কপ ২৯ : সামগ্রিক মূল্যায়ন এবং জলবায়ু অর্থায়ন
প্রকাশিত:
২৬ নভেম্বর ২০২৪ ১২:১১
আপডেট:
৮ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৬:৫৯
আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের ২৯তম জলবায়ু সম্মেলন (কপ ২৯) জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলার লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ একটি পদক্ষেপ। এই সম্মেলনে রাষ্ট্রপ্রধান, বিজ্ঞানী, নীতিনির্ধারক, ব্যবসায়ী এবং উদ্যোক্তারা অংশ নেন। যদিও যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও ফ্রান্সের মতো বড় কার্বন নিঃসরণকারী দেশগুলোর রাষ্ট্রপ্রধানরা অনুপস্থিত ছিলেন, তাদের উপস্থিতি এই আলোচনায় বিশেষ গুরুত্ব বহন করতো।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বৈশ্বিক উষ্ণতার বৃদ্ধি ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখতে হলে ২০৩০ সালের মধ্যে গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমন ৪৩ শতাংশ কমাতে হবে। এই জলবায়ু সম্মেলনে ধনী দেশগুলো দীর্ঘ তেত্রিশ ঘণ্টার আলোচনার পর উন্নয়নশীল দেশগুলোর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় ৩০০ বিলিয়ন ডলার সহায়তার অঙ্গীকার করেছে।
জাতিসংঘ জলবায়ু সংস্থার প্রধান সাইমন স্টিয়েল (Simon Stiell) একে ‘কঠিন যাত্রা’ বলে আখ্যা দেন। ক্ষতিগ্রস্ত ছোট দ্বীপ রাষ্ট্রগুলো ৩০০ বিলিয়ন ডলারের এই অঙ্গীকারকে দুর্বল পদক্ষেপ মনে করে হতাশা প্রকাশ করে; তাদের দাবি, জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবিলায় আরও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। তবে জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে সরে আসার বিষয়ে কোনো চুক্তি হয়নি।
সম্মেলনের প্রথম দিনে, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি আশা করা হয়েছিল। প্যারিস চুক্তির আওতায় জলবায়ু অর্থায়ন, অভিযোজন এবং বৈশ্বিক মূল্যায়নে গুরুত্ব দেওয়া হয়। প্রায় ২০০ দেশের নেতারা দরিদ্র দেশগুলো আরও অর্থ সহায়তা প্রদানের উপায় নিয়ে আলোচনা করেছেন।
ইউএনইপি রিপোর্টে বলা হয়, উন্নয়নশীল দেশগুলোর বর্তমান জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় দৈনিক ১ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন, তবে তারা পাচ্ছে মাত্র ৭৫ মিলিয়ন ডলার। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস (António Guterres) একে সংকট বলে উল্লেখ করেন এবং দ্রুত অভিযোজনের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন। সম্মেলনের প্রেসিডেন্ট মুখতার বাবায়েভ (Mukhtar Babayev) কপ ২৯-কে ‘প্যারিস চুক্তির সত্যের মুহূর্ত’ বলে অভিহিত করেন।
জাতিসংঘের জলবায়ু প্রধান সাইমন স্টিয়েল (Simon Stiell) জলবায়ু সংকটে দুর্বল দেশগুলোর ক্ষতির কথা তুলে ধরেন। কপ ২৯-এ নতুন বৈশ্বিক আর্থিক লক্ষ্য নির্ধারণ এবং কার্বন বাজারের নিয়ম চূড়ান্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে জীবাশ্ম জ্বালানি সংস্থাগুলোর ভূমিকা ও স্বার্থের দ্বন্দ্ব আলোচনার ফলাফলকে বাধাগ্রস্ত করেছে। তবে ট্রাম্পের পুনঃনির্বাচনের সম্ভাবনা মার্কিন জলবায়ু নীতির জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে বলে বিশেষজ্ঞরা মত প্রকাশ করেন।
কপ ২৯-এর দ্বিতীয় দিন সিভিল সোসাইটি গ্রুপগুলো কার্বন বাজারের ট্রেডিং প্রক্রিয়া নিয়ে সমালোচনা করেছে। তারা মনে করেছিল, এই প্রক্রিয়া দক্ষিণের দরিদ্র জনগোষ্ঠী, আদিবাসী এবং ক্ষুদ্র কৃষকদের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে।
গ্লোবাল উইটনেসের তথ্যমতে, ২০২২ সালে তেল ও গ্যাস শিল্প ৪ ট্রিলিয়ন ডলার মুনাফা করেছিল, যা জলবায়ু ক্ষতির বার্ষিক ব্যয়ের ১০ গুণ। তবে জাতিসংঘের লস অ্যান্ড ড্যামেজ তহবিলে এটির ০.২শতাংশেরও কম বরাদ্দ হয়েছিল। মার্কিন দূত জন পোডেস্টা (John Podesta) দাবি করেছিলেন যে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের জলবায়ু নীতি মন্থর করলেও তা স্থগিত করা যাবে না। বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আইআরএ আইন ক্লিন এনার্জি খাতে বিনিয়োগ চালিয়ে যাবে।
ইউএনএইচসিআরের এক প্রতিবেদনে জলবায়ু সংকটের কারণে বাস্তুচ্যুত ১২০ মিলিয়ন মানুষের দুর্দশা প্রকাশিত হয়। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার (Keir Starmer) ২০৩৫ সালের মধ্যে ৮১ শতাংশ কার্বন নির্গমন কমানোর ঘোষণা দেন। কাজাখস্তান ২০৬০ সালের মধ্যে কার্বন নিরপেক্ষতা অর্জনের প্রতিশ্রুতি দেয়। অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশের জলবায়ু সংকটের অগ্রাধিকার চূড়ান্ত ঘোষণায় অন্তর্ভুক্তির জন্য প্রচেষ্টা চালান।
কপ ২৯ জলবায়ু সম্মেলনের তৃতীয় দিনে প্রকাশিত তথ্যে জানা যায়, ২০২৪ সালে জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে নির্গমন ২০১৫ সালের তুলনায় ৮ শতাংশ বেশি হবে, যদিও নির্গমন কমানোর প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। ২০২৩ সালে কপ ২৮-এ দেশগুলো নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে এগিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেও বাস্তবে পরিবর্তনের লক্ষণ দেখা যায়নি।
১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা লক্ষ্যমাত্রা ধরে রাখতে এখনো সুযোগ আছে, তবে দ্রুত পদক্ষেপ জরুরি। এ সময় উন্নয়নশীল দেশগুলোর নেতারা জলবায়ু তহবিল বাড়িয়ে ১.৩ ট্রিলিয়ন ডলার করার প্রস্তাব দেন। সুইডেন লস অ্যান্ড ড্যামেজ তহবিলে ২০ মিলিয়ন ডলার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ২০৩৫ সালের মধ্যে ৮১ শতাংশ নির্গমন কমানোর লক্ষ্য ঘোষণা করেন এবং ১০০ শতাংশ ক্লিন এনার্জি সরবরাহ নিশ্চিতের পরিকল্পনা করেন। অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস জলবায়ু সমস্যার সমাধানে পানির সর্বোত্তম ব্যবস্থাপনার গুরুত্ব দেন। তিনি নেপাল ও ভুটানের জলবিদ্যুৎ ব্যবহার করে একটি দক্ষিণ এশিয়া গ্রিড তৈরির আহ্বান জানান।
এছাড়া তিনি তিন শূন্য নীতির মাধ্যমে নতুন সভ্যতা তৈরির কথা বলেন। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস (António Guterres) বলেন, ২০২৪ সাল সবচেয়ে উষ্ণ বছর হতে পারে, তবে ক্লিন এনার্জির বিপ্লব থামবে না। স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ (Pedro Sánchez) জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে দুর্যোগের তীব্রতা কমানোর ওপর জোর দেন।
২৬তম গ্লাসগো সম্মেলনে লস অ্যান্ড ড্যামেজ ফান্ড কার্যকর করার আলোচনা শুরু হলেও ২৯তম কপ সম্মেলনেও তা বাস্তবায়নে কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়নি। এবারের কপকে ‘ক্লাইমেট ফাইন্যান্স কপ’ নামে অভিহিত করা হলেও উন্নত দেশগুলো ট্রিলিয়ন ডলারের তহবিল নিয়ে একমত হয়নি।
ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলো নতুন ও অতিরিক্ত তহবিল, ঋণের বদলে অনুদান এবং সুস্পষ্ট ফান্ড সংজ্ঞার দাবি করলেও সেগুলো উপেক্ষিত রয়ে গেছে। আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট জাভিয়ের মিলেই (Javier Milei) জলবায়ু সংকটকে ‘সমাজতান্ত্রিক মিথ্যা’ বলে উল্লেখ করে কপ ২৯ থেকে তার প্রতিনিধিদের প্রত্যাহারের নির্দেশ দেন, যা আর্জেন্টিনার বাণিজ্যিক ও পরিবেশগত অবস্থান ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
ফ্রান্সকে নিয়ে আজারবাইজানের রাষ্ট্রপতির মন্তব্যের পর ফ্রান্সের পরিবেশ মন্ত্রী সম্মেলনে যোগদান বাতিল করেন। বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস ভোগবিলাস কমিয়ে একটি নতুন সংস্কৃতির আহ্বান জানান। তিনি উল্লেখ করেন, দরিদ্র দেশগুলোর অর্থ চাইতে বাধ্য করা হচ্ছে, যা অপমানজনক। পাকিস্তান এবং ইরানের নেতারাও তার বক্তব্য সমর্থন করেন।
কপ ২৯-এ আর্থিক আলোচনা ধীরগতিতে এগিয়েছে, যা ১০০ বিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতি প্রতিস্থাপনে ব্যর্থ। জীবাশ্ম জ্বালানির ভর্তুকি ১.৭ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে, যা নবায়নযোগ্য শক্তির অগ্রগতিতে বাধা সৃষ্টি করছে।
কপ ২৯ এর প্রধান লক্ষ্য ছিল লস অ্যান্ড ড্যামেজ ফান্ড গঠন, নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি এবং বৈশ্বিক তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ নেওয়া। তবে, এই লক্ষ্যগুলোর বাস্তবায়নে তেমন কোনো পদক্ষেপ দেখা যায়নি। জীবাশ্ম জ্বালানি উৎপাদনকারী দেশগুলো এই সম্মেলনে বেশি প্রভাব ফেলেছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর জন্য ক্ষতিপূরণের সম্ভাবনা কমে গেছে।
পরবর্তী সম্মেলনে, ধনী দেশগুলো লস অ্যান্ড ড্যামেজ ফান্ডে অর্থায়ন করবে কিনা তা এখন বড় প্রশ্ন। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলন শুধুমাত্র সেই দেশগুলোয় অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত যারা জীবাশ্ম জ্বালানি লবিংয়ের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেয়।
কপ ২৯-এ জীবাশ্ম জ্বালানি লবিস্টদের উপস্থিতি ব্যাপক ছিল, যার মধ্যে ১৩২টি জীবাশ্ম জ্বালানি কোম্পানির প্রতিনিধিকে অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। জীবাশ্ম জ্বালানি সংশ্লিষ্ট প্রায় ১,৭৭৩ জন লবিস্ট সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেছিল, যা অন্যান্য দেশের প্রতিনিধিদের তুলনায় অনেক বেশি।
দিল্লি ভিত্তিক সেন্টার ফর সায়েন্স অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টের তথ্য অনুযায়ী, ১৮৭০ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য, জাপান, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া বিশ্ব জনসংখ্যার ১৫ শতাংশ ধারণ করলেও বায়ুমণ্ডলে প্রায় ৬০ শতাংশ কার্বন-ডাই-অক্সাইড নির্গমনে অবদান রেখেছে। এই পরিসংখ্যানগুলো ধনী দেশগুলোর জলবায়ু ঋণের পরিণতি দরিদ্র দেশগুলোর জন্য বিশাল বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
কপ ২৯-এর আয়োজক আজারবাইজান জীবাশ্ম জ্বালানি উৎপাদনকারী দেশগুলো বেশি প্রাধান্য দিয়েছে, যার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর ক্ষতিপূরণ আদায়ের সম্ভাবনা কমে গেছে। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, জলবায়ু সম্মেলন ভবিষ্যতে কেবল সেই দেশগুলোয় হওয়া উচিত যারা জলবায়ু পরিবর্তন রোধে সক্রিয় ভূমিকা রাখে।
বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় দরিদ্র দেশগুলোর জন্য প্রতি বছর ১ ট্রিলিয়ন ডলার প্রয়োজন, যার এক-তৃতীয়াংশ ধনী দেশগুলোর কাছ থেকে আসা উচিত। কিছু অর্থনীতিবিদ জলবায়ু তহবিল সংগ্রহের জন্য নতুন উৎস যেমন প্লাস্টিক উৎপাদন শুল্ক বা সম্পদ কর প্রস্তাব করেছেন।
তবে এবারও হতাশাজনক ফলাফল নিয়ে শেষ হয়েছে কপ ২৯ সম্মেলন। ৮৫,০০০ প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করলেও, সম্মেলন শেষে লস অ্যান্ড ড্যামেজ ফান্ড, নতুন যৌথ পরিমাণগত লক্ষ্য (এনসিকিউজি) ইত্যাদির মতো বিষয়গুলোয় ঐকমত্যে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি।
তহবিল বরাদ্দ ও তহবিলের কাঠামো নিয়ে তীব্র বিতর্ক সৃষ্টি হয় এবং উন্নয়নশীল দেশগুলো অভিযোগ করে যে, ধনী দেশগুলো তাদের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থায়ন থেকে পিছু হটেছে। ২৫০ বিলিয়ন ডলারের বরাদ্দ উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য যথেষ্ট ছিল না। পাশাপাশি, কপ ২৯-এ তহবিলের খসড়া প্রস্তাবও প্রত্যাখ্যাত হয়। কপ ৩০-এ জলবায়ু অর্থায়ন ও তহবিলের কার্যকর ব্যবস্থার জন্য দক্ষিণের দেশগুলো ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানায়।
জাতিসংঘের ২৯তম জলবায়ু সম্মেলনের আলোচনা থেকে বোঝা গেছে যে, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক নীতিমালা ও সহযোগিতার ক্ষেত্রে এখনো অনেক ত্রুটি রয়ে গেছে। বিশেষত, কার্বন বাজারের আর্টিকেল ৬-এর অধীনে নির্গমন হ্রাসের নিয়ম প্রণয়নে স্বচ্ছতার অভাব এবং কার্যকর জবাবদিহিতার ঘাটতি ছিল স্পষ্ট। কার্বন বাজারের জন্য প্রস্তাবিত নিয়মগুলো আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মানসম্পন্ন কার্বন ক্রেডিট বাণিজ্যের নিশ্চয়তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে, যা জলবায়ু পরিবর্তনের কার্যকর সমাধানকে দুর্বল করেছে।
প্যারিস চুক্তি সত্ত্বেও উন্নত দেশগুলোর সহযোগিতার অভাব এবং জলবায়ু অর্থায়নে অগ্রগতির ধীরগতি, সম্মেলনের সফলতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। ২০২৩ সালে ৫৭.৪ গিগাটন গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমনের তথ্য জলবায়ু সংকটের ভয়াবহতা আরও স্পষ্ট করেছে। এর ফলে দরিদ্র ও উন্নয়নশীল দেশগুলো বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বাংলাদেশসহ জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলো প্রাকৃতিক দুর্যোগের মোকাবিলায় আর্থিক সহায়তা ও জলবায়ু সহনশীল প্রযুক্তি প্রয়োজনের কথা জানিয়েছে। সম্মেলনে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ওপর জোর দেওয়া হলেও জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা হ্রাসে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ হয়নি।
সার্বিকভাবে, কপ ২৯ সম্মেলন কিছু প্রস্তাবনায় অগ্রগতি আনলেও কার্যকর পরিবর্তনের জন্য স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার সুযোগ হাতছাড়া হয়েছে। উন্নত দেশগুলোর সক্রিয় ভূমিকা ছাড়া উন্নয়নশীল দেশগুলোর পক্ষে এই সংকট মোকাবিলা করা অসম্ভব।
লেখকঃ ডিন, বিজ্ঞান অনুষদ; অধ্যাপক, পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ, স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ; যুগ্ম সম্পাদক, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) এবং চেয়ারম্যান, বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস)
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: