মঙ্গলবার, ২২শে এপ্রিল ২০২৫, ৯ই বৈশাখ ১৪৩২


রাশিয়ার তেল কেনা বৃদ্ধি করেছে শীর্ষ উৎপাদনকারী আমিরাত-সৌদিও


প্রকাশিত:
৮ মার্চ ২০২৩ ০৪:৪৪

আপডেট:
২২ এপ্রিল ২০২৫ ১৩:৩৬

ফাইল ছবি

বিশ্বের অন্যতম প্রধান তেল উৎপাদনকারী দুই দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং সৌদি আরব এখন রাশিয়ার কাছ থেকে আরও বেশি পরিমাণে অপরিশোধিত তেল কিনছে। জাহাজের গতিবিধিসংক্রান্ত তথ্য ও তেল ব্যবসার সঙ্গে সম্পর্কিত সূত্রগুলো এই তথ্য জানিয়েছে বলে সোমবার খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে একের পর এক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে পশ্চিমা বিশ্ব। পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার মুখে রাশিয়ার বিক্রি কমে যাওয়ায় মূল্যছাড়ে নতুন নতুন ক্রেতার কাছে তেলের ব্যবসা করছে রাশিয়া।

এমন পরিস্থিতিতে পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞার সঙ্গে রাশিয়া কীভাবে মানিয়ে নিচ্ছে, মস্কোর কাছ থেকে আরব আমিরাত ও সৌদি আরবের এই জ্বালানি তেল কেনা তার একটি উদাহরণ হিসাবে হাজির হয়েছে। ইউক্রেনে হামলাকে মস্কো ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ হিসাবে অভিহিত করে।

ইউক্রেনে আগ্রাসন ঘিরে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়া এখন অপরিশোধিত এবং পরিশোধিত তেল কম দামে বিক্রি করছে। নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়ার তেলের ক্রেতা কমে যাওয়ায় মূল্য ছাড়ে বিক্রি করছে দেশটি।

মস্কোর কাছ থেকে তেল কেনা সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো শীর্ষ উপসাগরীয় তেল উৎপাদনকারী দুই দেশের সাথে রাশিয়ার ক্রমবর্ধমান সহযোগিতার বিষয়টিই তুলে ধরছে। যুদ্ধ শুরুর পর উপসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোকে তেলের উৎপাদন বাড়াতে চাপপ্রয়োগ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র; যাতে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা রাশিয়ার তেলের বিকল্প মেলে এবং দেশটিকে আরও বেশি বিচ্ছিন্ন করা যায়। কিন্তু উপসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রের এই চাপ ঠেকিয়ে দিয়েছে।

জাহাজের গতিবিধি সংক্রান্ত তথ্য-উপাত্তে দেখা যায়, ২০২২ সালের নভেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত রাশিয়ার ১৫ লাখ ব্যারেল অপরিশোধিত তেল বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ তেল উৎপাদনকারী সংযুক্ত আরব আমিরাতে গেছে। তবে দেশটিতে আগের তুলনায় বেশি পরিমাণে রাশিয়ার তেল পৌঁছানো শুরু হয় ২০২২ সালের শুরুর দিকে।

জ্বালানির তথ্য বিশ্লেষণকারী প্রতিষ্ঠান কেপলারের তথ্য অনুযায়ী, সংযুক্ত আরব আমিরাতে রাশিয়ার অপরিশোধিত তেলের প্রথম চালানটি যায় ২০১৯ সালে। তবে তেল পরিবহন বৃদ্ধি পায় ২০২২ সালের এপ্রিলে। ওই বছরের জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত রাশিয়ার তেলের চালান আমিরাতে পৌঁছানো বন্ধ ছিল।

রেফিনিটিভ এইকনের পরিসংখ্যান বলছে, সংযুক্ত আরব আমিরাতে রাশিয়ার অপরিশোধিত তেলের প্রথম চালান পৌঁছেছিল ২০২২ সালে। আর দেশটিতে রুশ তেলের চালান বৃদ্ধি পায় একই বছরের এপ্রিলে। সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং রাশিয়ার জ্বালানি মন্ত্রণালয় তাৎক্ষণিকভাবে এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেনি।

• বেড়েছে সহযোগিতা
নিজেদের বিদ্যু কেন্দ্রে পোড়ানোর জন্য সৌদি আরব রাশিয়ার কাছ থেকে বেশি পরিমাণে জ্বালানি তেল আমদানি করছে। এর ফলে তারা নিজেদের উৎপাদিত অপরিশোধিত তেল বেশি পরিমাণে রপ্তানি করতে পারছে। তবে এর আগে সংযুক্ত আরব আমিরাতে রাশিয়ার অপরিশোধিত তেলের মাত্র একটি চালান পৌঁছেছিল বলে জানা যায়।

চীন, ভারত, আফ্রিকা এবং মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কয়েকটি দেশ রাশিয়ার অপরিশোধিত তেল ও পণ্য আমদানি বৃদ্ধি করেছে। তবে একই সময়ে অন্য অনেক দেশ এই ধরনের ক্রয় নিষিদ্ধ বা নিরুৎসাহিত করেছে।

তেল রপ্তানিকারক দেশ ও তাদের মিত্রদের সংগঠন ওপেক প্লাসেও রাশিয়ার সঙ্গে সহযোগিতা বৃদ্ধি করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত।

এইকনের জাহাজের গতিবিধি নজরদারি সংক্রান্ত তথ্য-উপাত্ত দেখেছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স। সেখানে দেখা যায়, ২০২২ সালের নভেম্বরে রাশিয়ার অপরিশোধিত তেলবাহী একটি জাহাজ সংযুক্ত আরব আমিরাতের রুওয়াইস তেল পরিশোধন কেন্দ্রে পৌঁছায়।

এছাড়া চলতি মাসের শুরুর দিকে রাশিয়ার অপরিশোধিত ইউরাল তেল নিয়ে আরেকটি জাহাজ আমিরাতের ফুজাইরাহ তেল কেন্দ্রে যায়।

জ্বালানির তথ্য বিশ্লেষণকারী প্রতিষ্ঠান কেপলারও অপরিশোধিত তেলের দুই চালানই আমিরাতে পৌঁছায় বলে জানিয়েছে। রাশিয়ার অপরিশোধিত তেলের বাণিজ্য সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র বলেছে, ‘সংযুক্ত আরব আমিরাতে মাঝে মাঝেই এই ধরনের চালান আসতে দেখা হয়।’



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected], [email protected]
সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top