মঙ্গলবার, ২রা সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৮ই ভাদ্র ১৪৩২


দাঁড়িয়ে সম্মান জানানোর বিষয়ে ইসলামে যা বলা হয়েছে


প্রকাশিত:
২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৭:২৫

আপডেট:
২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ২৩:২৫

ছবি সংগৃহীত

ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিধান হলো, মানুষকে তার পদমর্যাদা অনুযায়ী সম্মান করা। এক মুসলমানের সাথে অপর মুসলমানের দেখা হলে পরস্পরে সালাম বিনিময় করা মহানবী (সা.)-এর সুন্নত। মহানবী (সা.) বড়দেরকে শ্রদ্ধা করতে এবং ছোটদেরকে স্নেহ করতে বলেছেন। তবে তিনি দাঁড়িয়ে সম্মান জানানোর ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা করেছেন।

হজরত মুয়াবিয়া ইবনে আবু সুফিয়ান (রা.) বর্ণনা করেন, আমি নবীজি (সা.)-কে বলতে শুনেছি, ‘যে ব্যক্তি কামনা করে লোকজন দাঁড়িয়ে তাকে অভ্যর্থনা জানাক, সে যেন জাহান্নামে তার জায়গা বানিয়ে নেয়। (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস : ৫২২৯)

আরেক হাদিসে হজরত আনাস ইবনে মালেক (রা.) বর্ণনা করেন, ‘সাহাবিদের কাছে নবীজি (সা.)-এর চেয়ে প্রিয় কোনো ব্যক্তিত্ব ছিলেন না। তা সত্ত্বেও তারা তাকে দেখে দাঁড়াতেন না। কারণ, তারা জানতেন, তিনি এটি পছন্দ করেন না।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ২৭৫৪)

শায়খুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া (রহ.) বলেন, সাহাবিরা মহানবী (সা.)-কে দেখে সাধারণত দাঁড়াতেন না। তবে তিনি যখন সফর থেকে ফিরতেন, তখন অভ্যর্থনা জানাতে উঠে দাঁড়াতেন। অন্যদের বেলায়ও তারা এমনটি করতেন। খুলাফায়ে রাশেদিনের যুগেও কারও সম্মানে দাঁড়িয়ে যাওয়ার রীতি ছিল না। কিন্তু আজকাল অনেক মানুষ এমনটি করে থাকে, যা পরিহার করা উচিত।

যারা বড় বা নেতৃস্থানীয় তাদের উচিত হলো, নিজের অনুসারী ও অধীনস্থদের এই আচরণে অভ্যস্ত হতে না দেওয়া। তবে কেউ চাইলে সফর থেকে আগত ব্যক্তিকে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য যেতে পারে; এতে আগন্তুকের প্রতি আন্তরিকতা প্রকাশ পায়, যা তার হৃদয় ছুঁয়ে যায়।

যদি কোনো অঞ্চলের মানুষের অভ্যাস হয় আগন্তুককে দাঁড়িয়ে অভ্যর্থনা জানানো এবং কেউ তা না করলে আগন্তুক মনে করে তাকে অপমান করা হচ্ছে; এদিকে আবার সে অভ্যর্থনার সুন্নতসম্মত পদ্ধতি সম্পর্কেও অনবগত থাকে, তাহলে সেখানে দাঁড়িয়ে যাওয়াই উত্তম। কেননা এতে পারস্পরিক সম্পর্ক বজায় থাকে এবং হিংসা-বিদ্বেষ ও মনোমালিন্য দূর হয়।

যে ব্যক্তি সুন্নতসম্মত পদ্ধতি সম্পর্কে অবগত, তার প্রতি এভাবে সম্মান না জানানোর বিষয়টি অপমানজনক নয়। অবশ্য আগন্তুকের জন্য দাঁড়িয়ে যাওয়া নিষিদ্ধ দাঁড়ানোর অন্তর্ভুক্ত হয় না। কেননা হাদিসে যেটা বোঝানো হয়েছে সেটা হচ্ছে, সবাই দাঁড়িয়ে থাকবে আর একজন বসে থাকবে। কিন্তু এখানে তেমন হয় না। এখানে বরং মূল ব্যক্তিই দাঁড়ানো থাকে।

সারকথা হলো, সালাফদের রীতি ও আদর্শ অনুসরণ করার মাঝেই কল্যাণ। তবে যে ব্যক্তি এ ব্যাপারে কিছু জানে না এবং সে কারণে তাকে দাঁড়িয়ে সম্মান না জানালে যদি ফ্যাসাদ সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা থাকে, তবে তাকে দাঁড়িয়ে সম্মান জানানোতে কোনো সমস্যা নেই। কারণ সমস্যা দূর করতেই এখানে দাঁড়ানো হচ্ছে। (মাজমুউল ফাতাওয়া, ইবনে তাইমিয়া, খণ্ড : ১, পৃষ্ঠা : ৩৭৪-৩৭৬)



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected], [email protected]
সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top