চলন্ত বাসে তরুণীর সন্তান প্রসব
জানালা দিয়ে ছুড়ে ফেলা হলো নবজাতক
প্রকাশিত:
১৬ জুলাই ২০২৫ ১৩:৪১
আপডেট:
১৬ জুলাই ২০২৫ ২২:০৯

ভারতের মহারাষ্ট্রে এক চলন্ত বাসে সন্তান প্রসব করেন ১৯ বছর বয়সী এক তরুণী। তবে জন্মের কিছুক্ষণের মধ্যেই নবজাতকটিকে বাসের জানালা দিয়ে বাইরে ছুড়ে ফেলা হয়, এবং সেখানেই শিশুটির মৃত্যু ঘটে।
এ ঘটনায় ওই তরুণী ও তার সঙ্গে থাকা এক ব্যক্তির দাবি, শিশুটির পিতা—যিনি নিজেকে তরুণীর স্বামী হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন—এই নিষ্ঠুর কাজটি করেছেন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির বরাত দিয়ে জানা যায়, ঘটনাটি ঘটেছে মহারাষ্ট্রের পারভানি জেলার পাটরি-সেলু সড়কে, মঙ্গলবার (১৪ জুলাই) সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে। ওই তরুণী এবং তার সঙ্গী পুনে থেকে পারভানির উদ্দেশ্যে সান্ত প্রয়াগ ট্রাভেলসের একটি স্লিপার কোচে ভ্রমণ করছিলেন।
বাস চলার সময় গর্ভবতী তরুণীর প্রসবব্যথা শুরু হলে তিনি সেখানেই একটি পুত্রসন্তানের জন্ম দেন। পরে শিশুটিকে কাপড়ে জড়িয়ে বাসের জানালা দিয়ে ছুড়ে ফেলে দেওয়া হয় বলে জানিয়েছে স্থানীয় পুলিশ।
পথচারী এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, তিনি দেখতে পান বাস থেকে কাপড়ে মোড়া কিছু একটা বাইরে ফেলা হয়েছে। সন্দেহ হলে তিনি পুলিশে খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নবজাতকের মরদেহ উদ্ধার করে।
পুলিশ জানিয়েছে, তরুণীর নাম ঋত্বিকা ধোরে। তার সঙ্গে থাকা ব্যক্তির নাম আলতাফ শেখ। তারা নিজেদের স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দিলেও এর কোনো বৈধ প্রমাণ দেখাতে পারেননি। জিজ্ঞাসাবাদে তারা স্বীকার করেছেন, শিশুটিকে লালন-পালনের সামর্থ্য না থাকায় তারা এমন কাণ্ড ঘটিয়েছেন।
বাসচালক জানিয়েছেন, বাসটি স্লিপার কোচ হওয়ায় ভেতরের উপরের ও নিচের বার্থগুলো আলাদা, তাই তিনি শিশুর প্রসব বা ফেলে দেওয়ার বিষয়টি বুঝতে পারেননি। তবে জানালা দিয়ে কিছু পড়তে দেখেছিলেন। জিজ্ঞেস করলে আলতাফ জানান, তার স্ত্রী বমি করেছেন।
ঘটনার পর ঋত্বিকাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং দুজনকে আটক করা হয়।
মামলার তদন্ত করছে পাটরি থানার পুলিশ। ভারতীয় দণ্ডবিধির নতুন ফৌজদারি ধারাবাহিকতা (বিএনএস) অনুযায়ী ৯৪(৩) ও ৯৪(৫) ধারায়, গোপনে নবজাতককে ফেলে দিয়ে জন্ম গোপন করার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, শিশুটিকে যে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়েছে, তা স্পষ্ট এবং এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। তারা আরও জানিয়েছে, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ডিএম /সীমা
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: