কানাডা : ট্রুডোকে পদত্যাগের জন্য আল্টিমেটাম এমপিদের
 প্রকাশিত: 
 ২৪ অক্টোবর ২০২৪ ১০:৩৫
 আপডেট:
 ৩১ অক্টোবর ২০২৫ ০৯:৪৯
 
                                কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোকে পদত্যাগ করার আহ্বান জানিয়েছে চিঠি দিয়েছেন তার রাজনৈতিক দল লিবারেল পার্টির ২৪ জন আইনপ্রণেতা। চিঠিতে আগামী ২৮ অক্টোবরের মধ্যে তাকে পদত্যাগ করতে বলা হয়েছে।
অবশ্য নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে তিনি পদত্যাগ না করলে দলগতভাবে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে— সে সম্পর্কে চিঠিতে কিছু উল্লেখ করেননি এমপিরা।
কানাডার সংবাদমাধ্যম সিবিসি নিউজের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, বুধবার রাজধানী অটোয়ায় একটি রুদ্ধদ্বার বৈঠক ছিল কানাডার সরকারদলীয় এমপিদের। তবে সেখানে ট্রুডো বা তার নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিসভার কোনো সদস্য সেখানে ছিলেন না। উপস্থিত এমপিদের নিজেদের বক্তব্য দেওয়ার জন্য ২ মিনিট করে সময় দেওয়া হয়েছিল। বৈঠক সূত্রে জানা গেছে অন্তত ২০ জন এমপি ট্রুডোকে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়ে বক্তব্য দিয়েছেন। অনেক আইনপ্রণেতা অবশ্য এই দাবির বিরোধিতা করেও বক্তব্য দিয়েছেন। বৈঠকে মোট ১৫৩ জন এমপি উপস্থিত ছিলেন।
গত ৯ বছর ধরে কানাডার প্রধানমন্ত্রীর পদে রয়েছেন জাস্টিন ট্রুডো। তবে সাম্প্রতিক বিভিন্ন জরিপ বলছে, দেশের অভ্যন্তরে জনপ্রিয়তা ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছে তার। আবার একই সময়ে বাড়ছে লিবারেল পার্টির প্রতিপক্ষ কনজারভেটিভ পার্টির জনপ্রিয়তা। জরিপ বলছে, জনপ্রিয়তার নিরিখে সম্প্রতি লিবারেল পার্টির থেকে ২০ পয়েন্ট এগিয়ে গেছে কনজারভেটিভ পার্টি।
আগামী ২০২৫ সালে পার্লামেন্ট নির্বাচন হবে কানাডায়। দলের শীর্ষ নেতা হিসেবে সেই নির্বাচনে লিবারেল পার্টিকে নেতৃত্ব দেওয়ার কথা ট্রুডোর। কিন্তু ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তায় ধস নামায় সামনের নির্বাচনে তার নেতৃত্বের ওপর ভরসা রাখতে পারছেন না দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা।
তবে ট্রুডো বিদায় নিলেই যে সব সমস্যার সমাধান হবে— ব্যাপারটি এমনও নয়। কারণ, আগামী নির্বাচনে দলকে নেতৃত্ব দিয়ে জিতিয়ে আনতে পারবেন— লিবারেল পার্টির মধ্যে এমন যোগ্যতাসম্পন্ন নেতা নেই। অর্থাৎ এক কথায়, এই মুহূর্তে দলের ভেতর ট্রুডোর কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী নেই।
কানাডার রাজনীতি বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, কানাডাপ্রবাসী শিখ নেতা হরদীপ সিং নিজ্জার হত্যাকাণ্ডকে ঘিরে ভারতের সঙ্গে কানাডার কূটনৈতিক টানাপোড়েন ও তিক্ততা ট্রুডোর জনপ্রিয়তা হ্রাসের জন্য অনেকাংশে দায়ী।
এক রাজনীতি বিশ্লেষক সিবিসি নিউজকে বলেছেন, “ট্রুডো যৌক্তিক কারণেই কানাডায় বসবাসরত শিখদের পক্ষ নিয়েছেন, তবে নয়াদিল্লির সঙ্গে তার টানাপোড়েন এই দেশে বসবাস করা লাখ লাখ ভারতীয়কে হতাশ এবং উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। তাছাড়া বিগত কয়েক বছরে বিপুল পরিমাণ অভিবাসনপ্রত্যাশীর কানাডায় আসার জেরে দেশের আবাসন ও অন্যান্য পরিষেবা খাতে যে সংকট সৃষ্টি হয়েছে, সেজন্যও অনেকে ট্রুডোর নেতৃত্বাধীন সরকারকে দায়ী করছে। কারণ এই সংকটের শুরু তার আমলেই।”
দলের এমপিদের সাম্প্রতিক এই বৈঠক নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি জাস্টিন ট্রুডো। তবে কানাডার অভিবাসন বিষয়ক মন্ত্রী এবং তার ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত মার্ক মিলার সিবিসি নিউজকে বলেন, “যেসব এমপি প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করে বক্তব্য ও চিঠি দিয়েছেন, তারা সাহসী এবং নিজেদের সাহসিকতার জন্য প্রশংসার দাবিদার। তবে আমি বলতে চাই, দল যতটা খারাপ অবস্থায় আছে বলে তারা আশঙ্কা করছেন, বাস্তব পরিস্থিতি তেমন নয়। এটা সত্যি যে সম্প্রতি আমরা খানিকটা চাপের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি, কিন্তু সময় অনেক কিছুর সমাধান করে দেয়। লিবারেল পার্টিও এই চাপ থেকে বেরিয়ে আসবে।”
সূত্র : সিবিসি, দ্য গার্ডিয়ান

 
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                    
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: