বুধবার, ৩রা ডিসেম্বর ২০২৫, ১৯শে অগ্রহায়ণ ১৪৩২


গুম-খুনের মামলা

দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে এই বিচার নয় : চিফ প্রসিকিউটর


প্রকাশিত:
৩ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৭:০১

আপডেট:
৩ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৭:৪৭

ছবি : সংগৃহীত

দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে এই বিচার নয় বলে উল্লেখ করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।

বুধবার (৩ ডিসেম্বর) দুপুরে ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে প্রেস ব্রিফিংয়ে গুমের মামলায় সেনা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের শুনানি শেষে এ মন্তব্য করেন তিনি।

চিফ প্রসিকিউটর বলেন, র‍্যাবের যেসব কর্মকর্তাকে এখানে আসামি করা হয়েছে তাদের ভার্চ্যুয়ালি শুনানির সুযোগ দিতে একটি আবেদন করেছিলেন একজন আইনজীবী। কিন্তু আদালত তা নামঞ্জুর করেছেন। আসামিপক্ষের আইনজীবীরা সেনাবাহিনীর সঙ্গে এই বিচারকে মুখোমুখি করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। যা এই শুনানির সময় আমরা লক্ষ্য করেছি।

তাজুল ইসলাম বলেন, তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত বলেছেন যে এই বিচার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে নয়। আমরাও সুস্পষ্টভাবে বলেছি, এটি দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বিচার নয়। কারণ, সামরিক শৃঙ্খলার বাইরে থাকা অবস্থায় আসামিরা এসব মারাত্মক অপরাধ করেছেন। তখন তারা র‍্যাবে ছিলেন। এ সব অপরাধকে মানবতাবিরোধী অপরাধ বলা হয়। সুতরাং তাদের পক্ষে বিশেষ সুবিধা দেওয়ার প্রার্থনা খারিজ করেছেন আদালত।

আদালত বলেন, আইনের দৃষ্টিতে সব নাগরিকই সমান। এছাড়া তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো গুরুতর। তাই সবাইকে সমান সুবিধা দেওয়া হবে। বিচারের সাজাপ্রাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত তারা ইনোসেন্ট বিবেচিত হবেন। কিন্তু আসামি হিসেবে অন্যরা যে ধরনের সুবিধা ভোগ করেন, এর বাইরে নতুন কিছু পাবেন না তারা।

আওয়ামী লীগের দীর্ঘ শাসনামলে র‍্যাবের টিএফআই সেলে বিরোধী মতাদর্শের লোকদের গুম-নির্যাতনের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের এ মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের ওপর শুনানি শেষ করেছে প্রসিকিউশন। তবে আসামিপক্ষে অব্যাহতির আবেদন করা হয়েছে। সময় চাওয়ার প্রেক্ষিতে পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ১৪ ডিসেম্বর দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল।

এর আগে সকাল ১০টার পর ঢাকার সেনানিবাসের বিশেষ কারাগার থেকে বাংলাদেশ জেল-প্রিজন ভ্যান লেখা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত সবুজ রঙের গাড়িতে করে গ্রেপ্তার ১০ সেনা কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করে পুলিশ। তারা হলেন- র‍্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহাবুব আলম, কর্নেল কেএম আজাদ, কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন, কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান (অবসরকালীন ছুটিতে), র‍্যাবের গোয়েন্দা শাখার সাবেক পরিচালক কর্নেল মো. মশিউর রহমান, লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন ও লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. সারওয়ার বিন কাশেম।

পলাতকরা হলেন- সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার প্রতিরক্ষাবিষয়ক সাবেক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি বেনজির আহমেদ, র‍্যাবের সাবেক ডিজি এম খুরশিদ হোসেন, র‍্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ব্যারিস্টার হারুন অর রশিদ ও র‍্যাবের সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) মো. খায়রুল ইসলাম।

এর আগে, ২৩ নভেম্বর এ মামলার অভিযোগ গঠন নিয়ে শুনানির জন্য আজকের দিন ধার্য করা হয়। ২২ অক্টোবর সেনা হেফাজতে থাকা ১০ কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। শুনানি শেষে তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।

একই সঙ্গে পলাতক আসামিদের হাজিরের জন্য সাতদিনের মধ্যে দুটি জাতীয় পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে নির্ধারিত তারিখে হাজির না হওয়ায় তাদের পক্ষে স্টেট ডিফেন্স নিয়োগ দেন আদালত। ৮ অক্টোবর এ মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে প্রসিকিউশন। পরে অভিযোগ আমলে নেন ট্রাইব্যুনাল।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected], [email protected]
সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top