অবিরাম বর্ষণে দিল্লি অচল, নদীর পানি ঢুকছে ঘরে-সড়কে
প্রকাশিত:
৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১২:৫৬
আপডেট:
৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৪:৫৮

অবিরাম বর্ষণে ভারতের রাজধানী দিল্লিতে যমুনা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে চলে গেছে। এতে ত্রাণকেন্দ্র প্লাবিত হয়েছে, ভেসে গেছে ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাট। বন্যাদুর্গত এলাকা থেকে শত শত মানুষকে উদ্ধার করেছে কর্তৃপক্ষ।
এছাড়া দিল্লিতে বন্যা সতর্কতা জারি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, অবিরাম বর্ষণে দিল্লিতে যমুনা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে উঠে গেছে। এতে ময়ুর বিহার ফেজ-১–সহ নিম্নাঞ্চলের ত্রাণকেন্দ্রগুলো বৃহস্পতিবার প্লাবিত হয়েছে।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার সকাল ৭টায় দিল্লির পুরোনো রেল সেতুতে যমুনার পানি ছিল ২০৭.৪৮ মিটার। রাত ২টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত পানি একই মাত্রায় থাকলেও সকাল থেকে সামান্য বৃদ্ধি পেয়েছে।
এদিকে প্রবল বৃষ্টির কারণে দিল্লিতে বন্যা সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এদিন আলিপুর এলাকায় সড়কের একাংশ ধসে যায়। সিভিল লাইনস অঞ্চলে গাড়ি ডুবে যায়, ভবন প্লাবিত হয়। কাশ্মিরি গেটের বিভিন্ন অংশেও পানি ঢুকে পড়েছে।
বুধবার বিকেলের বৃষ্টিতে দিল্লি ও এনসিআরে যানজট ও জলাবদ্ধতা ব্যাপক আকার ধারণ করে। যমুনার পানি বৃদ্ধির প্রভাব সবচেয়ে বেশি দেখা গেছে নদীর তীরবর্তী এলাকায়। সেখানে রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি ও ত্রাণকেন্দ্র প্লাবিত হয়েছে।
এছাড়া লোহাপুল এলাকায় তোলা ছবিতে দেখা গেছে, বন্যার পানি বাঁধ উপচে ত্রাণকেন্দ্রে ঢুকে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলগুলোর বাসিন্দাদের মধ্যে যমুনা বাজার ও যমুনা খাদার থেকে মানুষজনকে সরিয়ে নিয়েছে জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনী (এনডিআরএফ) ও স্থানীয় প্রশাসন।
এক্স–এ দেওয়া পোস্টে এনডিআরএফ জানায়, যমুনার পানি বিপৎসীমার ওপরে যাওয়ায় যমুনা বাজার, নাজাফগড় ও জইতপুরে উদ্ধার অভিযান চালানো হয়েছে। পাঁচজনকে উদ্ধার করা হয়, নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয় ৬২৬ জন মানুষ ও ১৩টি গবাদি পশুকে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আগামী কয়েক দিনও বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে। বৃহস্পতিবার বজ্রঝড় ও বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। ৫ ও ৬ সেপ্টেম্বরও মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে।
সর্বশেষ আপডেটে আবহাওয়া দপ্তর হরিয়ানার পানিপথ, সোনিপথ, গুরগাঁও, ফারিদাবাদ, পালওয়াল ও মেওয়াটে রেড অ্যালার্ট জারি করেছে। ঘণ্টায় ১৫ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রঝড়ের আশঙ্কা রয়েছে।
এছাড়া মধ্যপ্রদেশ, গুজরাট, পশ্চিম উত্তরপ্রদেশ, হিমাচল, জম্মু-কাশ্মিরসহ আরও কয়েকটি অঞ্চলে জারি হয়েছে অরেঞ্জ অ্যালার্ট।
এদিকে পাঞ্জাবে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। বুধবার পর্যন্ত মৃত্যু বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৭ জনে। ২৩টি জেলায় ১ লাখ ৭৫ হাজার হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে।
কর্মকর্তাদের মতে, ১৯৮৮ সালের পর এটিই সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা। রূপনগর ও পাটিয়ালা জেলায় সতর্কতা জারি করা হয়েছে, রাজ্যের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: