আমরা চাইলে ৬টা নয় এর চেয়েও বেশি বিমান ভূপাতিত করতে পারতাম
প্রকাশিত:
২৪ মে ২০২৫ ১২:২৭
আপডেট:
২৪ মে ২০২৫ ১৭:০২

কাশ্মীরের হামলার জেরে গত ৬ ও ৭ মে পাকিস্তানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ভারত। এসময় হামলার জবাবে ভারতের ৬টি বিমান ভূপাতিত করার দাবি করে পাকিস্তান। তবে পাকিস্তান চাইলে যে এর চেয়েও বেশি বিমান ভূপাতিত করতে পারত; এবার সেটাই জানিয়েছে পাকিস্তানের আইএসপিআর-এর ডিজি আহমেদ শরিফ চৌধুরী।
বিবিসি উর্দুকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ভারত-পাকিস্তান সংঘাত নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর এই মুখপাত্র। সেই সঙ্গে জানিয়েছেন, ভারত এখনো উসকানিমূলক আচরণ করছে। তারা আগুন নিয়ে খেলছে। যার পরিণতি হতে পারে ভয়াবহ।
পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে পরমাণু যুদ্ধের কোনও আশঙ্কা আছে কি না জানতে চাইলে আহমেদ শরিফ চৌধুরী বলেন, ‘ভারত আগুন নিয়ে খেলছে। যার মূলে রয়েছে দুই দেশের সংঘর্ষের আবহে ভারতের তৈরি ন্যারেটিভ।’
আহমেদ শরিফ চৌধুরী বলেছেন, ভারত সরকারের কেউ পহেলগামের ঘটনা নিয়ে কঠিন প্রশ্নগুলো তুলছে না। নিরাপত্তার এত বড় গাফিলতি কীভাবে হলো, সেই বিষয় নিয়ে কেউ প্রশ্ন তুলছে না।
‘এই ঘটনার নেপথ্যে যে কারণ রয়েছে সেগুলো বোঝার আগ্রহ কারও মধ্যে নেই। যারা নিপীড়ন এবং অবিচারের কথা বলছে তাদের কণ্ঠস্বর শুনতে ওরা (ভারত) প্রস্তুত নয়। এই ঘটনাগুলো সেই অবিচারেরই ফলাফল যার অবিচারেরই যেটা তারা নিজেরা করেছে।
দুই দেশের মধ্যে 'ব্যাক চ্যানেল' যোগাযোগ সম্পর্কে তাকে জিজ্ঞাসা করা হলে আইএসপিআর-এর ডিরেক্টর জেনারেল বলেছেন, ‘এই প্রশ্নের উত্তর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দিতে পারবে। রাজনীতি ও কূটনীতির বিষয়গুলো আমাদের আওতায় পড়ে না। আমরা অংশীদার হতে পারি কিন্তু এই বিষয়গুলোতে আমরা প্রধান ভূমিকা পালন করি না।’
ভারতীয় বিমান ভূপাতিত করার বিষয়েও শরিফ চৌধুরী বলেন, ‘পাকিস্তান অত্যন্ত দায়িত্বশীলভাবে সঙ্গে এই সংঘর্ষের মোকাবিলা করেছে। ছয় ও সাতই মে রাতে আমরা আমাদের প্রতিরক্ষার্থে ওদের কড়া জবাব দিয়েছি এবং ওদের ছয়টা বিমান গুলি করে ভূপাতিত করেছি। তবে আমরা চাইলে এর চেয়েও বেশি সংখ্যক বিমানকে ভূপাতিত করতে পারতাম। কিন্তু আমাদের নেতৃত্ব খুব দায়িত্বশীল ছিল এবং তারা পরিপক্ব দৃষ্টিকোণ থেকে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।’
আহমেদ শরিফ চৌধুরী জানিয়েছেন, পাকিস্তান খোলাখুলিভাবে এই হামলার পরে ক্ষয়ক্ষতির কথা স্বীকার করেছে। পাকিস্তান নিজের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে এবং ভারত তাদের প্রতিক্রিয়ামূলক পদক্ষেপ নেওয়া থেকে বিরত করতে পারেনি।
তিনি বলেন, ‘আমরা কি থেমে গিয়েছিলাম? ভারত কি পাকিস্তানকে প্রতিক্রিয়া স্বরূপ জবাব দেওয়া থেকে ছয় ও সাতই মে-র রাতে আটকাতে পেরেছে? না, পারেনি। কারণ একমাত্র তাদেরই থামানো যায়, যাদের থামানো যেতে পারে।’
গত নয় ও ১০ই মে-র মধ্যবর্তী রাতে ভারত শাসিত কাশ্মীরের প্রতিরক্ষা স্থাপনায় হামলা চালানোর কথা উল্লেখ করে আইএসপিআর-এর ডিজি বলেন, ‘পাকিস্তান সেই রাতে সিদ্ধান্তমূলকভাবে, সুসংহত এবং আনুপাতিক জবাব দিয়েছিল। আমাদের কাছে যে প্রচলিত সামরিক শক্তি রয়েছে, তার সীমিত ব্যবহার করে এই প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। এটা ছিল আমাদের প্রযুক্তিগত দক্ষতার একটা ছোট কিন্তু খুবই কার্যকর প্রদর্শন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আর দেখেছেন, তখনই ভারত পিছু হাটতে শুরু করেছে। হঠাৎই তারা সংলাপের কথা বলতে শুরু করে এবং উত্তেজনা প্রশমনের ইচ্ছা প্রকাশ করে।’
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: