মৌসুমের শেষভাগে কক্সবাজারে পর্যটকের ঢল
প্রকাশিত:
২৮ নভেম্বর ২০২৫ ২১:০০
আপডেট:
২৮ নভেম্বর ২০২৫ ২২:০৮
নভেম্বরের শুরু ও মাঝামাঝি সময়ে পর্যটক সংখ্যা কম থাকলেও শেষ দিকে এসে ভ্রমণপিপাসুদের উপস্থিতিতে মুখরিত হয়ে উঠেছে দেশের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্য কক্সবাজার। মাসের শেষ শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) সৈকতের বালুকাবেলায় স্থানীয় দর্শনার্থীসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।
ছুটির দিনের বিকেলে সরেজমিন দেখা যায়, কলাতলী, সুগন্ধা ও লাবণী পয়েন্টে হাজারো পর্যটক সমুদ্রের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং গোধূলিবেলার সূর্যাস্ত উপভোগ করছেন। পুরোপুরি শীত না পড়লেও হিমেল আবহাওয়া কক্সবাজার ভ্রমণকে আরও উপভোগ্য করে তুলেছে।
দিনাজপুরের পার্বতীপুর থেকে ঘুরতে আসা একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা মোহাম্মদ আফতাব উল্লাহ বলেন, আমাদের দিকে প্রচণ্ড শীত পড়া শুরু করেছে। তাই কক্সবাজারে বেড়াতে আসার এটাই সবচেয়ে ভালো সময়। পরিবার নিয়ে এসেছি, এখানে কিছুটা শীত থাকলেও সময়টা দারুণ কাটছে।
গাজীপুরের কালিয়াকৈর থেকে আসা পর্যটক আনাস বিন রহমান সৈকতে ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণে যথাযথ ব্যবস্থা চান। তিনি বলেন, এই সৈকত আমাদের সম্পদ। সুযোগ পেলেই এখানে চলে আসি। কিন্তু ফটোগ্রাফার, কফি-চিপস বিক্রেতাদের কারণে নিজের মতো সময় কাটানো কঠিন হয়ে যায়। ওরা থাকুক, কিন্তু বিড়ম্বনা কমাতে একটি সুন্দর ব্যবস্থাপনা দরকার।
পর্যটক সংখ্যা বাড়ায় ব্যবসায়ীদের মাঝে আশার সঞ্চার হয়েছে। যদিও আগের মতো আশানুরূপ ভিড় নেই, তবে সামনের দিনগুলোতে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে মোটামুটি ভালো ব্যবসা হবে বলে মনে করছেন তারা।
হোটেল-গেস্টহাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার বলেন, কিছু বছর আগেও এ সময়ে ৯০-৯৫% রুম বুকড থাকত। এখন সে হার কমেছে। তবে মৌসুমের শুরুর তুলনায় এখন পর্যটক বাড়ছে। ছুটির দিনগুলোতে মোটামুটি বুকিং হচ্ছে এতে হোটেল ব্যবসায়ীরা সন্তুষ্ট।
এবারের মৌসুমে জাতীয় নির্বাচন ও সামনে পবিত্র রমজান থাকায় পর্যটক কম হতে পারে বলে মনে করছেন কক্সবাজার রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সহ-সভাপতি কামরুল ইসলাম। তিনি বলেন, এখন কিছু পর্যটক আসছেন, তবে নির্বাচন আর সামনে রোজা থাকায় অন্যান্য বছরের তুলনায় এ মৌসুমে পর্যটক কম হতে পারে। তবুও দেশের পরিস্থিতি ভালো থাকলে পর্যটন ব্যবসায় গতি আসবে।
সৈকত এলাকায় আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ ও পর্যটকদের নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশের সক্রিয় তৎপরতা চোখে পড়ে।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার রিজিয়নের অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ বলেন, আমাদের মূল কাজ হলো পর্যটকদের ভ্রমণকে সুন্দর ও নিরাপদ রাখা। পাশাপাশি পর্যটন স্পটগুলোতে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে আমরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি।
এদিকে আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে কক্সবাজার থেকে সেন্টমার্টিনের উদ্দেশে জাহাজ চলাচল শুরু হবে বলে জানিয়েছেন সি ক্রুজ অপারেটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর। তিনি বলেন, ডিসেম্বর-জানুয়ারি দুই মাস পর্যটকেরা সেন্টমার্টিনে রাত্রিযাপনের সুযোগ পাবেন। তবে সুযোগটি আরও আগে থেকে পেলে ব্যবসায়ী ও সেন্টমার্টিনবাসীদের জন্য ভালো হতো। ইতিমধ্যে অনুমতিপ্রাপ্ত সাতটি জাহাজের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে।

আপনার মূল্যবান মতামত দিন: