স্থানীয়দের সঙ্গে চবি শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা, আসামি সহস্রাধিক
প্রকাশিত:
২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৬:৩০
আপডেট:
২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ২৩:১৭

স্থানীয়দের সঙ্গে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনায় একটি মামলা ও একটি জিডি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। শিক্ষার্থীদের আহত হওয়ার ঘটনায় ৯৮ জনের নামে মামলা করা হয়েছে। এতে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে এক হাজার জনকে। আর চবির নিরাপত্তা দপ্তরের দেশীয় অস্ত্র লুটের ঘটনায় একটি জিডি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম।
তিনি বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় একটি মামলা আর একটি জিডি করা হয়েছে। আর আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে যা করার সব করছি। শিক্ষার্থীদের অনুরোধ করবো তারা যেন দ্রুত ক্লাস-পরীক্ষায় ফেরে। শিক্ষার্থীদের পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে তাদের এগিয়ে আসার আহ্বান।
মামলার বিষয়ে জানতে হাটহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাউসারকে ফোন দিলে তিনি ফোন কেটে দেন।
এর আগে গত শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টা থেকে গতকাল বিকেল ৪টা পর্যন্ত দফায় দফায় শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে প্রায় ১৫০০ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
এ প্রসঙ্গে চবি মেডিকেল সেন্টারের সিনিয়র মেডিকেল অফিসার ডা. ফারহানা ইয়াসমিন বলেন, গত শনিবার থেকে প্রায় ১৫০০ শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। এর মধ্যে ৫০০ শিক্ষার্থীকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আর গুরুতর আহত হয়েছেন ১০ জন। আহতদের অধিকাংশরই শরীর ছিলে গেছে, কেটে গেছে এবং তাদের শরীরে গভীর ক্ষতও ছিল। স্ক্রিনের নিচে ব্লাড জমে কালো হয়ে গেছে এ ধরণের শিক্ষার্থীও ছিল। মোট কথা–ছোট-বড় সব ধরনের ক্ষতই ছিল। শিক্ষার্থীদের কপাল, মাথা, শরীরে ক্ষত ছিল।
জানা যায়, গত রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন, প্রক্টর তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফসহ শিক্ষকেরা দুই পক্ষকে বোঝানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্য থেকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে দুই পক্ষ।
দুই পক্ষের মধ্যে থেমে থেমে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। শিক্ষার্থীদের হাতে ছিল রড, পাইপ, কাঠের লাঠি ও পাথর। স্থানীয়দের হাতে ছিল রামদা, রড ও পাইপ। সংঘর্ষে ২ নম্বর গেট সংলগ্ন এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।
সংঘর্ষ একপর্যায়ে গ্রামের অলিগলিতে ছড়িয়ে পড়ে। অনেক শিক্ষার্থী অলিগলিতে আটকে গেলে তাদের মারধর করা হয়। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে রক্তাক্ত অবস্থায় একের পর এক শিক্ষার্থীকে নিয়ে যাওয়া হয় চট্টগ্রাম মেডিকেল সেন্টারে। একপর্যায়ে দুপুর ২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে হাটহাজারী উপজেলা প্রশাসন। পরে মঙ্গলবার রাত ১২টা পর্যন্ত এই সময় বাড়ানো হয়েছে। সংঘর্ষের ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে তিন শিক্ষার্থী নগরের দুই বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাদের মধ্যে একজনকে ঢাকায় রেফার্ড করা হয়েছে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: