বৃহঃস্পতিবার, ৬ই নভেম্বর ২০২৫, ২২শে কার্তিক ১৪৩২


ডিসি কার্যালয়ের সাবেক উমেদারের বিরুদ্ধে ২৪৫ কোটি টাকার মামলা


প্রকাশিত:
৬ নভেম্বর ২০২৫ ১৪:৫৩

আপডেট:
৬ নভেম্বর ২০২৫ ১৬:৩২

ফাইল ছবি

বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সাবেক উমেদার আব্দুল মান্নান তালুকদারসহ আরও ৪ জনের বিরুদ্ধে ২৩৫ কোটি টাকা মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগে মামলা করেছে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট।

বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

জসীম উদ্দিন খান বলেন, মামলার অন্য অভিযুক্তরা মো. আনিসুর রহমান (৬২), সালেহা বেগম ও জেসমিন নাহার। জেসমিন নাহার সাবেক উমেদার আব্দুল মান্নান তালুকদার এর স্ত্রী। নিউ বসুন্ধরা রিয়েল এস্টেট লিমিটেড নামীয় প্রতিষ্ঠানের জন্য উচ্চ মুনাফা প্রদানের প্রলোভন দেখিয়ে ১৯ হাজার ৯৬৭ জন সাধারণ বিনিয়োগকারীদের নিকট হতে প্রতারণার মাধ্যমে ২৪৫ কোটি ২৩ লক্ষ ৩৩ হাজার টাকা আমানত গ্রহণ করে অন্যত্র স্থানান্তর সংক্রান্ত মানিলন্ডারিং অনুসন্ধানের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া যাওয়া।

অনুসন্ধানে জানা যায়, বাগেরহাট জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সাবেক উমেদার আব্দুল মান্নান তালুকদার ১৯৮৪ সাল হতে ২০১০ সাল পর্যন্ত এমএলএসএস পদে চাকরি করেন। ২০১০ সালে স্বেচ্ছায় অবসরে যান। চাকরিরত অবস্থাতেই জমি কেনাবেচার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। ডিসি অফিসে চাকুরির সুবাদে প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের ব্যক্তিদের সঙ্গে তার সখ্যতা গড়ে উঠে। জায়গা জমির বিষয়ে তার অগাধ জ্ঞান ছিল।

তিনি বলেন, অবসর গ্রহণের পর তিনি মানুষ মানুষের জন্য এই স্লোগানে নিউ বসুন্ধরা রিয়েল এস্টেট নামে একটি আর্থিক লেনদেন প্রতিষ্ঠান চালু করেন।

প্রতিষ্ঠানটি জয়েন্ট স্টক কোম্পানি অ্যান্ড ফার্মস এর ঢাকা কার্যালয় হতে নিবন্ধিত হয়। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবসার ধরণ ছিল রিয়েল এস্টেট ব্যবসা ও জমি কেনা-বেচা এবং এর মালিকানা স্বত্ব ছিল মাত্র কয়েকজন ব্যক্তিকেন্দ্রিক। তবে উক্ত প্রতিষ্ঠানের ৯৫ শতাংশ শেয়ারের মালিক আব্দুল মান্নান তালুকদার ও তার পরিবার এবং মাত্র ৫ শতাংশ শেয়ারের মালিক মামলায় ২নং অভিযুক্ত মো. আনিসুর রহমান।

নিউ বসুন্ধরা রিয়েল এস্টেট প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগের মাধ্যমে আমানতকারীদের অর্থের নিশ্চয়তাসহ সুদমুক্ত, হালাল ব্যবসার মাধ্যমে লাভবান হওয়ার বিষয়ে প্রচারণা চালানো হয়। এ প্রচারণার আলোকে নিউ বসুন্ধরা রিয়েল এস্টেট লি. এ বাংলাদেশের সকল নাগরিকদের ৫ হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ যেকোন পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করার মাধ্যমে ৪/৫ বছরে বিনিয়োগ করা অর্থ দ্বিগুণ করার নিশ্চয়তা দেওয়া হয়।

সিআইডির মুখপাত্র বলেন, কোম্পানির মেমোরেন্ডাম অ্যান্ড আর্টিকেল অব এ্যাসোসিয়েশন অনুযায়ী এর শর্তানুযায়ী শেয়ার বিক্রয়ের মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে মূলধন সংগ্রহ করার কথা। কিন্তু নিউ বসুন্ধরা রিয়েল এস্টেট লিমিটেড নামীয় প্রতিষ্ঠানটি পুঁজিবাজার থেকে মূলধন সংগ্রহ না করে উচ্চ মুনাফা দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে প্রতিষ্ঠাটি সূচনা লগ্ন থেকে ১৯ হাজার ৯৬৭ জন সাধারণ বিনিয়োগকারীদের নিকট হতে ২৪৫ কোটি ২৩ লাখ ৩৩ হাজার টাকা আমানত গ্রহণ করে। পরবর্তীতে অভিযুক্ত আব্দুল মান্নান তালুকদার সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে সংগৃহীত অর্থের মধ্য থেকে মোট ৬৬ কোটি ২ লাখ ৬৭ হাজার টাকা তারই মালিকানাধীন সাবিল গ্রুপ এর ৬ টি সহযোগী প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করেন।

তিনি বলেন, অর্থ স্থানান্তর সংক্রান্তে সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলো হলো যথাক্রমে এ্যাজাক্স জুট মিলস লিমিটেড, সাবিল ড্রেজিং অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড, বাগেরহাট, সাবিল জেনারেল হাসপাতাল, পিরোজপুর, সাবিল কৃষি উন্নয়ন প্রকল্প, বাগেরহাট, সাবিল ল প্লাজা, ও সাবিল মৎস্য প্রকল্প বাগেরহাট। বাকি অর্থ নামে-বেনামে অন্য প্রতিষ্ঠানসমূহে স্থানান্তর করেন।

তিনি বলেন, প্রতারণার মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ২৪৫ কোটি ২৩ লাখ ৩৩ হাজার টাকা নিজ মালিকানাধীন অন্য প্রতিষ্ঠানে লিজের নামে স্থানান্তর করেছে। প্রতারণার ঘটনা প্রাথমিক অনুসন্ধানে সত্য প্রমাণিত হওয়ায় সিআইডি বাদী হয়ে আব্দুল মান্নানসহ আরও ৪ জনের বিরুদ্ধে বাগেরহাট সদর থানায় মামলা রুজু করেছে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected], [email protected]
সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top