ ফেব্রুয়ারি বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা সাবেক এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জোয়াহেরুল ইসলাম জোয়াহেরের বাসায় ঢুকে লুটপাট ও ভাঙচুর চালায়। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে সাবেক এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জোয়াহেরুল ইসলাম স্বপরিবারে আত্মগোপনে রয়েছেন।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected], [email protected]
সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top