মঙ্গলবার, ২২শে এপ্রিল ২০২৫, ৯ই বৈশাখ ১৪৩২


ছাত্রীদের বিষ প্রয়োগ ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ : খামেনি


প্রকাশিত:
৭ মার্চ ২০২৩ ২৩:০৯

আপডেট:
২২ এপ্রিল ২০২৫ ১৩:৩৯

ফাইল ছবি

ইরানে ছাত্রীদের মধ্যে বিষ প্রয়োগের ঘটনাকে ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ বলে উল্লেখ করেছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। এমনকি জঘন্য এই অপরাধ ইচ্ছাকৃতভাবে সংঘটিত হলে এর সঙ্গে জড়িতদের মৃত্যুদণ্ড দিয়ে শাস্তি দেওয়া উচিত বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।

মেয়েদের শিক্ষায় ব্যাঘাত সৃষ্টির লক্ষ্যে স্কুলে সন্দেহভাজন একের পর এক গ্যাস হামলা এবং এর জেরে জনগণের মধ্যে সৃষ্ট ক্ষোভের মধ্যেই এই মন্তব্য করলেন ইরানের সর্বোচ্চ এই নেতা। ইরানের রাষ্ট্রীয় টিভির বরাত দিয়ে মঙ্গলবার (৭ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিষাক্ত গ্যাস হামলার পর গত বছরের নভেম্বর থেকে এক হাজারেরও বেশি মেয়ে শিক্ষার্থী বিষক্রিয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়েছে। মেয়েদের স্কুল বন্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা হিসাবে দুর্বৃত্তরা দেশজুড়ে বিষাক্ত গ্যাস হামলা চালাচ্ছে বলে দেশটির সরকার ধারণা করছে।

তবে ইরানের কিছু রাজনীতিবিদ এই ঘটনার জন্য মেয়েদের শিক্ষার বিরোধিতাকারী ধর্মীয় দলগুলোকে দায়ী করেছেন।

রয়টার্স বলছে, মেয়েদের স্কুল বন্ধ করে দিতে বিষাক্ত গ্যাস হামলার ঘটনা এমন এক সময়ে ঘটল যখন সঠিকভাবে হিজাব না পরায় পুলিশের হাতে আটক এক তরুণীর মৃত্যুর জেরে পশ্চিম এশিয়ার এই দেশটি কয়েক মাস ধরে টানা বিক্ষোভের মুখে রয়েছে।

রাষ্ট্রীয় টিভিতে আয়াতুল্লাহ আলি খামেনিকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, ‘কর্তৃপক্ষের উচিত শিক্ষার্থীদের বিষক্রিয়ার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখা। যদি এটি ইচ্ছাকৃতভাবে করা হয়েছে বলে প্রমাণিত হয়, তাহলে ক্ষমার অযোগ্য এই অপরাধের সঙ্গে জড়িত অপরাধীদের মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হওয়া উচিত।’

পবিত্র শিয়া মুসলিম শহর কোম থেকে গত নভেম্বরে এই ধরনের বিষক্রিয়া শুরু হয় এবং পরে সেটি ইরানের ৩১টি প্রদেশের মধ্যে ২৫টিতে ছড়িয়ে পড়ে। এই ঘটনার জেরে ইরানের বহু অভিভাবক তাদের শিশুদের স্কুল থেকে সরিয়ে নেয় এবং প্রতিবাদ-বিক্ষোভে নামেন।

ইরানি কর্তৃপক্ষ অবশ্য এই ঘটনার পেছনে ইসলামিক রিপাবলিকের ‘শত্রুদের’ হাত রয়েছে বলে অভিযোগ করেছে। দেশটির দাবি, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানকে দুর্বল করার জন্য ইরানের শত্রুরা এই ধরনের গ্যাস হামলাকে ব্যবহার করেছে।

এদিকে ওয়াশিংটনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রেস সেক্রেটারি সোমবার ইরানের এই বিষক্রিয়ার ঘটনাকে লজ্জাজনক বলে অভিহিত করেছেন। কারিন জ্যঁ-পিয়েরে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘ইরানে মেয়েদেরকে শুধুমাত্র শিক্ষা লাভের চেষ্টা করার জন্য বিষ প্রয়োগ করা হচ্ছে এমন ঘটনা লজ্জাজনক, এটা অগ্রহণযোগ্য।’

উল্লেখ্য, ইরানে এমন এক সময় ছাত্রীদের ওপর বিষপ্রয়োগের ঘটনা প্রকাশ্যে এলো, যার কয়েক সপ্তাহ আগে অর্থাৎ গত ১৬ সেপ্টেম্বর দেশটির নৈতিকতা বিষয়ক পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার পর নির্যাতনে ২২ বছর বয়সী মাহসা আমিনি নামের এক তরুণীর প্রাণহানি ঘটে। ওই তরুণীর মৃত্যুর পর থেকে দেশটিতে টানা বিক্ষোভ করে আসছেন হাজার হাজার মানুষ।

তেহরান বলেছে, বিক্ষোভে শত শত মানুষ নিহত হয়েছেন। এছাড়া বিক্ষোভ চলাকালীন সহিংসতা সৃষ্টির দায়ে আরও হাজার হাজার মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ইরানের মানবাধিকার কর্মীরা স্কুলে হামলার ঘটনায় জড়িতদের আফগানিস্তানের ক্ষমতাসীন সশস্ত্র গোষ্ঠী তালেবান এবং আফ্রিকার সাহেল অঞ্চলের জঙ্গিগোষ্ঠী বোকো হারামের সাথে তুলনা করেছেন। এই দুই গোষ্ঠীই মেয়েদের শিক্ষার বিরোধিতা করে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected], [email protected]
সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top