‘ট্রাম্পকে বিদায় করো’— প্রতিবাদ-বিক্ষোভে উত্তাল ওয়াশিংটন ডিসি
প্রকাশিত:
৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১০:৩৪
আপডেট:
৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৪:২৩

যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছেন কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী। তারা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে রাজধানীর রাস্তায় টহলরত বাহিনী প্রত্যাহারের দাবি জানান।
বিক্ষোভ থেকে “ট্রাম্পকে এখনই বিদায় করতে হবে” বলেও দাবি করা হয়েছে। রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড।
এদিকে ডেমোক্র্যাটদের নেতৃত্বাধীন অন্যান্য শহরেও দমনপীড়নের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ট্রাম্প। সোশ্যাল মিডিয়ায় দেওয়া এক পোস্টে তিনি শিকাগো থেকে অভিবাসীদের বহিষ্কারের হুমকি দেন। সেখানে মূলত ১৯৭৯ সালের ভিয়েতনাম যুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র “অ্যাপোক্যালিপস নাউ”-এর প্যারোডি করা হয়েছিল।
টিআরটি ওয়ার্ল্ড বলছে, ‘উই আর অল ডিসি’ শীর্ষক এ মিছিলে অংশ নেন অবৈধ অভিবাসী ও ফিলিস্তিনের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সমর্থকেরা। তারা ট্রাম্পের সমালোচনা করে বিভিন্ন স্লোগান দেন এবং পোস্টারে বিভিন্ন বার্তা লিখে আনেন। যার কয়েকটিতে লেখা ছিল— “ট্রাম্পকে এখনই বিদায় করতে হবে”, “ডিসিকে মুক্ত করো”, “স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলো”।
অ্যালেক্স লফার নামে এক বিক্ষোভকারী বলেন, “আমি এসেছি ডিসির দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে। আমরা কর্তৃত্ববাদী শাসনের বিরোধিতা করছি। ফেডারেল পুলিশ ও ন্যাশনাল গার্ডকে রাস্তা থেকে সরাতে হবে।”
ট্রাম্প দাবি করেন, অপরাধ নিয়ন্ত্রণে আনতেই গত মাসে তিনি সেনা মোতায়েন করেছেন, যাতে “আইন, শৃঙ্খলা ও জননিরাপত্তা” পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়।
এ ছাড়া তিনি রাজধানীর মেট্রোপলিটন পুলিশকে সরাসরি ফেডারেল নিয়ন্ত্রণে নেন এবং অভিবাসন ও শুল্ক প্রয়োগকারী সংস্থাসহ (আইসিই) বিভিন্ন ফেডারেল বাহিনীকে শহরের রাস্তায় নামান। সমালোচকদের মতে, এটি ফেডারেল ক্ষমতার অপব্যবহার।
কিন্তু বিচার বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে ওয়াশিংটনে সহিংস অপরাধ ৩০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমেছে।
ন্যাশনাল গার্ড সাধারণত যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি অঙ্গরাজ্যের গভর্নরের অধীনে থাকে। তবে ডিসি ন্যাশনাল গার্ড সরাসরি প্রেসিডেন্টের অধীনে। গত মঙ্গলবার ট্রাম্প বলেন, তিনি শিকাগোতেও ন্যাশনাল গার্ড পাঠাবেন। দেশের তৃতীয় বৃহত্তম এ শহরে সামরিকায়নের প্রচেষ্টা স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আইনি সংঘাত সৃষ্টি করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
ইলিনয়ের গভর্নর জেবি প্রিটজকার জানান, সাংবাদিকদের কাছ থেকে তিনি শুনেছেন, ট্রাম্প প্রশাসন ইতোমধ্যে আইসিই এজেন্ট ও সামরিক যান শিকাগোতে পাঠিয়েছে এবং আরও পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
কেসি নামে একজন প্রতিবাদকারী বলেন, “ডিসিতে যা করছে, অন্য একনায়কতান্ত্রিক সরকারগুলোও তাই করে থাকে। এখন যদি মানুষ সহ্য করে, তবে তারা ধীরে ধীরে অন্য জায়গায়ও একই কাজ করবে। তাই দেরি হওয়ার আগেই থামাতে হবে।”
বর্তমানে ছয়টি রিপাবলিকান নেতৃত্বাধীন অঙ্গরাজ্য থেকে আসা সৈন্যসহ দুই হাজারের বেশি সেনা ওয়াশিংটনে টহল দিচ্ছে। তাদের মিশন কবে শেষ হবে তা পরিষ্কার নয়। তবে সেনাবাহিনী ডিসিতে ন্যাশনাল গার্ডের দায়িত্ব ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত বাড়িয়েছে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: