জোলির সঙ্গে বিচ্ছেদ, প্রথমবার মুখ খুললেন ব্র্যাড পিট
প্রকাশিত:
২ জুন ২০২৫ ১১:২৪
আপডেট:
৪ জুন ২০২৫ ০৪:৩১

২০১৬ সালে যখন তাঁদের বিচ্ছেদের খবর প্রকাশ্যে আসে, ভক্তরা চমকে গিয়েছিলেন। অনেকে তো গণমাধ্যমের ‘ব্রেকিং নিউজ’দেখেও ব্র্যাড পিট আর অ্যাঞ্জেলিনা জোলির বিচ্ছেদের খবর বিশ্বাস করতে পারেননি। তবে সম্পর্ক চুকেবুকে গেলেও বিচ্ছেদ প্রসঙ্গ বারবার এড়িয়ে গেছেন ব্র্যাড। জোলি বিভিন্ন সময়ে কথা বললেও ব্র্যাডের কাছ থেকে সাড়া মেলেনি। অবশেষে জিকিউ সাময়ীকিতে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রথমবার জোলির সঙ্গে বিচ্ছেদ নিয়ে কথা বললেন অভিনেতা।
সেই ‘মিস্টার অ্যান্ড মিসেস স্মিথ’ সিনেমার সেটে প্রথম পরিচয়, সেখান থেকেই প্রেম। একসঙ্গে দুজন একই ছাদের নিচে থেকেছেন দীর্ঘ ১০ বছর। তারপর সন্তানদের অনুরোধে বিয়ে। তাঁরা ছিলেন হলিউডের ‘ড্রিম কাপল’, অ্যাঞ্জেলিনা জোলি-ব্র্যাড পিট জুটি। এ জুটিকে ডাকা হতো ‘ব্র্যাঞ্জেলিনা’। তবে এ সবকিছুই অতীত!
আট বছর ধরে চলতে থাকা তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদের প্রক্রিয়া গত বছরের ডিসেম্বরে আইনিভাবে চূড়ান্ত হয়। চূড়ান্ত বিচ্ছেদের পর প্রথম এ ব্যাপারে কথা বললেন অভিনেতা ব্র্যাড পিট। জিকিউ সাময়িকীকে ব্র্যাড পিট বলেন, অ্যাঞ্জেলিনা জোলির সঙ্গে তাঁর বিবাহবিচ্ছেদ তেমন কোনো বড় বিষয় নয়।
বিয়ের মাত্র দুই বছরের মাথায় ২০১৬ সালে অ্যাঞ্জেলিনা জোলি বিচ্ছেদের আবেদন করেন। তবে বিচ্ছেদ আইনিভাবে চূড়ান্ত হতে আট বছর লেগে যায়। বিষয়টি উল্লেখ করে ব্র্যাড বলেন, ‘দীর্ঘ আট বছরের আইনি লড়াই শেষে বিচ্ছেদ সম্পন্ন হলেও এটি ছিল কেবল একটি আনুষ্ঠানিকতা। এই বিচ্ছেদ মানসিকভাবে কঠিন ছিল। বিচ্ছেদ চূড়ান্ত হওয়ার পর কোনো বিশেষ অনুভূতি হয়নি। মনে হয়েছে, আইনি দিক থেকে প্রক্রিয়াটি শেষ হয়েছে।’
বিচ্ছেদের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের পর অ্যাঞ্জেলিনা জোলির টিমের পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়। যেখানে দীর্ঘদিন ধরে চলমান এ আইনি প্রক্রিয়ার কারণে যে ক্ষতি হয়েছে, তা উল্লেখ করা হয়। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আট বছরেরও বেশি সময় আগে অ্যাঞ্জেলিনা জোলি পিটের কাছ থেকে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করেছিলেন। জোলি ও তাঁর সন্তানেরা পিটের সঙ্গে ভাগ করা সব সম্পত্তি ছেড়ে দিয়েছিলেন। সেই সময় থেকে তিনি তাঁর পরিবারের মানসিক শান্তি ও সুস্থতার দিকে মনোযোগ দেন। দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়ায় জোলি বিপর্যস্ত, তবে প্রক্রিয়াটি শেষ হওয়ায় তিনি স্বস্তি বোধ করছেন।’
অ্যাঞ্জেলিনা জোলি ও ব্র্যাড পিটের ছয় সন্তান রয়েছে—ম্যাডক্স, প্যাক্স, জাহারা, শিলো এবং যমজ সন্তান নক্স ও ভিভিয়েন। বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, বিচ্ছেদের পরের বছরগুলোতে অভিনেতার তাঁর সন্তানদের সঙ্গে সম্পর্ক টানাপোড়েনপূর্ণ ছিল। ছয় সন্তানের মধ্যে তিনজন তাঁদের পদবি থেকে পিট বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানা গেছে।
এই সাক্ষাৎকারে ব্র্যাড নিজের ব্যক্তিগত জীবন নিয়েও কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘আমার ব্যক্তিগত জীবন সব সময়ই খবরের শিরোনামে থাকে। ৩০ বছর ধরে আমার জীবন সংবাদমাধ্যমের নজরদারিতে রয়েছে। আমার ব্যক্তিগত জীবনের ঘটনা নিয়ে কোনো না কোনোভাবে খবর হয়েছে।’ এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘ব্যাপারটা আমার জন্য সহজ ছিল না। এটি খুব বিরক্তিকর ছিল।’
তবে ব্র্যাড বলেন, নিজের বর্তমান জীবনে তিনি অনেক বেশি স্থির ও আত্মবিশ্বাসী। তাই বাইরের কথাবার্তা বা মিডিয়ার গুঞ্জন তাঁকে আর তেমন প্রভাবিত করে না। অ্যাঞ্জেলিনা জোলির সঙ্গে বিচ্ছেদের পর ব্র্যাড পিটের সঙ্গে একের পর এক নারীর নাম জড়িয়েছে। তবে গত দুই বছরে এই তারকা ইনেস ডি র্যামনের সঙ্গে সম্পর্কে আছেন। ইনেস ডি র্যামন একজন গয়না ডিজাইনার।
তাঁদের এ সম্পর্কের ব্যাপারে ব্র্যাড পিট বলেন, ইনেসের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক স্বাভাবিকভাবে গড়ে উঠেছে। এতে কোনো চাপ নেই। ইনেসের উপস্থিতি তাঁকে সব সময় সমর্থন জুগিয়েছে। তাঁর জীবনের শান্তি ফিরিয়ে এনেছে। ব্র্যাড ও ইনেস সচেতনভাবে মিডিয়ার চোখ এড়িয়ে অনেকটা নীরবে এ সম্পর্ক বজায় রেখে চলেছেন। তাঁদের ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের মতে, এই গোপনীয়তা বজায় রাখাই তাঁদের সম্পর্ককে টিকিয়ে রাখার অন্যতম কারণ।
চলতি বছর ব্র্যাডকে দেখা যাবে জোসেফ কোসিনস্কির নতুন সিনেমা ‘এফ১’-এ। স্পোর্টস ড্রামা সিনেমাটি নির্মিত হয়েছে ফরমুলা ওয়াল চ্যাম্পিয়নশিপ নিয়ে। আশির দশকের প্রেক্ষাপটে নির্মিত সিনেমাটি অভিনেতাকে দেখা যাবে ফরমুল ওয়ানের ড্রাইভার হিসেবে। আগামী ২৫ জুন ছবিটি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে। এ ছাড়া ‘হার্ট অব দ্য বিস্ট’ নামের আরেকটি নতুন সিনেমায় যুক্ত হয়েছেন তিনি। ২০২৬ সালে মুক্তি পাবে অ্যাকশন অ্যাডভেঞ্জার সিনেমাটি।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: