বুধবার, ২৮শে মে ২০২৫, ১৩ই জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২


যুক্তরাষ্ট্রের নীরবতায় উৎসাহ পাচ্ছেন পুতিন, অভিযোগ জেলেনস্কির


প্রকাশিত:
২৬ মে ২০২৫ ১০:৩৫

আপডেট:
২৮ মে ২০২৫ ০২:৪১

ছবি সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের নীরবতায় উৎসাহ পাচ্ছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এমনই মন্তব্য করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তিনি অভিযোগ করেছেন, রাশিয়ার সাম্প্রতিক ভয়াবহ বিমান হামলার পর যুক্তরাষ্ট্রের নীরবতা পুতিনকে আরও সাহস দিচ্ছে।

সোমবার (২৬ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

মূলত শনিবার রাতে ইউক্রেনজুড়ে চালানো হামলায় রাশিয়া একযোগে ৩৬৭টি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে— যা ২০২২ সালে যুদ্ধ শুরুর পর এক রাতে সর্বোচ্চ হামলার রেকর্ড। হামলায় অন্তত ১২ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে তিনজন শিশু রয়েছে।

এছাড়া আহত হয়েছেন আরও বহু মানুষ। ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এর আগের দিনও কিয়েভে বড় হামলা চালায় রাশিয়া এবং সেটিও ছিল গত মাসের মধ্যে শহরটিতে সবচেয়ে বড় আক্রমণের একটি।

এমন অবস্থায় ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির অভিযোগ, “যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের নীরবতা পুতিনকে উৎসাহিত করছে। যুদ্ধ থামছে না—কর্মদিবস, সাপ্তাহিক ছুটি, কোনও কিছুরই তোয়াক্কা নেই। এই নীরবতা চলতে দেওয়া যায় না।”

অবশ্য রাশিয়ার তীব্র হামলার পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, “আমি পুতিনের আচরণে সন্তুষ্ট নই। তিনি প্রচুর মানুষ হত্যা করছেন। আমি বুঝতে পারছি না তার কী হয়েছে”। তবে তিনি ঠিক কী পদক্ষেপ নিতে চান, তা পরিষ্কার করে বলেননি।

এর আগে ট্রাম্পের ইউক্রেন-বিষয়ক বিশেষ দূত কিথ কেলোগ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কিয়েভে রাতের আকাশে ধোঁয়ার একটি ছবি পোস্ট করে বলেন, “এই হামলা নিরীহ নারী-শিশু হত্যার উদাহরণ। এটি ১৯৭৭ সালের জেনেভা কনভেনশনের স্পষ্ট লঙ্ঘন। এখনই যুদ্ধবিরতি দরকার।”

ইউক্রেনের বিমানবাহিনী জানায়, শনিবার রাত ৮টা ৪০ থেকে পরদিন সকাল পর্যন্ত রাশিয়া ২৯৮টি ড্রোন ও ৬৯টি ক্রুজ ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে রাশিয়া। তারা ৪৫টি ক্ষেপণাস্ত্র ও ২৬৬টি ড্রোন গুলি করে নামাতে সক্ষম হয়। এই হামলায় ইউক্রেনের ২২টি এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

এছাড়া রুশ হামলায় ৩০টিরও বেশি শহর ও গ্রামে উদ্ধার অভিযান চালাতে হয়েছে বলেও জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি।

ইউক্রেনের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী মারিয়ানা বেটসা জানান, কিয়েভের পশ্চিমের ঝিতোমির অঞ্চলে নিহত তিন শিশুই ভাইবোন—৮ বছরের স্তানিসলাভ, ১২ বছরের তামারা এবং ১৭ বছরের রোমান। এছাড়া খারকিভ অঞ্চলের কুপিয়ানস্ক শহরে একটি বাড়িতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নিহত হন ৮৫ ও ৫৬ বছর বয়সী দুই নারী। কিয়েভ অঞ্চলে নিহত হয়েছেন ৪ জন এবং আহত ১৬ জন, যাদের মধ্যে ৩টি শিশুও রয়েছে।

ইউক্রেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইহোর ক্লাইমেনকো বলেন, এটি ছিল সমন্বিত, নিষ্ঠুর হামলা—যা সরাসরি বেসামরিক মানুষকে লক্ষ্য করেই চালানো হয়েছে। তিনি জানান, অন্তত ১৩টি অঞ্চল রুশ হামলার শিকার হয়েছে, আহত হয়েছেন ৬০ জনের বেশি, ধ্বংস হয়েছে ৮০টি আবাসিক ভবন এবং ২৭টি স্থানে আগুন লেগেছে।

এমন অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ জানান জেলেনস্কি। তিনি বলছেন, রাশিয়ার ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা না দেওয়া এবং যথাযথ চাপ না প্রয়োগ করাই মূলত যুক্তরাষ্ট্রের ‘নীরবতা’। তিনি মনে করেন, রাশিয়ার যুদ্ধ চালানোর সক্ষমতা যথেষ্টভাবে ক্ষয় করা হয়নি, যার ফলে পুতিন এখনও যুদ্ধবিরতিতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না।

অন্যদিকে ট্রাম্প বরাবরই পুতিনের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে শান্তি আনার কথা বললেও তা কোনো অগ্রগতি আনেনি। বর্তমানে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলো রাশিয়ার ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা প্রস্তুত করলেও যুক্তরাষ্ট্র স্পষ্ট করে বলেছে, তারা হয় শান্তি আলোচনা চালিয়ে যাবে নয়তো আলোচনায় অগ্রগতি না হলে সম্পূর্ণভাবে হাত গুটিয়ে নেবে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected], [email protected]
সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top