বৃহঃস্পতিবার, ৪ঠা ডিসেম্বর ২০২৫, ১৯শে অগ্রহায়ণ ১৪৩২


প্রাথমিকে ‘শাটডাউন’

শিক্ষকদের ছাড়াই পরীক্ষা দিলো শিশুরা


প্রকাশিত:
৩ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৯:২৩

আপডেট:
৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ০০:৫৩

ফাইল ছবি

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষকদের ‘শাটডাউন’ কর্মসূচির মধ্যেই ফেনীর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে চলছে বার্ষিক পরীক্ষা। তবে হলে শিক্ষক নয়, অভিভাবকদের উপস্থিতিতেই পরীক্ষায় অংশ নিতে দেখা গেছে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের।

বুধবার (৩ ডিসেম্বর) সকাল থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ফেনীর বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, সহকারী শিক্ষকরা বিদ্যালয়ের অফিসকক্ষে বসে কর্মসূচি পালন করছেন। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পরীক্ষার হলে প্রশ্ন ও উত্তরপত্র বিতরণ করছেন। আর শিক্ষার্থীরা যে যার মতো করে পরীক্ষা দিচ্ছেন। আবার কোনো কোনো হলে পরীক্ষা নিতে সহযোগিতা করছেন অভিভাবকরা। পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের প্রশ্ন বুঝতে সমস্যা হলেও হলে শিক্ষক না থাকায় যে যার মতো করে খাতায় উত্তর লিখছেন।

শিক্ষকরা বলছেন, তিন দফা দাবি বাস্তবায়নে সরকারের কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি না থাকা এবং তিন শিক্ষক নেতাকে শোকজ নোটিশ জারি করার প্রতিবাদে এই কর্মসূচি পালন করছেন তারা। ফেনীর ৫৫৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩ হাজার ৪৫ জন সহকারী শিক্ষক এ কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন।

ফেনী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক স্বপ্না মজুমদার বলেন, বিদ্যালয়ে ১০ জন সহকারী শিক্ষক কর্মরত। দাবি আদায়ে আমাদের কর্মবিরতি চলছেচাকরির শেষপর্যায়ে এসেও কোনো পদোন্নতি হয়নিসহকারী শিক্ষকরা বৈষম্যের শিকার

নাজমুল ইসলাম নামে আরেক সহকারী শিক্ষক বলেন, সহকারী শিক্ষকরা শ্রেণি কার্যক্রমের বাইরেও ভোটগ্রহণ, ভোটার তালিকা, টিকাদানসহ নানা কাজ করেন। ১০ বছর পরেও আমরা টাইম স্কেল পাইনিএক্ষেত্রে আমাদের চাকরির শর্ত পূরণ হচ্ছে নাআমাদের সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তারা নবম গ্রেড ও প্রধান শিক্ষকরা ১০ম গ্রেড পাচ্ছে। আমাদের ক্ষেত্রে শুধু অজুহাত দেওয়া হচ্ছে। এ দাবি তুলে আমাদের সহকর্মীরা ঢাকায় লাঠিচার্জের শিকারও হয়েছেন। একপ্রকার দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ায় এমন কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে।

রাবেয়া সুলতানা নামে এক অভিভাবক বলেন, প্রধান শিক্ষক অভিভাবকদের সহায়তায় পরীক্ষা নিচ্ছেন। কিন্তু পরীক্ষার হলে আমাদের সন্তানরা প্রশ্নপত্র না বুঝেই উত্তর দিতে হয়েছে। আগামী ১০ ডিসেম্বর বার্ষিক পরীক্ষা শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখন শঙ্কা তৈরি হয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা সহকারী শিক্ষক ছাড়া এ খাতাগুলো মূল্যায়ন করে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ফলাফল ঘোষণা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ফেনী পাইলট আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফারাহ দিবা খানম ঢাকা পোস্টকে বলেন, জেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে সর্বোচ্চ ১ হাজার ৫ জন শিক্ষার্থী এ প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যেকোনোভাবে বার্ষিক পরীক্ষা নিতে নির্দেশনা দিয়েছেন। বাধ্য হয়ে অভিভাবকদের সহায়তায় পরীক্ষা নিতে হচ্ছে।

এ ব্যাপারে জেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফরিদ উদ্দীন আহাম্মদ বলেন, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী প্রধান শিক্ষকরা পরীক্ষা নিচ্ছেন। এক্ষেত্রে অভিভাবক ও অফিস সহকারীরা সহযোগিতা করছে। আশাকরি এ সমস্যার দ্রুত সমাধান হয়ে যাবে। যেসব বিদ্যালয়ে শিক্ষকরা বিশৃঙ্খলা করছে, অভিযোগ এলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected], [email protected]
সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top