৪০০ কেজি ইউরেনিয়াম সরিয়েছে ইরান, যা দিয়ে ১০টি পারমাণবিক বোমা তৈরি সম্ভব: যুক্তরাষ্ট্র
প্রকাশিত:
২৪ জুন ২০২৫ ১৮:১৩
আপডেট:
২৫ জুন ২০২৫ ০১:৫৭

ইরানের গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনায় ওয়াশিংটন ছয়টি বাংকার-বিধ্বংসী বোমা ফেলার আগেই সেখানে থাকা ৪০০ কেজি ওজনের ইউরেনিয়াম সরানো হয়েছিল। এই পরিমাণ ইউরেনিয়াম দিয়ে ১০টি পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করা সম্ভব। মার্কিন সংবাদমাধ্যম এবিসি নিউজের কাছে এমনটাই দাবি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স।
ইরানের তিন পারমাণবিক স্থাপনায় বোমা নিক্ষেপের পর থেকে হদিস মিলছে না ৪০০ কেজি ওজনের ইউরেনিয়াম, যা ওই তিন স্থাপনাতে মজুত ছিল। যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট ভ্যান্স বলেছেন, এই পরিমাণ ইউরেনিয়াম দিয়ে ১০টি পারমাণবিক বোমা তৈরি করা যায়।
ওই ইউরেনিয়াম ৬০ শতাংশ পর্যন্ত সমৃদ্ধ ছিল বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম। পারমাণবিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতে হলে এটি প্রায় ৯০ শতাংশ পর্যন্ত সমৃদ্ধ করা প্রয়োজন।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, হদিস না মেলা ইউরেনিয়ামকে ইরানের জন্য শক্তিশালী দর-কষাকষির অস্ত্র হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। বিশেষ করে তারা যদি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নতুন করে পারমাণবিক চুক্তি নিয়ে আলোচনায় ফিরতে চায়।
কেবল যুক্তরাষ্ট্র নয়, ইসরায়েলি কর্মকর্তারাও একাধিকবার দ্য নিউইয়র্ক টাইমসের কাছে দাবি করেছে, গত রোববার ফোরদো, নাতাঞ্জ ও ইস্পাহান পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলার আগেই গোপন জায়গায় ওই ৪০০ কেজি ওজনের ইউরেনিয়াম সরিয়ে ফেলে ইরান সরকার।
যুক্তরাষ্ট্রের হামলার আগে স্যাটেলাইটের মাধ্যমে তোলা ছবিতে দেখা যায়, ফোরদো পারমাণবিক স্থাপনার বাইরে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে আছে ১৬টি ট্রাক। এই স্থাপনা পাহাড়ের ভেতরে তৈরি করা হয়েছে। ক্ষেপণাস্ত্র হামলা থেকে এটিকে সুরক্ষিত বলে মনে করা হয়।
হামলার পর স্যাটেলাইট ছবিতে দেখা গেছে, বাংকার-বিধ্বংসী বোমার আঘাতে ইরানের ফোরদো পারমাণবিক স্থাপনার উল্লেখযোগ্য ক্ষতি হয়েছে। তবে তার বাইরে কয়েক দিন আগে যে ট্রাকগুলো দাঁড়িয়ে ছিল, সেগুলোর কোনো অস্তিত্ব নেই।
ওই সব ট্রাকের মাধ্যমে ঠিক কী সরানো হয়েছে এবং কোথায় সরানো হয়েছে, তা এখনো জানা যায়নি। যদিও যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের কর্মকর্তাদের দৃঢ় বিশ্বাস, ইরানের প্রাচীন রাজধানী ইস্পাহানের কাছে ভূগর্ভস্থ আরেক গুদামে সেগুলো সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) প্রধান রাফায়েল গ্রোসি বলেছেন, পারমাণবিক স্থাপনা ফোরদো সর্বশেষ পরিদর্শন করা হয়েছিল ইরানে ইসরায়েলের হামলা শুরুর এক সপ্তাহ আগে।
গত সপ্তাহে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে গ্রোসি বলেছিলেন, যত দ্রুত সম্ভব, ফোরদো পরিদর্শনের কাজ আবার শুরু করা জরুরি। তিনি সতর্ক করে এ-ও বলেন, ইরান-ইসরায়েলের চলমান সংঘাত এই জরুরি কাজটি আরও বিলম্বিত করছে। একই সঙ্গে ইরানকে পরমাণু অস্ত্র অর্জন থেকে বিরত রাখতে কূটনৈতিক সমাধানের সম্ভাবনাও ক্ষীণ করছে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: