নেপাল : বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে রাজধানীসহ ৩ জেলায় কারফিউ জারি
প্রকাশিত:
৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১১:২০
আপডেট:
৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৭:৩১

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অ্যাপসে সরকারি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহর এবং দুর্নীতি বন্ধের দাবিতে রোববার থেকে যে বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল নেপালে, তা এখন রাজধানী কাঠমান্ডুর বাইরে অন্যান জেলাতেও ছড়িয়ে পড়ার পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে। জন-উত্তেজনা ঠেকাতে তাই কাঠমান্ডু. ললিতপুর এবং ভক্তপুর— তিন জেলায় কারফিউ জারি করেছে সরকার।
পৃথক পৃথক বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে কাঠমান্ডু, ললিতপুর এবং ভক্তপুর জেলা প্রশাসন কার্যালয়।
গতকাল রাতে জারি করা হয়েছে কারফিউ। জেলা প্রশাসনের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পরবর্তী আদেশ না আসা পর্যন্ত কারফিউ অব্যাহত থাকবে।
প্রসঙ্গত, গত বছর নেপালের সুপ্রিম কোর্ট দেশটিতে সক্রিয় সামাজিক যোগাযোগমগুলোকে সরকারিভাবে নিবন্ধিত হওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। হাইকোর্টের সেই নির্দেশের ভিত্তিতে প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলির নেতৃত্বাধীন সরকার দেশে সক্রিয় সামাজিক যোগাযোগামাধ্যমগুলোকে নিবন্ধনের জন্য গত ২৮ আগস্ট থেকে ৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল।
কিন্তু নির্ধারিত সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ার পরও সরকারিভাবে নিবন্ধন না করায় ফেসবুক, এক্স, ইনস্টাগ্রাম, ইউটিউবসহ ২৬টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা দেয় সরকার। গত ৪ সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর হয়েছে এ নিষেধাজ্ঞা।
এদিকে, সরকারের এই নিষেধাজ্ঞা ব্যাপকভাবে ক্ষুব্ধ করে দেশটির স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া শিক্ষার্থী এবং তরুণ প্রজন্মকে। জেন জি নামে পরিচিত এই তরুণ প্রজন্ম গত ৪ সেপ্টেম্বর থেকেই সরকারের এই নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছিল।
অবশেষে গতকাল রোববার থেকে শুরু হয় আন্দোলন এবং আজ সোমবার তা রীতিমতো উত্তাল হয়ে ওঠে। রাজধানী কাঠমান্ডুতে কারফিউ অমান্য করে বিক্ষোভে নেমেছেন শিক্ষার্থী-জনতা। শুরুর দিকে এই বিক্ষোভে শীর্ষ দাবি হিসেবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অ্যাপের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়টি এলেও গতকাল এটি প্রায় পুরোপুরি সরকারবিরোধী আন্দোলনে মোড় নেয়। কাঠমান্ডুর বাণেশ্বরসহ বিভিন্ন এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে এ পর্যন্ত নিহত হন ২০ জন, আহত হয়েছেন আরও শতাধিক।
বিক্ষোভকারীদের দাবির মুখে গতকাল পদত্যাগ করেছেন নেপালের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রমেশ লেখক। প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলিরও পদত্যাগের দাবি ওঠা শুরু করেছিল।
গতকাল রাতে মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠক ডেকেছিলেন অলি। সেই বৈঠকে ২৬টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অ্যাপের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের শান্ত হওয়ার আহ্বানও জানানো হয়েছে।
তবে সেই আহ্বানে আন্দোলনকারীরা সাড়া দেবেন কি না— তা এখনও অনিশ্চিত।
সূত্র : কাঠমান্ডু পোস্ট
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: