টিকিট বিতর্ক নিয়ে শুরু ক্লাব বিশ্বকাপ
প্রকাশিত:
১৬ জুন ২০২৫ ১৬:১২
আপডেট:
১৬ জুন ২০২৫ ২৩:৪৭

প্রথমবারের মতো ৩২ দল নিয়ে ক্লাব বিশ্বকাপ। টুর্নামেন্টটি নিয়ে প্রচারণা ছিল বিশ্বমানের, মাঠ প্রস্তুত ছিল বর্ণাঢ্য উদ্বোধনের জন্য। কিন্তু আসরটির শুরুতেই আলোচনার কেন্দ্রে খেলাধুলা নয়, বরং টিকিট কেলেঙ্কারি ও দর্শক উপস্থিতি। উদ্বোধনী ম্যাচকে ঘিরে যে উন্মাদনা তৈরি করার কথা ছিল ফিফার, তা ঢেকে দেয় গ্যালারির টিকিট বিতর্ক। মায়ামির হার্ড রক স্টেডিয়ামের ধারণক্ষমতা ৬৫ হাজার। কিন্তু ম্যাচের কয়েক দিন আগেও টিকিট বিক্রির সংখ্যা ছিল মাত্র ২০ হাজার।
মূল কারণ বেশির ভাগ টিকিটের দাম ২০০ মার্কিন ডলারের ওপরে, যা সাধারণ দর্শকদের নাগালের বাইরে। এমন দামে ফুটবল দেখা অনেকের জন্য বিলাসিতা হয়ে দাঁড়ায়। ফিফা তখন বাধ্য হয় টিকিটের দাম ব্যাপকভাবে কমাতে। শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ প্যাকেজে মাত্র ২০ ডলারে একাধিক টিকিট দেওয়ার ঘোষণা আসে। মূল্যছাড়ের এই উদ্যোগের ফলেই শেষ পর্যন্ত প্রায় ৬০ হাজার দর্শক মাঠে আসে। সেটাও ম্যাচ শুরু হওয়ার বেশ খানিকক্ষণ পর ভরতে শুরু করে গ্যালারি। যদিও এর পেছনে কারণ হিসেবে আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কঠোর নিরাপত্তা ও বারবার চেকিং করে দর্শকদের মাঠে প্রবেশ করানো হয়েছে বলে দেরি হয়েছে গ্যালারি ভরতে। তবে এই উপচে পড়া ভিড় আসলে 'বিপণন সাফল্য' নয় বরং মূল্য নির্ধারণে বড়সড় ভুলের সংশোধন।
এতে করে প্রশ্ন উঠেছে ফিফা কি শুরুতেই দর্শকের আগ্রহ ও বাজার বাস্তবতা বিবেচনায় নেয়নি? খেলা দেখার আগ্রহ থাকলেও টিকিটের মূল্য নির্ধারণে এমন দূরত্ব সৃষ্টি করলে দর্শক আর মাঠমুখী হয় না, সেটাই এবার স্পষ্ট। অনেকে বলছেন, পুরো আয়োজনটাই সাজানো হয়েছে লিওনেল মেসিকে কেন্দ্র করে। ঘরোয়া বা মহাদেশীয় শিরোপা না জিতেও ইন্টার মায়ামিকে আমন্ত্রণ জানানো হয় শুধু মেসিকে খেলাতে। অথচ দর্শকের হৃদয় জয় করতে শুধু নাম বা ব্র্যান্ড নয়, দরকার বাস্তবসম্মত পরিকল্পনা। শুরুর এমন বিতর্ক ফিফার জন্য অস্বস্তিকর। প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফান্তিনোর নাম যেহেতু ক্লাব বিশ্বকাপের ট্রফিতেই খোদাই করা, এই টুর্নামেন্ট তার জন্য ব্যক্তিগতভাবে মর্যাদার ব্যাপারও বটে।
কিন্তু বাস্তবতা বলছে, সেই মর্যাদা এখন টিকিটের দামে ভরাডুবির হুমকিতে। এই মাঠে সবশেষ বড় ম্যাচ হয়েছিল ১১ মাস আগে, কোপা আমেরিকার ফাইনালে ঐ ম্যাচে আর্জেন্টিনা কলম্বিয়ার মুখোমুখি হয়েছিল। ম্যাচটিকে ঘিরে স্টেডিয়াম এলাকায় উৎসব প্রায় ট্র্যাজেডিতে রূপ নিচ্ছিল। কারণ, টিকিটবিহীন অনেক দর্শক জোরপূর্বক স্টেডিয়ামে ঢোকার চেষ্টা করে, যার ফলে খেলা শুরু হতে দেরি হয় ৮০ মিনিট। সেই ঘটনার কঠিন শিক্ষা নিয়েই এবার কোনো ঝুঁকি নেয়নি কর্তৃপক্ষ। স্টেডিয়ামের বাইরের সড়ক জুড়ে ছিল পুলিশ গাড়ি, সাইরেন বাজিয়ে চলছিল টহল। তবে এবার আর তেমন কোনো ঘটনা ঘটেনি।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: