ঋণের নামে ৯ কোটি টাকা আত্মসাৎ, আনসার-ভিডিপি ব্যাংকের ম্যানেজার কারাগারে
প্রকাশিত:
১ ডিসেম্বর ২০২৫ ১০:৪৫
আপডেট:
১ ডিসেম্বর ২০২৫ ১১:৪৪
নোয়াখালীতে গ্রাহকদের নামে-বেনামে ভুয়া ঋণ তৈরি করে ৯ কোটির বেশি অর্থ আত্মসাৎ করার মামলায় গ্রেপ্তার আনসার-ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক আলমগীর হোসেনকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।
রোববার (৩০ নভেম্বর) বিকেলে বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। এর আগে শনিবার (২৯ নভেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে চট্টগ্রামের একটি বাসা থেকে র্যাব-১১ তাকে আটক করে।
কারাগারে প্রেরণকৃত মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন চট্টগ্রামের বোয়ালখালীর পশ্চিম গোমদন্ডী এলাকার নুর উল্যাহর ছেলে। তিনি নোয়াখালী জেলার দত্তেরহাট ও সেনবাগ আনসার–ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংকে প্রায় ৯ কোটি টাকার জালিয়াতি ও আত্মসাতের ঘটনায় তার জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়ায় এই মামলা করা হয়।
জানা গেছে, আলমগীর প্রথমে ২০১৪ সালের আগস্ট থেকে ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এবং ২০২০ সালের আগস্ট থেকে ২০২৫ সালে জানুয়ারি পর্যন্ত দ্বিতীয় ধাপে আনসার ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংক নোয়াখালী শাখার সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার ও সাবেক ব্যবস্থাপকের দায়িত্বে ছিলেন। এসময় ৩ জন ভুয়া ঋণগ্রহীতার মাধ্যম ২১ লাখ ৪০ হাজার টাকাসহ প্রাথমিকভাবে প্রায় ৬ কোটি ৯৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন।
একইভাবে আলমগীর আনসার-ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংক সেনবাগ শাখায় প্রথমে ২০১৫ থেকে ২০২০ সাল এবং পরে ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত দ্বিতীয় মেয়াদে কর্মরত থাকা অবস্থায় ৮৯টি ভুয়া ঋণ বিতরণ দেখিয়ে প্রায় ১ কোটি ৮৮ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন।
দুদুকের এনফোর্সমেন্ট ইউনিট গত ২০ অক্টোবর ব্যাংকের রেকর্ডপত্র সংগ্রহ ও তদন্ত করে অসংখ্য অনিয়মের প্রমাণ পায়। তদন্তে উঠে আসে, ব্যবস্থাপক আলমগীর গ্রাহকদের অজ্ঞাতসারে ভুয়া এনআইডি, মোবাইল নম্বর ও কাগজপত্র ব্যবহার করে নামে-বেনামে ঋণ অনুমোদন করেন। অনেক গ্রাহকের বাস্তবেও অস্তিত্ব নেই। ফলে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তার বিরুদ্ধে প্রায় ৯ কোটি টাকার আত্মসাতের অভিযোগে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করে। সেই মামলার ভিত্তিতেই তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর নোয়াখালী জেলা কমান্ডেন্ট মো. সুজন মিয়া বলেন, আমাদের বিভিন্ন সদস্যদের নাম ব্যবহার করে ভুয়া ঋণ দেখিয়ে তিনি প্রায় ৯ কোটি টাকার মতো অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। দুদক এবং ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ তদন্তেও বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে। তারই প্রেক্ষিতে আজ তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনায় ব্যাংকিং খাতে আবারও নিরাপত্তাহীনতা ও নজরদারির ঘাটতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
নোয়াখালী দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. ফারুক আহমেদ বলেন, ব্যবস্থাপক আলমগীর হোসেনকে র্যাবের সহযোগিতায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমরা তাকে আদালতে সোপর্দের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছি। আদালত তাকে কারাগারে প্রেরণ করেন। নোয়াখালী ও সেনবাগ শাখায় গ্রাহকদের অর্থ আত্মসাৎ ও জালিয়াতির অভিযোগে দু’টি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এমন অভিযান অব্যাহত থাকবে।

আপনার মূল্যবান মতামত দিন: