নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগে অধ্যক্ষসহ পাঁচ কর্মচারীর বেতন-ভাতা স্থগিত
প্রকাশিত:
১৮ আগস্ট ২০২৫ ১১:১৫
আপডেট:
১৮ আগস্ট ২০২৫ ১২:৩২

নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার টিকিকাটা আ. ওহাব মহিলা আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষসহ পাঁচজন কর্মচারীর বেতন-ভাতা সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর। একইসঙ্গে কেন তাদের স্থায়ীভাবে বেতন-ভাতা বন্ধ করা হবে না, সে বিষয়ে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে।
রোববার (১৭ আগস্ট) মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর পরিদর্শন (বরিশাল বিভাগ) শাখার উপ-পরিচালক মোহাম্মদ আরিফুর রহমান মজুমদারের সই করা এক স্মারকে বিষয়টি জাননো হয়েছে।
এতে জানানো হয়েছে সম্প্রতি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে অধিদপ্তর এ ব্যবস্থা নিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মাদ্রাসার অধ্যক্ষ নানা পদে নিয়োগ দেওয়ার ক্ষেত্রে লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
অভিযোগ অনুযায়ী, আরবি প্রভাষক মো. আ. হালিম জানিয়েছেন, কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর পদে তর ছেলে নিয়োগ পেতে অধ্যক্ষকে তিনি পাঁচ লাখ টাকা ‘হ্যান্ড ক্যাশ’ দিয়েছেন। অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে নিয়োগ পাওয়া অরিফুর রহমানের কাছ থেকেও ১০ লাখ টাকা নেওয়া হয়েছে। অবসরপ্রাপ্ত নৈশ প্রহরী মন্নানের ছেলে মো. মহসিনকে নিয়োগ দেওয়ার জন্য ৪ লাখ টাকা নিয়েছেন অধ্যক্ষ। ল্যাব সহকারী পদে নিয়োগ পাওয়া দ্বীপ কুমার মিত্রের কাছ থেকেও নেওয়া হয়েছে ৬ লাখ টাকা।
এ ছাড়া নিজের এমপিওভুক্তির জন্য প্রভাষক আ. হালিম ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে অধ্যক্ষের সোনালী ব্যাংক অ্যাকাউন্টে দুই লাখ টাকা জমা দিয়েছেন বলেও তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
তদন্তে আরও উঠে এসেছে, অফিস সহকারী পদে আবেদনকারী সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে সিফাতুল্লাহ পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেননি, কারণ তিনি কোনো নোটিশই পাননি।
নৈশ প্রহরী পদে নিয়োগ বাণিজ্যের প্রসঙ্গে অবসরপ্রাপ্ত মন্নান কাঁদতে কাঁদতে তদন্ত কর্মকর্তাদের জানান, অধ্যক্ষের হাতে ইতোমধ্যেই ৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা দিয়েছেন, আরও টাকা দিতে হবে বললেও তিনি সুনির্দিষ্টভাবে কিছু বলতে পারেননি।
শুধু তাই নয়, ২০১৫ সালে নিয়োগ পাওয়া ছয়জন শিক্ষকের ২০২২ সালে এমপিওভুক্তির সময়ও অর্থ লেনদেনের অভিযোগ রয়েছে।
আরেকটি গুরুতর অভিযোগ হলো, মাদ্রাসার নিয়োগপ্রক্রিয়ায় মঠবাড়িয়া সরকারি কলেজের অধ্যক্ষের স্বাক্ষর জাল করা হয়েছে।
অধিদপ্তরের নথি অনুযায়ী, ল্যাব সহকারী পদে আবেদনকারী পাঁচজন প্রার্থীর তালিকা পাঠানো হলেও পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার তালিকায় সাতজনের নাম যোগ করা হয়। এর মধ্যে নয়ন কৃষ্ণ বালা ও ঝুমা মিত্রের নাম ‘অতিরিক্তভাবে’ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ, কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর, গবেষণাগার/ল্যাব সহকারী এবং নৈশ প্রহরীর বেতন-ভাতা স্থগিত করা হয়েছে। আগামী ২০ আগস্ট সকাল ১১টায় মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালকের কাছে হাজির হয়ে লিখিত জবাব দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: