নেপালে দেখামাত্র গুলির নির্দেশ, নিহত বেড়ে ১৮
প্রকাশিত:
৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৯:২৫
আপডেট:
৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০০:৩৪

নেপালে ফেসবুক, ইউটিউবসহ ২৬টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্ম নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে দেশটির প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি নেতৃত্বাধীন সরকার। এর প্রতিবাদে সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) সকালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে শুরু হওয়া শন্তিপূর্ণ বিক্ষোভ ভয়বহ সহিংসতায় রুপ নিয়েছে। হাজার হাজার বিক্ষোভকারী দেশটির পার্লামেন্ট ভবনে ঢুকে তাণ্ডব চালিয়েছে। বিক্ষোভ দমনে কাঠমান্ডু বিভিন্ন স্থানে কারফিউ এবং বিক্ষোভকারীদের দেখামাত্র গুলি করার নির্দেশ জারি করেছে স্থানীয় প্রশাসন।
নেপাল সেনাবাহিনীর মুখপাত্র সহকারী লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাজারাম বাসনেত বলেছেন, স্থানীয় প্রশাসন আইন- ২০২৮ এর বিধান অনুসারে জেলা নিরাপত্তা কমিটির সুপারিশে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
এদিকে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিমালিয়ান জনিয়েছে, নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে ১৮ জনে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও ২০০ জনেরও বেশি বিক্ষোভকারী।
প্রতিবেদন অনুসারে, কাঠমান্ডুতে ১৬ জন এবং আরেক শহর ইটাহারিতে দুজন নিহত হয়েছেন। এরমধ্যে ট্রমা সেন্টার ৭ জন, এভারেস্ট হাসপাতাল ৩ জন, সিভিল হাসপাতাল ৩ জন, কাঠমান্ডু মেডিকেল কলেজ ২ জন এবং ত্রিভুবন বিশ্ববিদ্যালয় টিচিং হাসপাতাল ১ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে।
অন্যদিকে বিপুল সংখ্যক মানুষ হাসপাতালগুলোতে আসার কারণে আহতদের সঠিক সংখ্যা এখনো অনিশ্চিত, তবে ধারণা করা হচ্ছে এটি ২০০ জনেরও বেশি। আহতদের মধ্যে বিক্ষোভকারী, নিরাপত্তা কর্মী এবং সাংবাদিকও রয়েছেন।
সিভিল সার্ভিস হাসপাতালের মেডিকেল ডিরেক্টর দীপক পাউডেল জানিয়েছেন, শুধুমাত্র ওই হাসপাতালেই একশ জনেরও বেশি আহত ব্যক্তিকে আনা হয়েছিল। তাদের অনেকেই রাবার বুলেটে আহত হয়েছেন।
দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় হাসপাতালগুলোকে আহত সকল বিক্ষোভকারীকে বিনামূল্যে চিকিৎসা প্রদানের নির্দেশ দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, নেপালে সুপ্রিম কোর্টের দেওয়া এক নির্দেশনা অনুযায়ী গত ২৮ আগস্ট দেশটির মন্ত্রিসভা সংশ্লিষ্ট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কোম্পানিগুলোকে সাত দিনের মধ্যে নিবন্ধন, কোম্পানিগুলোকে দেশটিতে নিজেদের অফিস এবং একজন অভিযোগ নিষ্পত্তি ও কমপ্লায়েন্স কর্মকর্তা নিয়োগ করার নির্দেশ দেয়। এর জন্য ৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল।
তবে অধিকাংশ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম সরকারের এই নির্দেশ মানেনি। ফলে নির্ধারিত সময়সীমা শেষ হওয়ার পর গত ৪ সেপ্টেম্বর ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ, ইউটিউব, এক্স, রেডিট এবং লিংকডইনের মতো ২৬টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ওপর সরকারি নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করে দেশটির যোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়।
শুধু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধের সিদ্ধান্তই এই বিক্ষোভের একক কারণ নয়, বহু তরুণ বিক্ষোভকারীর কাছে এই নিষেধাজ্ঞা ছিল সরকারের দুর্নীতির বিরুদ্ধে জমে থাকা দীর্ঘ অসন্তোষের বিস্ফোরণ।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া, দ্য হিমালিয়ান
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: